এইচএমএস পোমোন (১৮৯৭)
এইচএমএস পোমোন একটি পেরোলাস শ্রেণীর রণতরী, যেটি ১৮৯০ এর দশকের শেষের দিকে রাজকীয় নৌবাহিনীর জন্য নির্মাণ করা হয়। জাহাজটির বয়লার অত্যন্ত ঝামেলাপূর্ণ হওয়ায় একটি মাত্র বিদেশী কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের পরে ১৯০৪ সালে জাহাজটিকে বাতিল করে দেয়া হয়। ১৯১০ সালে জাহাজটিকে হাল্কে রূপান্তরিত করা হয় এবং ১৯২২ সালে বাতিল হিসেবে বিক্রির পূর্ব পর্যন্ত এটি একটি নিশ্চল প্রশিক্ষণ জাহাজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
সমগোত্রীয় জাহাজ এইচএমএস প্যান্ডোরা
| |
ইতিহাস | |
---|---|
যুক্তরাজ্য | |
নাম: | এইচএমএস পোমোন |
নামকরণ: | পোমোনা |
নির্মাতা: | শিরনেস ডকইয়ার্ড, কেন্ট |
নির্মাণের সময়: | ২১ ডিসেম্বর ১৮৯৬ |
অভিষেক: | ২৫ নভেম্বর ১৮৯৭ |
সম্পন্ন: | মে ১৮৯৯ |
ডিকমিশন: | অক্টোবর ১৯০৪ |
Reclassified: | প্রশিক্ষণ জাহাজ হাল্ক হিসেবে, ৫ জানুয়ারি ১৯১০ |
নিয়তি: | পরিত্যাক্ত হিসেবে বিক্রয় করা হয়, ২৫ অক্টোবর ১৯২২ |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | পোমোন-শ্রেণী ক্রুজার |
ওজন: | ২,১৩৫ লং টন (২,১৬৯ টন) |
দৈর্ঘ্য: | |
প্রস্থ: | ৩৬ ফু ৬ ইঞ্চি (১১.১ মি) |
গভীরতা: | ১৬ ফু (৪.৯ মি) |
ইনস্টল ক্ষমতা: | ৭,০০০ ihp (৫,২০০ কিওয়াট) |
প্রচালনশক্তি: |
|
গতিবেগ: | ২০ নট (৩৭ কিমি/ঘ; ২৩ মা/ঘ) |
সীমা: | ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (১৩,০০০ কিমি; ৮,১০০ মা) |
লোকবল: | 224 |
রণসজ্জা: |
|
যুদ্ধোপকরণ: |
|
নকশা এবং বর্ণনা
সম্পাদনাএই তৃতীয় শ্রেণীর রণতরীর নকশা করেন স্যার হেনরি হোয়াইট। প্রধান বহরে সহযোগিতার বদলে মূলত ঔপনিবেশিক এলাকায় পরিষেবা দেবার জন্য জাহাজটি নকশা করা হয়। এই জাহাজটি মূলত বিভিন্ন ধরনের ওয়াটার -টিউব বয়লারের টেস্টবেড হিসেবে সেবা প্রদান করে এবং পোমোনে এগুলোর ব্যবহার ছিলো খুবই অসন্তোষজনক। তাই পরিষেবায় যুক্ত হবার মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে জাহাজটিকে বাতিল করা হয়।[১]
এইচএমএস পোমোনের ওজন ছিলো প্রায় ২,১৩৫ লং টন (২,১৬৯ টন), এটির দৈর্ঘ্য ছিলো প্রায় ৩১৩ ফুট ৬ ইঞ্চি (৯৫.৬ মি), প্রস্থ ৩৬ ফুট ৬ ইঞ্চি (১১.১ মি) এবং ড্রাফট ছিলো ১৬ ফুট (৪.৯ মি)। এটি দুটি উল্টানো ৩ সিলিন্ডারের বাষ্পীয় ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত হতো। ১৬ টি কয়লাচালিত ব্লেচিন্ডেন ওয়াটার টিউব বয়লার থেকে বাষ্প সরবরাহ করা হতো। ইঞ্জিনগুলো সর্বোচ্চ ৭০০০ হর্স পাওয়ার (৫২০০ কিলোওয়াট) শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এটির সমুদ্র পরীক্ষার সময় এটিকে ৭৩৪০ হর্স পাওয়ারে (৫,৪৭০ কিলোওয়াট) উন্নীত করা হয় এবং এর ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতি দাঁড়ায় ২০.৮ নট (৩৮.৫ কিমি/ঘ; ২৩.৯ মা/ঘ)। মোট ২২৪ জন অফিসার এবং সৈনিক জাহাজটি পরিচালনা করতেন।[১]
পোমোন আটটি একক কিউএফ ৪ ইঞ্চি (১০২ মিমি) কামান, আটটি কিউএফ ৩ পাউন্ডার কামান, তিনটি মেশিন গান, দুটি ১৮ ইঞ্চি (৪৫৭ মিমি) টর্পেডো টিউব প্রভৃতি অস্ত্রে সজ্জিত ছিলো। তার রক্ষাকারী পাটাতনের পুরুত্ব ছিলো ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি (৩৮ থেকে ৫১ মিমি) এবং জাহাজটি ৩ ইঞ্চি (৭৬ মিমি) ঘনত্ব বিশিষ্ট দেয়ালের একটি কোনিং টাওয়ার ছিলো। ৪ ইঞ্চি কামান গুলো ঢাল দ্বারা সুরক্ষিত ছিলো, যেগুলোর পুরুত্ব ছিলো ০.২৫ ইঞ্চি (৬.৪ মিমি)।[২]
সেবা
সম্পাদনাএইচ এমএস পোমোনের নির্মাণ ১৮৯৬ সালের ২১ ডিসেম্বর তারিখে শিরনেস ডকইয়ার্ডে শুরু হয়, ১৮৯৭ সালের ২৫ নভেম্বর একে পানিতে ভাসানো হয় এবং ১৮৯৯ সালের মে মাসে জাহাজটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়। জাহাজটিকে ইস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড্রনের সাথে মাত্র একবারের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু এটি বয়লার নিয়ে ক্রমাগত সমস্যায় পরতে থাকে।[৩] ১৯০২ সালের জানুয়ারিতে জাহাজটিকে পারস্য উপসাগরীয় এলাকায় মূলত কুয়েতে ব্রিটিশ স্বার্থ রক্ষার্থে মোতায়েন করা হয়।[৪] কমান্ডার হ্যারি জোন্সকে ১৯০২ সালের মার্চের শেষের দিকে জাহাজটির কমান্ডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়।[৫] ১৯০৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে পোমোন এবং আরো তিনটি রণতরী মিলিত ভাবে লর্ড কার্জনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল।[৬] এটির ব্লেচিন্ডেন বয়লার ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় ১৯০৪ সালের অক্টোবরে এটিকে কার্যক্ষম জাহাজের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। মূলত প্রথম সি লর্ড হবার আশায় এডমিরাল লর্ড ফিশার অকার্যকরী জাহাজগুলোকে বাদ দেবার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর জাহাজটির কি হবে সে সিদ্ধান্ত বেশ কিছু দিন ঝুলে থাকে। পরবর্তীতে পোমোনকে নিরস্ত্রীকরণ করা হয় এবং ১৯১০ সালের ৫ জানুয়ারি এটিকে হাল্ক জাহাজে রূপান্তরিত করা হয়। এটি মূলত রয়েল নেভাল কলেজ,ডারমাউথের প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হতো। পরবর্তীতে ১৯২২ সালের ২৫ অক্টোবর জাহাজটিকে ডোভারের জে, এইচ, লি এর নিকট ভাঙরি হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়।[৩]
টীকা
সম্পাদনা- ↑ ক খ British Cruiser Pomone and Sisterships, pp. 321–22
- ↑ Gardiner, p. 83
- ↑ ক খ British Cruiser Pomone and Sisterships, p. 321
- ↑ টেমপ্লেট:সংবাদ উদ্ধৃতিpaper The Times
- ↑ টেমপ্লেট:সংবাদ উদ্ধৃতিpaper The Times
- ↑ Fraser, p. 110
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- "British Cruiser Pomone and Sisterships"। Warship International। Toledo, OH: Naval Records Club। V (4): 321–22। ১৯৬৮।
- Fraser, Lovat (১৯১১)। India under Curzon & After। London: W. Heinemann।
- Gardiner, Robert, সম্পাদক (১৯৭৯)। Conway's All the World's Fighting Ships 1860–1905। Greenwich: Conway Maritime Press। আইএসবিএন 0-8317-0302-4।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা