উর্মিয়া হ্রদ
ঊর্মিয়া হ্রদ (ইংরেজি: Lake Urmia; আজারবাইজানি ভাষায়: ارومیه گولو , ارومیه گولی; ফার্সি ভাষায়: دریاچه ارومیه) উত্তর-পশ্চিম ইরানের একটি অগভীর লবণ জল হ্রদ। এটি কাস্পিয়ান সাগরের পশ্চিমে অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ১৪০ কিলোমিটার, গড় বিস্তার ৪৮ কিলোমিটার এবং এটি পর্বতবেষ্টিত একটি সমতলভূমিতে সমুদ্র সমতল থেকে ১,২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। হ্রদটির চারপাশ অনেকগুলি পার্বত্য নদী এসে পড়েছে। কিন্তু হ্রদটি থেকে কোন জলধারা নির্গত হয়নি। এর ফলে হ্রদটি অত্যন্ত লবণাক্ত এবং এতে কিছু শামুক-ঝিনুক জাতীয় প্রাণী ছাড়া তেমন কোন জলজ জীবের বসতি নেই। হ্রদটি বহু বছর ধরে শুকিয়ে ছোট হয়ে আসছে এবং কাদাময় ভূমিতে পরিণত হচ্ছে।
উর্মিয়া হ্রদ | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | |
ধরন | salt (hypersaline) lake |
স্থানীয় নাম | দরিয়াচি য়ে উরুমিয়ে {{স্থানীয় নামের পরীক্ষক}} ত্রুটি: প্যারামিটারের মান ত্রুটিপূর্ণ (সাহায্য) |
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহ | বাষ্পায়ন |
অববাহিকার দেশসমূহ | পূর্ব আজারবাইজন প্রদেশ ও পশ্চিম অজারবাইজন প্রদেশ ইরান |
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য | ১৪০ কিমি (৮৭ মাইল) |
সর্বাধিক প্রস্থ | ৫৫ কিমি (৩৪ মাইল) |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ৫,২০০ বর্গ কিমি (২,০০০ বর্গমাইল) |
সর্বাধিক গভীরতা | ১৬ মি (৫২ ফুট) |
দ্বীপপুঞ্জ | ১০২ (তালিকা দেখুন) |
নামকরণ
সম্পাদনাইন্দো-ইরানীয় ভাষাপরিবার-এ উর্মিয়া শব্দের অর্থ ভারসাম্যহীন, তরঙ্গায়িত। মনে করা হয় এর থেকেই নামের উৎপত্তি। স্থানীয় ইরানি ভাষায় এর নাম দরিয়াচি য়ে উরুমিয়ে ।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
সম্পাদনা১৬০৪ সালে এখানে উর্মিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ইরানের সাফাভিদ সাম্রাজ্যের প্রথম আব্বাস-এর সাথে উসমানীয় সাম্রাজ্য-এর প্রথম আহমেদ-এর । যুদ্ধে সাফাভিদ সাম্রাজ্য জয় পায়।
বাস্তুতন্ত্র
সম্পাদনা১৯৬৭ সাল থেকে এই হ্রদটি ইরান সরকারের বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণের আওতাধীনে আছে। যেহেতু হ্রদের জলের কোনো নির্গমনপথ নেই, তাই এর জল প্রচণ্ড লবণাক্ত। বিখ্যাত লবণাক্ত হ্রদ মৃত সাগরের (ডেড সি) তুলনায় যা প্রায় এক-চতুর্থাংশ। শীতের শেষে এই লবণাক্ততার পরিমাণ ৮ শতাংশে নেমে আসলেও হেমন্তের শুরুতে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। হ্রদের লবণাক্ততার উৎস হিসেবে বিভিন্ন সোডিয়াম এবং সালফার লবণের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
লবণাক্ততার ফলে এই হ্রদের জীববৈচিত্র্য অন্যান্য হ্রদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। লবণাক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকার উপযোগী বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং অণুজীব ব্যতীত অন্য কোনো জীবই এখানে টিকে থাকতে পারে না। শেলড্রে, ফ্ল্যামিঙ্গো এবং পেলিকানসহ বেশ কিছু প্রজাতির পাখি শীতকালে এই অঞ্চলে অতিথি পাখি হিসেবে পরিভ্রমণ করে।[১]
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাএই হ্রদে বেশ কিছু জাতীয় পার্ক রয়েছে যা ইরানের পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃক সংরক্ষিত।