ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ

আবু ইয়াকুব ইসহাক ইবনে ইবরাহিম ইবনে মুখাল্লাদ আল-হানজালি (আরবী: أبو يعقوب إسحاق بن إبراهيم بن مخْلد الحنظلي), যা সাধারণত ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ নামে পরিচিত (আরবি: إسحاق بن راهويه; ১৬১ হিঃ - ২৩৮ হিঃ ) , খোরাসানের একজন ফকীহ ও ইমাম ছিলেন ।

ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ
উপাধি	আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদিস
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম	১৬১ হিজরি মার্ভ (৭৭৭–৭৭৮ খ্রি:)
মৃত্যু	শাবান ২৩৮ হিজরি নিশাপুর (৮৫২–৮৫৩ খ্রি:)
ধর্ম	Islam
যুগ	ইসলামি স্বর্ণযুগ
অঞ্চল	খোরাসান
প্রধান আগ্রহ	হাদিস, তাফসির, ফিকহ
উল্লেখযোগ্য কাজ	আল-মুসনাদ
ঊর্ধ্বতন পদ
যার দ্বারা প্রভাবিত ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া, আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক, সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ, ইমাম শাফিঈ
যাদের প্রভাবিত করেন ইমাম বুখারী, মুসলিম বিন হাজ্জাজ, ইবনে খুজায়মা, Al-Darimi, আল-নাসাই, দাউদ আল-জাহিরি

তিনি আহমদ ইবনে হাম্বালের সহপাঠী ও বন্ধু ছিলেন, যিনি তার সাথে জ্ঞান সন্ধানে ভ্রমণে যোগ দিয়েছিলেন ।

নাম ও নসব

তার বংশ তথা নসব নামা হল: আবু ইয়াকুব ইসহাক বিন ইবরাহিম বিন মুখলাদ বিন ইবরাহিম বিন আবদুল্লাহ বিন মাতার বিন উবায়দুল্লাহ বিন গালিব বিন আল-ওয়ারিস বিন উবায়দুল্লাহ বিন আতিয়া বিন মুররাহ বিন কা'ব বিন হাম্মাম বিন আসাদ বিন মুররাহ বিন আমর বিন হানযালা বিন মালিক বিন জায়িদ মানাত বিন তামিম বিন মার বিন আদ বিন তাবিখা বিন ইলিয়াস বিন মুদার বিন নিজার বিন মাদ বিন আদনান, আল-হানজালি আত-তামিমি আল-মারজাভি। তার ডাকনাম হল - আবু ইয়াকুব এবং আবু মুহাম্মদ।

পদবি

তাকে “ইবনে রাহওয়াইহ” বলার কারণ সম্পর্কে উল্লেখ আছে যে, তার পিতা মক্কার পথে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই মারওয়ার লোকেরা তার পিতাকে বলেছিল: “রাহওয়াইহ” অর্থাৎ তিনি রাস্তায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আহমদ ইবনে সালামাহ বলেন, আমি ইসহাককে বলতে শুনেছি: যুবরাজ আবদুল্লাহ ইবনে তাহের আমাকে বললেন: আপনাকে কেন বলা হলো: ইবনে রাহওয়াইহ? এটার মানে কি? আপনি কি এটা বলা অপছন্দ করেন? তিনি বললেনঃ হে রাজপুত্র! আমার পিতা মক্কার পথে জন্মগ্রহণ করেন। আর এ কারণে তাকে "রাহওয়াইহ" বলা হত এবং আমার বাবা তা অপছন্দ করতেন বটে। তবে, অমার বেলায় কেউ আমাকে "ইবনে রাহওয়াইহ" ডাকলে আমি তা অপছন্দ করি না।

তাফসির

শুরু থেকেই হাদিসের জ্ঞানের প্রতি তার অনুরাগ ছিল এবং তিনি তা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন; কিন্তু তিনি তাফসির ও ফিকহ ইত্যাদি বিষয়েও ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। খতিবে বাগদাদি লিখেছেন যে, তিনি হাদিস ও ফিকহে পারদর্শী ছিলেন। তিনি যখন কুরআনের তাফসির করতেন তখন তাতে সনদ উল্লেখ করতেন। শব্দ চয়নে সাবলীল ছিল যেন মুখস্থ করা তুলনামূলক সহজ হয়। তাফসিরের ক্ষেত্রে ইবনে রাহওয়াইহ-এর মধ্যে এটি আশ্চর্যজনক ছিল যে, তিনি তাফসিরের চেইনটিও মুখস্থ করে রেখেছিলেন।

প্রভাব

ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ ইমাম বুখারীকে এখন যা সাধারণত সহিহ বুখারী নামে পরিচিত, তা সংকলিত করতে অনুপ্রেরণা জোগাতে সহায়তা করেছিলেন। আল বুখারী বর্ণনা করেছেন যে, "আমরা যখন আমাদের শিক্ষক ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ-এর সাথে ছিলাম তখন তিনি বলেছিলেন: 'যদি কেউ নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহিহ হাদিস (বিশুদ্ধ হাদিস) সন্নিবেশিত করে যদি একটি গ্রন্থ রচনা করতো!" এটি আমার হৃদয়ে গভীর আলোড়িত করেছিল । তাই আমি 'আল-জামি-আস-সহিহ'কে সংকলন করতে শুরু করি।

রচনাবলি

ইবনে রাহওয়াইহ-এর বইগুলি তাফসির, হাদিস এবং ফিকহ-এ অন্তর্ভুক্ত :

• আল-মুসনাদ (المسند)
• আল-জামিউল কাবির (الجامع الكبير)
• আল-জামিউস সাগির (الجامع الصغير)
• আল-মুসান্নাফ (المصنف)
• আল-ইলম (العلم)
• আত-তাফসিরুল কাবির (التفسير الكبير):