একগামিতা
একগামীতা হলো এক ধরনের সম্পর্ক যেখানে কোনো একক ব্যক্তির একটি মাত্র সঙ্গী থাকে সারা জীবন জুড়ে— মতান্তরে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি মাত্র সঙ্গী থাকে (ধারাবাহিক একগামীতা)। কিছু প্রাণীর সামাজিক আচরণ প্রকাশ করার ক্ষেত্রেও এই শব্দ ব্যবহৃত হয় যেমনঃ কোনো প্রাণীর জীবনকালে একটি মাত্র যৌনসঙ্গী থাকলে সেটাকেও একগামীতা বলে।
টীকাঃ
সম্পাদনাএকগামিতা শব্দ দ্বারা বিভিন্ন সম্পর্কের ধরন বুঝানো যেতে পারে— প্রসঙ্গের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, এই শব্দ চারভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে—
→ বৈবাহিক একগামিতা অর্থাৎ দুইজন সঙ্গীর বিবাহ
→ সামাজিক একগামিতা অর্থাৎ দুইজন সঙ্গী একসঙ্গে বসবাস করবে, যৌনক্রিয়া করবে এবং জীবিকা নির্বাহ করতে একে অপরকে সাহায্য করবে
→ যৌন একগামিতা অর্থাৎ নির্দিষ্ট যৌনসঙ্গীর বাইরে কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন না করা।[১]
→ জিনগত একগামিতা— এটি যৌন একগামিতার মতই। নির্দিষ্ট যৌনসঙ্গীর বাইরে সন্তান উৎপাদন না করা।
বৈবাহিক একগামিতা আবার দুইভাগে ভাগ করা যেতে পারে
→ ক্লাসিক্যাল একগামিতা, দুইজন ভার্জিনের মধ্যে একধরনের বৈবাহিক সম্পর্ক যেখানে তারা সারা জীবন অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে না এবং সঙ্গীর মৃত্যর পর অনূঢ়া হয়ে যাবে।[২]
→ ধারাবাহিক একগামিতা, নির্দিষ্ট সময়ে দুইজন মানুষের মধ্যে একচেটিয়া বৈবাহিক সম্পর্ক, অপরপক্ষে যেখানে দ্বিগামিতা বা বহুগামিতায় একজনের দুই বা ততোধিক সঙ্গী থাকে।[৩]
মানব সমাজে ব্যাপকতা
সম্পাদনাসামাজিক একগামিতাঃ
সম্পাদনাজর্জ পি মারডক এর “ইথনোগ্রাফিক এটলাস” অনুসারে, পৃথিবীর ১২৩১ টি সমাজের মধ্যে ১৮৬ টি সম্পূর্ণ একগামি; ৪৫৩ টি একগামি কিন্তু বহুবিবাহের প্রচলন রয়েছে; ৫৮৮ টি বহুগামি কিন্তু একগামিতার প্রচলনও রয়েছে।[৪] এই গবেষণায় পরিক্ষিত প্রত্যেকটি সমাজের আপেক্ষিক জনসংখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয় নায় তাই সে হিসেবে যে কোনো সহনশীল সমাজে বহুবিবাহের প্রচলন কম হওয়ার কথা।[৫] এইসকল সমাজের বহুগামি সদস্যরা একক সময়ে একগামি বিবাহ করে এবং পরে তালাকের মাধ্যমে অন্য বিবাহ করে— যেটাকে ধারাবাহিক একগামিতা হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
যৌন একগামিতাঃ
সম্পাদনাবিবাহিতদের মধ্যে শতকরা যত পরিমাণ বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে না— সেই হিসাব দ্বারাই সমাজে যৌন একগামিতা পরিমাপ করা যায়। “স্ট্যান্ডার্ড ক্রস কালচারাল স্যাম্পল” নামক গবেষণা পুরুষ ও নারীদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পরিমাণ বর্ণনা করে কমপক্ষে ৫০টি দেশের। [৬] প্রতিবেদন অনুসারে পুরুষদের মধ্যে ৬টি স্থানে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক “ইউনিভার্সাল”, ২৯টি স্থানে “মডারেট”, ৯টি স্থানে “অকেশনাল”, ১৫টি স্থানে “আনকমন”। নারীদের মধ্যে ৬টি স্থানে “ইউনিভার্সাল”, ২৩টি স্থানে “মডারেট”, ৯টি স্থানে “অকেশনাল”, এবং ১৫টি স্থানে “আনকমন”। অর্থাৎ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পরিমাণ লিঙ্গ ও স্থানভেদে ভিন্ন।
পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে অন্যান্য দেশের গবেষণা অনুসারেও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পরিমাণ সংস্কৃতি ও লিঙ্গভেদে ভিন্ন। থাইল্যান্ড, তানজানিয়া ও আইভরি কোস্টের উপর চালানো এক সমীক্ষা অনুসারে ১৬-৩৪% পুরুষ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায়। নারীরা তুলনামূলক কম বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায় সমীক্ষা অনুসারে।[৭] নাইজেরিয়ার সমীক্ষা অনুসারে ৪৭-৫৩% পুরুষ ও ১৮-৩৬% নারী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায়।[৮]
স্যান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার ৫৬৬ সমকামী দম্পতির উপর চালিত এক সমীক্ষা অনুসারে, শতকরা ৪৫% কোনো ধরনের বহুগামি সম্পর্কে জড়ায় নায়।[৯]
জিনগত একগামিতাঃ
সম্পাদনাজীবনসঙ্গী বহির্ভূত পিতৃত্বের হার দ্বারা জিনগত একগামিতা পরিমাপ করা হয়। জীবনসঙ্গী বহির্ভূত পিতৃত্ব বলতে বুঝায় যখন স্ত্রী অন্য কোনো পুরুষের সন্তান বহন করে। জীবনসঙ্গী বহির্ভূত পিতৃত্ব নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা খুবই কম হয়েছে। ১১টি গবেষণার উপর করা এক রিভিউ অনুসারে জীবনসঙ্গী বহির্ভূত পিতৃত্বের হার ০.০৩% থেকে ১১.৮%— ইউএস, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইউকে, মেক্সিকো এবং অন্যান্য এলাকায়।[১০] অন্য রিভিউ অনুসারে জীবনসঙ্গী বহির্ভূত পিতৃত্বের পরিমাণ ০.৮% থেকে ৩০%।[১১] গোপন পিতৃত্ব— বাচ্চার মা-বাবা যখন বাচ্চার জৈবিক মা-বাবা না— নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা হয়েছে। মেডিক্যাল জিনগত পরীক্ষা,[১১] জিনগত নৃতাত্ত্বিক পরীক্ষা[১২] এবং অভিবাসন পরীক্ষার[১৩] সময় গোপন পিতৃত্বের ব্যাপারটা ধরা পরে। এইরকমই এক গবেষণা অনুসারে, গোপন পিতৃত্বের হার আফ্রিকান জনসংখ্যায় ১০%, নেটিভ আমেরিকান ও পলিনেশিয়ানদের মধ্যে ৫%, মধ্যপ্রাচ্যের জনসংখ্যায় ২%, এবং ইউরোপিয়ানদের মধ্যে ১-২%।[১১]
জৈবিক কারণঃ
সম্পাদনাযে কোনো প্রজাতির ক্ষেত্রে তিনটি মূল বিষয় একগামি প্রজনন ব্যবস্থার প্রচলন করেঃ পিতামাতার লালন, সম্পদের সহজলভ্যতা, এবং যৌনসঙ্গী বাছাই;[১] তবে মানুষের ক্ষেত্রে প্রধানত দুটি বিষয় কাজ করে: পিতামাতার লালন এবং চরম বাস্তুতান্ত্রিক চাপ।[১৪] পিতামাতার লালনপালন বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ মস্তিষ্কের আকার বেশি বড় হওয়ায় বেশি পুষ্টির প্রয়োজন পরে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর্যায়কালও দীর্ঘ। তাই যত্নের আধিক্য দ্বারা একগামি ব্যবস্থার বিবর্তন ব্যাখা করা যায়।[১৫] তবে একগামিতা ও পিতামাতার লালন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হলেও একগামিতা শুধুমাত্র এই কারণে বিবর্তিত হয় নি। কারণ মানুষ অধিক যত্নের চাহিদা অন্যান্য উপায় যেমনঃ সন্তান লালনপালনে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাহায্যের মাধ্যমে পূরণ করতে পারে। বাস্তুতান্ত্রিক চাপের সাথে একগামি ব্যবস্থার বিবর্তনের সম্পর্ক বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ মানব বুদ্ধিমত্তা ও বস্তুবাদী সংস্কৃতি ভিন্ন ও প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজিত হয়ে খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে; একগামি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা কম।![১৪] কিছু বিজ্ঞানীর মতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দে কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী সুবিধা করার জন্য একগামি প্রজনন ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করে এবং বিবর্তিত হতে থাকে।[১৬]
একগামি ব্যবস্থার উৎপত্তির সময় সম্পর্কে জীবাশ্মবিদ্যা ও জেনেটিকবিদ্যা ভিন্ন ভিন্ন ধারণা দেয়। জীবাশ্মবিদ্যা অনুসারে এই ব্যবস্থা মানব ইতিহাসের একদম শুরুতেই ছিলো[১৭] কিন্তু জেনেটিক স্টাডি অনুসারে এই ব্যবস্থার উৎপত্তি মাত্র ১০-২০ হাজার বছর আগে।[১৮]
সাংস্কৃতিক কারণ
সম্পাদনামানুষের যৌন ও জিনগত একগামিতা পরিহার করার সক্ষমতা থাকার পরও, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ক্রিয়ার পরিণতি হিসেবে সমাজে একগামিতা বহুল প্রচলিত।[১৪] যেমনঃ নৃবিজ্ঞানী জ্যাক গুডির স্টাডি মতে, একগামিতা বিস্তৃত ইউরেশিয়ান সভ্যতার (আয়ারল্যান্ড থেকে জাপান) সংস্কৃতির অংশ— যেটার সদস্যরা সামাজিক একগামিতা ও যৌন একগামিতা চর্চা করে।[১৯] বিজ্ঞানি গুডি গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে একগামিতা ও সংশ্লিষ্ট সভ্যতায় হালচাষের বিকাশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেন।[১৯] হালচাষ ব্যবস্থায় কৃষিকাজ প্রধানত পুরুষদের জন্য এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির সাথে যুক্ত; ফলে বিবাহ একগামি হয় যাতে সম্পত্তি ছোট পরিবারের আওতায় থাকে। গোষ্ঠীর কাছে সম্পত্তি ধরে রাখায় তাই অন্তর্বিবাহ উত্তম পন্থা।[১৯] বৈশ্বিক জেনেটিক বৈচিত্র্যের উপর করা এক আণবিক জেনেটিক স্টাডি অনুসারে,
৫০০০-১০,০০০ হাজার বছর পূর্বে প্রাক কৃষি বিপ্লব যুগে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকান সভ্যতাগুলোতে যৌন বহুগামিতা মানুষের প্রজনন ব্যবস্থার সাধারণ অংশ ছিলো।[২০] আরেক গবেষণা অনুসারে সমাজের আকার বৃদ্ধি, মানুষের নৈতিকতা নির্ধারণের জন্য সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস এবং একগামিতার মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে।[২১] এছাড়াও হালচাষের অনুপস্থিতি দ্বারা যৌন বহুগামিতা নির্ধারণ করা গিয়েছে অনেক গবেষণা দ্বারা।[২২] বিজ্ঞানী বেটজিগ এর মতে, কিছু কিছু সভ্যতায় একগামিতা নিয়ম ও আইনের মাধ্যমে জারী করা হয়েছিলো অভিজাতদের সম্পদ বা ক্ষমতা রক্ষা করার জন্য। যেমন: অগাস্টাস সিজার অভিজাতদেরকে বিবাহ ও বংশবৃদ্ধি করায় উৎসাহ প্রদান করেছিলেন যাতে তাদের সম্পদ সর্বোচ্চ সংখ্যক উত্তরাধিকার পায়। কিন্তু তারা তাদের 'বৈধ' সন্তান সীমিত রেখে বেশি করে অবৈধ সন্তান জন্ম দিতো যাতে তাদের উত্তরাধিকার বজায় থাকে।[২৩] একইভাবে খ্রিষ্টীয় চার্চগুলো একগামিতায় উৎসাহ প্রদান করেছিলো কারণ সেখানে মৃত ব্যক্তির সম্পদ সবচেয়ে কাছের বৈধ পুরুষ আত্মীয় অর্জন করতো। ফলে কোনো পরিবারের সবচেয়ে বড় ছেলের কোনো উত্তরাধিকার সন্তান থাকতো না এবং সম্পদ অর্জন করতো অনূঢ়া ছোট ভাই।[২৪] উপর্যুক্ত দুই উদাহরণে নীতি নির্ধারক অভিজাতরা আইন ও রীতি ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জেনেটিক বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও খ্রিষ্টীয় চার্চগুলোর অন্যান্য আইনও সামাজিক একগামিতার বিবর্তনে সহায়তা করেছে। কিছু তাত্ত্বিকের মতে, প্রজননের সফলতার সাংস্কৃতিক প্রভাবকগুলো দিয়ে একগামিতার বিবর্তন ব্যাখা করা যায়। সমাজে অর্থনৈতিক রূপান্তরের সময়ে, কম সন্তানের পিছনে বেশি সম্পদ ও সময় ব্যয় করলে প্রজননের হার বেড়ে যেতো কারণ শুরুতেই যথেষ্ট সম্পদ পেলে সন্তানদের বেশি সফল হওয়ার সুযোগ বেশি। [১৫] শিল্পবিপ্লবের সময়ে ব্রিটেন ও সুইডেনে এবং বর্তমান ইথিওপিয়ায় এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।[২৫]
প্রাচীন সমাজ
সম্পাদনাপ্রাচীন মেসোপোটেমিয়া ও অ্যাসিরিয়া:
সম্পাদনাব্যবিলোনিয়ান ও অ্যাসিরয়ান উভয় সভ্যতার পরিবারগুলো নীতিতে একগামি ছিলো, কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর মধ্য বহুগামিতা প্রচলিত ছিলো। মেসোপটেমিয়ার পিতৃতান্ত্রিক সমাজে অণুপরিবারগুলোকে 'ঘর' বলা হতো। 'ঘর' তৈরী করার জন্য একজন পুরুষ একটি বিবাহ করতো কিন্তু যদি স্ত্রী সন্তান উৎপাদন অক্ষম হতো তাহলে স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করার অধিকার রাখতো। হাম্মুরাবি রীতি অনুযায়ী, ঘরের পুরুষ বহুগামিতার অধিকার হারাতো যদি স্ত্রী নিজেই তাকে একজন দাসী উপপত্নী হিসেবে প্রদান করতো।[২৬] পুরানো অ্যাসিরিয়ান পুঁথি অনুযায়ী, স্বামীকে দুই বা তিনবছর অপেক্ষা করতে হতো দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করার আগে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর অবস্থান হতো প্রথম স্ত্রীর দাসী হিসেবে।[২৭]
প্রাচীন মিশরঃ
সম্পাদনাযদিও প্রাচীন মিশরে বহুগামিতা রীতি বিরোধী ছিলো না, তারপরও একগামীতাই সেখানে সাধারণ ব্যবস্থা ছিলো।[২৮] কিছু পুরুষ অবশ্য প্রথম নিচু মর্যাদার স্ত্রীকে পরিত্যক্ত করে উঁচু সামাজিক মর্যাদার নারীকে বিয়ে করতো যদিও সেটা একগামিতার পর্যায়ে পড়ে। মিশরীয় নারীরা স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করলে ডিভোর্স দেওয়ার অধিকার রাখতো। “ইনস্ট্রাকশন অব আংখশেশং” অনুযায়ী শুধুমাত্র স্ত্রীর অনুর্বরতার কারণে তাকে পরিত্যক্ত করা জায়েজ নয়।[২৯]
বর্তমান সমাজ
সম্পাদনাপশ্চিম ইউরোপ আদর্শ বৈবাহিক ব্যবস্থা হিসেবে একগামিতা গ্রহণ করেছে। এটাই সাধারণ এবং আইনসিদ্ধ।[১৬] বেশিরভাগ দেশে (যেমন: জাপান, চীন, ভারত, নেপাল) বহুবিবাহ অবৈধ। ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে “নারী বৈষম্য দূরীকরণ কনভেনশন” গৃহীত হয়, যেটার অনুচ্ছেদ ১৬ অনুযায়ী সকল রাষ্ট্র নারী ও পুরুষকে বিবাহে সমানাধিকার দিবে এবং বহুবিাহ অনুচ্ছেদ ১৬ এর সাথে বেমানান।
সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবীদের মতে একগামি বিবাহ সহজাতরূপে নারীদের নিপীড়ন করে এবং সুতরাং সমাজতান্ত্রিক সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। ফ্রেডরিক এঙ্গেলস তার রচিত “দি অরিজিন অব দি ফ্যামিলি, প্রাইভেট প্রপার্টি অ্যান্ড স্টেট” (১৮৮৪) বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে, বাধ্যতামূলক একগামিতা পতিতাবৃত্তি এবং সাধারণ অনৈতিকতার পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে ও মূলত শ্রেণী কাঠামো আরো শক্ত করবে।[৩০] তারপরও সমাজতান্ত্রিক চীন একগামিতা সম্পর্কে পশ্চিমা ধারণা গ্রহণ করেছে এবং একগামিতাকেই একমাত্র বৈধ বিবাহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।[৩১]
আফ্রিকান ইউনিয়ন “প্রটোকল অন দি রাইটস অব উইমেন ইন আফ্রিকা” (মাপুতো প্রটোকল) গ্রহণ করেছে। যদিও প্রটোকলে বহুগামিতা অবৈধ কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই, কিন্তু অনুচ্ছেদ ৬ অনুযায়ী একগামিতাই বিবাহের উত্তম পন্থা এবং পরিবার ও বিবাহে নারীর অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে।[৩২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Monogamy : mating strategies and partnerships in birds, humans, and other mammals। Reichard, Ulrich H., 1964-, Boesch, Christophe.। New York: Cambridge University Press। ২০০৩। আইএসবিএন 0521819733। ওসিএলসি 51258764।
- ↑ Schippers, Mimi (২০১৪-০৬-১৯)। "Book Review: The Polyamorists Next Door: Inside Multiple-Partner Relationships and Families by Elisabeth Sheff"। Gender & Society। 29 (1): 150–152। আইএসএসএন 0891-2432। ডিওআই:10.1177/0891243214540048।
- ↑ "Monogamy"।
- ↑ Murdock, George P. (২০১২-১১-১৮)। [h
ttps://web.archive.org/web/20121118232413/http://eclectic.ss.uci.edu/~drwhite/worldcul/Codebook4EthnoAtlas.p
df "Ethnographic Atlas Codebook"]
|আর্কাইভের-ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)।|আর্কাইভের-ইউআরএল=
এর|আর্কাইভের-তারিখ=
প্রয়োজন (সাহায্য) তারিখে [(http://eclectic.ss.uci.edu/~drwhite/worldcul/Codebook4EthnoAtlas.pdf) মূল]|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। line feed character in|আর্কাইভের-ইউআরএল=
at position 2 (সাহায্য) - ↑ FALEN, DOUGLAS J. (২০০৯-১০-২৩)। "Polygamy: a cross-cultural analysis by Zeitzen, Miriam Koktvedgaard"। Social Anthropology। 17 (4): 510–511। আইএসএসএন 0964-0282। ডিওআই:10.1111/j.1469-8676.2009.00088_20.x।
- ↑ Murdock, George P.; White, Douglas R. (1969-10)। "Standard Cross-Cultural Sample"। Ethnology। 8 (4): 329। আইএসএসএন 0014-1828। ডিওআই:10.2307/3772907। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ O'Connor, M. L. (2001-03)। "Men Who Have Many Sexual Partners before Marriage Are More Likely to Engage in Extramarital Intercourse"। International Family Planning Perspectives। 27 (1): 48। আইএসএসএন 0190-3187। ডিওআই:10.2307/2673807। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Isiugo-Abanihe, Ifeoma M.; Isiugo-Abanihe, Uche C. (২০১৩-১০-১৬)। "Adolescent Sexuality and Reproductive Health in two Oil Producing Communities in Imo and Rivers States, Nigeria"। African Population Studies। 22 (2)। আইএসএসএন 2308-7854। ডিওআই:10.11564/22-2-329।
- ↑ [http://articles.sfgate.com/2010-07-16/entertainment/21985570_
1_hiv-prevention-gay-couples-gay-men) ""Many gay couples negotiate open relationships""]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। line feed character in|ইউআরএল=
at position 62 (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ Simmons, Leigh W.; Firman, Renée C.; Rhodes, Gillian; Peters, Marianne (2004-08)। "Human sperm competition: testis size, sperm production and rates of extrapair copulations"। Animal Behaviour। 68 (2): 297–302। আইএসএসএন 0003-3472। ডিওআই:10.1016/j.anbehav.2003.11.013। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ Bellis, M. A (২০০৫-০৯-০১)। "Measuring paternal discrepancy and its public health consequences"। Journal of Epidemiology & Community Health। 59 (9): 749–754। আইএসএসএন 0143-005X। ডিওআই:10.1136/jech.2005.036517।
- ↑ Sykes, Bryan; Irven, Catherine (2000-04)। "Surnames and the Y Chromosome"। The American Journal of Human Genetics। 66 (4): 1417–1419। আইএসএসএন 0002-9297। ডিওআই:10.1086/302850। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Forster, Peter; Hohoff, Carsten; Dunkelmann, Bettina; Schürenkamp, Marianne; Pfeiffer, Heidi; Neuhuber, Franz; Brinkmann, Bernd (২০১৫-০৩-২২)। "Elevated germline mutation rate in teenage fathers"। Proceedings of the Royal Society B: Biological Sciences। 282 (1803): 20142898। আইএসএসএন 0962-8452। ডিওআই:10.1098/rspb.2014.2898।
- ↑ ক খ গ Low, Bobbi S.। Monogamy। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 161–176। আইএসবিএন 9781139087247।
- ↑ Lovejoy, C. O. (১৯৮১-০১-২৩)। "The Origin of Man"। Science। 211 (4480): 341–350। আইএসএসএন 0036-8075। ডিওআই:10.1126/science.211.4480.341।
- ↑ ক খ Henrich, Joseph; Boyd, Robert; Richerson, Peter J. (২০১২-০৩-০৫)। "The puzzle of monogamous marriage"। Philosophical Transactions of the Royal Society B: Biological Sciences। 367 (1589): 657–669। আইএসএসএন 0962-8436। ডিওআই:10.1098/rstb.2011.0290।
- ↑ Reno, P. L.; Meindl, R. S.; McCollum, M. A.; Lovejoy, C. O. (২০০৩-০৭-২৩)। "Sexual dimorphism in Australopithecus afarensis was similar to that of modern humans"। Proceedings of the National Academy of Sciences। 100 (16): 9404–9409। আইএসএসএন 0027-8424। ডিওআই:10.1073/pnas.1133180100।
- ↑ Gordon, Adam D.; Green, David J.; Richmond, Brian G. (২০০৮)। "Strong postcranial size dimorphism inAustralopithecus afarensis: Results from two new resampling methods for multivariate data sets with missing data"। American Journal of Physical Anthropology। 135 (3): 311–328। আইএসএসএন 0002-9483। ডিওআই:10.1002/ajpa.20745।
- ↑ ক খ গ Hatt, D.G. (1977-10)। "Production and reproduction: a comparative study of the domestic domain by Jack Goody. Cambridge: Cambridge University Press (Cambridge Studies in Social Anthropology No. 17), 1976"। Journal of Comparative Family Studies। 8 (3): 416–417। আইএসএসএন 0047-2328। ডিওআই:10.3138/jcfs.8.3.416। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Dupanloup, Isabelle; Pereira, Lu�sa; Bertorelle, Giorgio; Calafell, Francesc; Prata, Maria Jo�o; Amorim, Antonio; Barbujani, Guido (২০০৩-০৭-০১)। "A Recent Shift from Polygyny to Monogamy in Humans Is Suggested by the Analysis of Worldwide Y-Chromosome Diversity"। Journal of Molecular Evolution। 57 (1): 85–97। আইএসএসএন 0022-2844। ডিওআই:10.1007/s00239-003-2458-x। replacement character in
|প্রথমাংশ5=
at position 9 (সাহায্য); replacement character in|প্রথমাংশ2=
at position 3 (সাহায্য) - ↑ Roes, Frans L. (1995-02)। "The Size of Societies, Stratification, and Belief in High Gods Supportive of Human Morality"। Politics and the Life Sciences। 14 (1): 73–77। আইএসএসএন 0730-9384। ডিওআই:10.1017/s0730938400011795। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Ember, Carol R. (২০১০-১১-০৯)। "What We Know and What We Don't Know About Variation in Social Organization: Melvin Ember's Approach to the Study of Kinship"। Cross-Cultural Research। 45 (1): 16–36। আইএসএসএন 1069-3971। ডিওআই:10.1177/1069397110383947।
- ↑ Betzig, Laura (1992-09)। "Roman monogamy"। Ethology and Sociobiology। 13 (5-6): 351–383। আইএসএসএন 0162-3095। ডিওআই:10.1016/0162-3095(92)90009-s। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Betzig, Laura (1995-06)। "Medieval Monogamy"। Journal of Family History। 20 (2): 181–216। আইএসএসএন 0363-1990। ডিওআই:10.1177/036319909602000204। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Gibson, Mhairi A.; Lawson, David W. (2011-03)। ""Modernization" increases parental investment and sibling resource competition: evidence from a rural development initiative in Ethiopia"। Evolution and Human Behavior। 32 (2): 97–105। আইএসএসএন 1090-5138। ডিওআই:10.1016/j.evolhumbehav.2010.10.002। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Pardee, Dennis (2001-01)। "Ancient Israel: Its Life and Institutions. Roland de Vaux , John McHugh"। Journal of Near Eastern Studies। 60 (1): 73–74। আইএসএসএন 0022-2968। ডিওআই:10.1086/468895। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Machinist, Peter (১৯৯৫-০১-০১)। Illness and Health Care in the Ancient Near East। BRILL। আইএসবিএন 9789004387607।
- ↑ Lichtheim, Miriam (১৯৭১)। "Have the Principles of Ancient Egyptian Metrics Been Discovered?"। Journal of the American Research Center in Egypt। 9: 103। আইএসএসএন 0065-9991। ডিওআই:10.2307/40001057।
- ↑ Mouton, Alice (২০১২-১০-২৬)। "Dreams, Pharaonic Egypt and ancient Near East"। The Encyclopedia of Ancient History। Hoboken, NJ, USA: John Wiley & Sons, Inc.। আইএসবিএন 9781444338386।
- ↑ Engels, Friedrich, 1820-1895. (২০১০)। The origin of the family, private property and the state। General Books। আইএসবিএন 9781153073288। ওসিএলসি 635455394।
- ↑ Cheng, Chaoze (১৯৯১-০৬-১৩)। "A speculative analysis of socio-economic influences on the fertility transition in China"। Asia-Pacific Population Journal। 6 (3): 3–24। আইএসএসএন 1564-4278। ডিওআই:10.18356/81d8d5e7-en।
- ↑ Hodgson, Dorothy Louise (২০০২)। "Women's Rights as Human Rights: Women in Law and Development in Africa (WiLDAF)"। Africa Today। 49 (2): 3–26। আইএসএসএন 1527-1978। ডিওআই:10.1353/at.2003.0010।