ইরান–শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক
ইরান-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক, ইরান এবং শ্রীলঙ্কা এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৬১ সালে এই দুই দেশের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১]
ইরান |
শ্রীলঙ্কা |
---|
ইরানের রাজধানী তেহরানে, শ্রীলঙ্কার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে, শ্রীলঙ্কার রাজধানী, কলম্বোতে ইরানের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।
ইতিহাস
সম্পাদনাপাকিস্তান এর রাজধানী ইসলামাবাদ এ অবস্থিত শ্রীলঙ্কার দূতাবাসের মাধ্যমে, ১৯৬১ সালে ইরান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সে সময় শ্রীলঙ্কার নাম ছিল সিলন। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের শ্রীলঙ্কা, ইরানের রাজধানী তেহরান-এ তাঁদের দূতাবাস স্থাপন করে। এর আগ পর্যন্ত, পাকিস্তানে, শ্রীলঙ্কার দূতাবাসের মাধ্যমেই এই দুই দেশের সম্পর্ক রক্ষিত ছিল। তবে ১৯৭৫ সালেই ইরান শ্রীলঙ্কায় তাঁদের দূতাবাস চালু করে। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে এই দূতাবাস অবস্থিত।
মাহমুদ আহমাদিনেজাদ, ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে, প্রথম এশিয়া সফর শুরু করেন তিনি এই শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে।[২] শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি, মহিন্দ রাজাপক্ষও, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর, ইরানকে গুরুত্বের সাথে দেখেছেন।[৩]
উন্নয়ন
সম্পাদনাশ্রীলঙ্কার বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন করে, ইয়ান, শ্রীলঙ্কার উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। ২০১০ সালে, ইরান, শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল প্রোভিন্সে একটি, ৯০-১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়ার জন্য সম্মত হয়। [৪] এছাড়াও ইরান, শ্রীলঙ্কার তেল শোধনাগারেও বিনিয়োগ করেছে[৫] এবং ইরানের এই বিনিয়োগ, শ্রীলঙ্কার তেল উৎপাদনের সক্ষমতাকে প্রায় দ্বিগুণ করেছে। [৬] শ্রীলঙ্কার গ্রামে বিদ্যুতায়ন এর ক্ষেত্রেও ইরান শ্রীলঙ্কাকে সহায়তা করেছে।[৩] শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়নের কারণে, বর্তমানে, ইরান, শ্রীলঙ্কার সর্ববৃহৎ সাহায্যদাতা।[৭][৮]
সশস্ত্র বাহিনী
সম্পাদনাশ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের সময় শ্রীলঙ্কা সরকার, ইরানের কাছে, নিম্ন সুদে ঋণ চায়। তাঁদের এই ঋণ চাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সামগ্রী ক্রয়, এবং চালকবিহীন যুদ্ধবিমান ক্রয়। লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম, শ্রীলঙ্কা বিমানবাহিনীর উপর মারাত্মক এক হামলা চালানোর পরপরই, শ্রীলঙ্কা সরকার ইরানের কাছে ঋণ চাওয়ার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। [৯] ইরান, শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিতে সম্মত হয় এবং একইসাথে, যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য, শ্রীলঙ্কার নির্বাচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ইরানে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রস্তাব দেয়।[১০] শ্রীলঙ্কার এই গৃহযুদ্ধের সময়, ইরানের সহায়তার জন্য, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী উইমাল ভীরাওয়ান্সা ইরানকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, "যখন পৃথিবীর অন্য অনেক দেশ শ্রীলঙ্কাকে সহায়তা করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন ইরান শ্রীলঙ্কার পাশে থেকেছে।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Sri Lanka – Iran Bilateral Relations ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে শ্রীলঙ্কা দূতাবাস, ইরান
- ↑ The Group of 15 (G- 15) শ্রীলঙ্কা সরকার - ১৪ মে ২০১০
- ↑ ক খ Sri Lanka, Iran mutual friends - Minister ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে ডেইলি নিউজ - ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০
- ↑ Uma Oya Multipurpose Project ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ মার্চ ২০১২ তারিখে International Rivers
- ↑ Iran boosts Sri Lankan refinery বিবিসি - ২৯ এপ্রিল ২০০৮,
- ↑ Sri Lanka’s post-war scenario ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ আগস্ট ২০১০ তারিখে ডন - ১১ নভেম্বর ২০০৯
- ↑ Sri Lanka’s Shifting Foreign Relations ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ জুলাই ২০১২ তারিখে মন্টেজ - আগস্ট ২০০৮
- ↑ Iran becomes Sri Lanka's top lender টাইমস অব ইন্ডিয়া - ১৪ জুলাই ২০০৮
- ↑ Iran to Fund Sri Lankan Arms Purchases - International Terrorism Monitor---Paper No. 303 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ আগস্ট ২০১২ তারিখে সাউথ এশিয়া এনালাইসিস গ্রুপ - ১৩ নভেম্বর ২০০৭
- ↑ Iran To Train Sri Lankan Intelligence & Army Officers ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ মার্চ ২০১২ তারিখে সাউথ এশিয়া এনালাইসিস গ্রুপ - ২৪ এপ্রিল, ২০০৮
- ↑ ‘UNO, a paper tiger’ - Iranian Minister ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে ডেইলি নিউজ - ২৭ জুন, ২০১০