ইসরায়েল–মালদ্বীপ সম্পর্ক
মালদ্বীপ-ইসরায়েল সম্পর্ক বলতে মালদ্বীপ ও ইসরায়েল এর মধ্যে গড়ে উঠা বৈদেশিক কুটনৈতিক সম্পর্ককেই বুঝায়। দেশ দ্বয়ের মধ্যে ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিলো। ১৯৭৮ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এই দুই দেশের মাঝে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিলনা। ২০০৮ এ মালদ্বীপের নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অধিবেশনে তার নিজ বক্তৃতায় ইসরায়েল এর সাথে মালদ্বীপের কুটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইসলামিক দেশ হিসাবে আভ্যন্তরীন ভাবে এই মতের যথেষ্ট বিরোধিতা এসেছিল তবে সব ধরনের প্রতিকূলতা পেরিয়ে ২০০৯ এর ২৫শে সেপ্টেম্বর ইসরায়েল এর সাথে মালদ্বীপের কুটনৈতিক সম্পর্ক এর পত্তন ঘটে যা কিনা ইসরায়েলকে মুসলিম বিশ্ব থেকে অবরুদ্ধ রাখার ১৫ বছরের ১ম পরিবর্তন[১](মালদ্বীপের আগে মুসলিম বিশ্বের মিশর ও জর্দান ব্যতীত অপর কোন দেশ ইসরায়েলকে স্বাধীন দেশ হিসাবে তাদের স্বীকৃতি প্রদান করেনি)। ইসরায়েল এর রাষ্ট্রদূত হিসাবে আব্রাহাম ডারোম মালদ্বীপে প্রবেশ করেন এবং এটাই ছিল মালদ্বীপে প্রথম কোন বৈদেশিক রাষ্ট্রদূত এর আগমন ও অবস্থান। পরবর্তীতে দ্বিপাক্ষিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, এবং পর্যটনের উপর সহযোগিতার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ইসরায়েল |
মালদ্বীপ |
---|
ইতিহাস
সম্পাদনাযখন প্রবলভাবে মুসলিম বিশ্বে তথা সারাবিশ্বে ফিলিস্তিনিদের বিষয়কে প্রাধান্য ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছিল, মালদ্বীপকে সামনের সারিতে পাওয়া যায়নি এবং সার্কভুক্ত দেশের মাঝে ইসরায়েল সম্পর্ক বিষয়ের (ইসরায়েল এর স্বাধীন দেশ হিসাবে স্বীকৃতি, তাদের বৈদেশিক নীতি বা মধ্যপ্রাচ্যের সাথে বিরোধ) প্রশ্নে মৌন থেকে গেছে[২]। তবে জাতিসংঘের সার্বজনীনতার অঙ্গীকার বজায় ও সমুন্নত রাখার নিমিত্তে ইসরায়েল পুনর্বাসন প্রস্তাব প্রথম ভাগ থেকেই মালদ্বীপ সমর্থন করেছিল[৩]। ২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আনা হলোকস্ট এর প্রতি শোক-স্মরণিক এ মালদ্বীপ যৌথভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র এর নেতৃত্বে হলোকস্ট প্রতিবাদ আইনের সমর্থনেও যৌথভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে। ওসলো চুক্তির সমর্থনের অংশ হিসাবে মালদ্বীপ ইসরায়েলের প্রতি বেসরকারি খাতের বিধিনিষেধ শিথিল করে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
সম্পাদনা২০১৩ এর নভেম্বরের নির্বাচন পেক্ষাপটের যথেষ্ট পরিবর্তন আনে[৪]। নির্বাচনে মামুন আব্দুল গাইয়ুম এর ভাই ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম ৫১.৩৯% সমর্থন নিয়ে জয়লাভ করলে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক বেশ শিথিল আকার ধারণ করে এবং পরবর্তীতে ইসরায়েল কর্তৃক গাজা ভূখণ্ডে ২০১৪ ইসরায়েলের ফিলিস্তিন আক্রমণ (৫০০ অধিক ফিলিস্তিনি মারা যায়) এর প্রতিবাদে ২২ জুলাই, ইসরায়েলের সকল ধরনের পণ্যের উপর বয়কট ঘোষণা করে এবং গাজার উপর সকল ধরনের বোমা বিস্ফোরন বন্দ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইসরায়েলের সাথে করা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, এবং পর্যটনের উপর সহযোগিতার চুক্তি স্থগিত করে[৫][৬] এবং একই সাথে গাজার মুসলিমদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়[৭]।
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ইসরায়েলের মুসলিম দেশের সাথে কুটনৈতিক বন্ধন" (ইংরেজি ভাষায়)। ennahar online। ২৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "মালদ্বীপের ইসরায়েল প্রশ্নে মৌন ও সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অগ্রসর" (ইংরেজি ভাষায়)। saarc.com। ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "ফিলিস্থিন বিতর্কে মালদ্বীপের অবস্থান" (ইংরেজি ভাষায়)। maldives high commission। ১৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "ইসরায়েল বান্ধব প্রতিযোগী মালদ্বীপের ভোটে পিছিয়ে গেল" (ইংরেজি ভাষায়)। times of israel।
- ↑ "ইসরায়েলের প্রতি বয়কট" (ইংরেজি ভাষায়)। china daily (europe)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "মালদ্বীপের ইসরায়েলি পণ্য বয়কট এবং সকল দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রদ" (ইংরেজি ভাষায়)। minivan news। Archived from the original on ৪ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "মালদ্বীপের গাজার প্রতি সাহায্য হিসাবে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান" (ইংরেজি ভাষায়)। times of israel।