উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা
উম্মে কুলসুম বিনতে উক্ববা (আরবি: أم كلثوم بنت عقبة বাাংলায়ঃ উম্মে কুলসুম) (c.৬১০-c.৬৫৪) ইসলামের নবী মুহাম্মদ -এর সহচর ছিল। কুরআনের একটি আয়াত, ৬০:১০, তার পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় নাজিল হয়েছিল। [১]
হিজরত
সম্পাদনাতার জন্ম মক্কায়, সে উকবা ইবনে আবু মুয়ায়েত এবং আরওয়া বিনতে কুুুরায়েজের কন্যা;[১] তিনি খলিফা উসমানের তার মায়ের দিক থেকে সৎ-ভাই ছিলেন । তাদের মা আরওয়া ছিলেন মুহাম্মদের ফুফাতো বোন। [১] :৩৮
উম্মে কুলসুমের পিতা উক্ববা প্রকাশ্যে মুহাম্মাদের বিরোধী ছিলেন। উম্মে কুলসুম ৬২২ সালের পূর্বে তিনি মুসলিম হন। তিনি হিজরতের পরে মক্কা রয়ে যান। [১] ৬২৪ সালে বদর যুদ্ধে উক্ববা নিহত হন। [২]
৬২৮ সালে হুদায়বিয়া চুক্তির পর, উম্মে কুলসুম খুযাআ গোত্রের একজন ব্যক্তির সাথে মদিনার উদ্দেশ্যে মক্কা ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। তার ভাইয়েরা, ওয়ালিদ ও আম্মারা তাকে ধাওয়া করে। সে তাদের একদিন আগে মদিনা পৌঁছেছিল। তার ভাইয়েরা মুহাম্মাদকে হুদায়বিয়া চুক্তির দ্বারা তাদের ফিরিয়ে নিতে চাইছিলো। চুক্তিতে ছিলো, যে মক্কা থেকে মদিনা থেকে পালিয়ে আসা মুসলমানদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। উম্মে কুলসুম দাবি করেছিলেন যে, "নারীরা দুর্বল" এবং যদি তাকে মুশরিকদের মধ্যে থাকতে হয় তবে তার বিশ্বাসে দৃঢ় থাকার শক্তি থাকতে পারবে না। মুহাম্মদ তখন কুরআনের নতুন বাণী পাঠ করেন:[১]
O you who believe! When believing women come to you as emigrants, examine them; Allah knows best as to their faith, then if you ascertain that they are true believers, send them not back to the disbelievers. They are not lawful for the disbelievers nor are the disbelievers lawful for them. But give them (disbelievers) that which they have spent (on their dower).
— Qur'an 60:10.
এই বাণী শেষে মুহাম্মদ বলেন, "পালিয়ে যাওয়া মানুষ" শব্দটি পুরুষবর্ণ ছিল, তাই এটি মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। তবে, পালিয়ে যাওয়া নারীদের অবশ্যই তাদের বিশ্বাসের সত্যতা যাচাই করা উচিত। [৩] উম্মে কুলসুমকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, তিনি কি আল্লাহ, তার রসূল এবং ইসলামের প্রতি ভালবাসার জন্য মদিনাতে এসেছেন নাকি তিনি স্বামী খুঁজতে বা পালাতে চেয়েছিলেন অথবা অর্থ উপার্জন করার আশা করে এসেছেন। পরীক্ষার পর মুহাম্মাদ বলেছিলেন, "তোমরা যা জানো তাতে নারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা চুক্তি ভেঙে দিয়েছেন, তাই চলে যাও।" [১]
এরপর অন্য মহিলারা উম্মে কুল্থুমের উদাহরণ অনুসরণ করেন এবং মদিনার জন্য মক্কা ছেড়ে চলে যান। [১]
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনাউম্মুল কুল্থুমকে বিয়ে করার জন্য চারজন পুরুষ পানিপ্রার্থী হয়েছিলেন এবং তিনি চারজনকেই বিয়ে করেছিলেন। তিনি তার ভাই উথমানকে জিজ্ঞেস করলেন যে, কাকে গ্রহণ করবেন। তিনি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন মুহাম্মদের সঙ্গে আলাপ করতে। মুহাম্মদ তাকে জায়েদ ইবনে হরিথাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিলেন। তিনি জায়েদ ও রুকাইয়াকে জন্ম দেন। X কিন্তু তাদের বিবাহ বিচ্ছেেদ হয়ে যায়। শিশু যায়েদ শৈশবে মারা যায় কিন্তু রুকাইয়া উসমানের সুরক্ষায় প্রতিপালিত হতে থাকেন। [১] :৩৩
এরপর তিনি জুবায়ের ইবনে আল-আওয়ামকে বিয়ে করেছিলেন, যাকে তিনি হিংস্র হওয়ার কারণে অপছন্দ করেছিলেন। সে তালাক চাইলে জুবায়ের তালাক দিতে রাজি হয়না। পরে তালাক দেন।" পরে জুবায়ের অভিযোগ করলেন, "সে আমাকে প্রতারণা করেছে, আল্লাহ তা'আলা তাকে ঠকাতে পারে!" মুহাম্মদ তাকে "আবার প্রস্তাব করার" পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু জুবায়ের জানতেন যে উম্মে কুলসুম কখনো তার কাছে ফিরে আসবেন না। বিচ্ছেদের পরপরই তিনি তাদের মেয়ে জয়নবকে জন্ম দেন। [১]
উম্মে কুলসুমের তৃতীয় স্বামী আব্দুল রহমান ইবনে আওফ । তিনি উক্ত স্বামীর উরসে ছয় সন্তানের জন্ম দেনঃ মুহাম্মদ, ইব্রাহীম, হামিদ (অথবা হুমায়িদ), ইসমাইল, হামিদা ও আমাত আর-রহমান। [১] :৯৭ এই বিয়েটি বিশ বছর টিকেছিলো। ৬৫৩/৪ সালে আব্দুল রহমান মারা যায়। [১]
বিধবা হওয়ার পর, উম্মে কুলসুম আমর ইবনে আল-আসকে বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু তার মাত্র এক মাস পরে কুলসুম মারা যান। [৪]