ইন্দোনেশিয়া–সার্বিয়া সম্পর্ক

ইন্দোনেশিয়া-সার্বিয়া সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং সার্বিয়া এর মাঝে বিদ্যমান কূটনৈতিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। তবে ইন্দোনেশিয়া এবং সার্বিয়া এর সম্পর্ক যুগোস্লাভিয়া যুগ থেকেই বিদ্যমান ছিল। পরবর্তীতে সার্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যুগোস্লাভিয়ার ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝে আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। এরপর যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে সার্বিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, এই সম্পর্ক ইন্দোনেশিয়া সার্বিয়া সম্পর্কে দাঁড়ায়। তবে যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে গঠিত হওয়া অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও ইন্দোনেশিয়ার অত্যন্ত আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া-সার্বিয়া সম্পর্ক
মানচিত্র Indonesia এবং Serbia অবস্থান নির্দেশ করছে

ইন্দোনেশিয়া

সার্বিয়া

১৯৫৪ সালে, ইন্দোনেশিয়া এবং সার্বিয়া এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তবে সে সময় সার্বিয়া ছিল যুগোস্লাভিয়া নামে একটি অখণ্ড সত্ত্বা। তাই বর্তমান, ইন্দোনেশিয়া ও সার্বিয়া সম্পর্কের ভিত্তি এবং অবকাঠামো, সবই যুগোস্লাভিয়া যুগে গঠিত এবং স্বীকৃত।[] ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সার্বিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। অপরদিকে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড এ ইন্দোনেশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবং সার্বিয়া (তৎকালীন যুগোস্লাভিয়া), জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
জোসিপ ব্রোজ টিটো (বামে) এবং সুকর্ণ (মাঝখানে)

১৯৫৪ সালে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর দেশ দুটির মধ্যকার প্রথম ঐতিহাসিক সংযোগ ছিল জোট নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে। ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি, সুকর্ণ এবং যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি, জোসিপ ব্রোজ টিটো ছিলেন জোট নিরেপেক্ষ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম। ১৯৬১ সালে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার পর ১৯৯২-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া এবং সার্বিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক ছিল, দেশ দুটির ইতিহাসের সবচেয়ে নিম্নে। বসনিয়া যুদ্ধে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে সার্বিয়ার জাতিগত নিধন এর অভিযোগ উঠে। এসময়, বিস মুসলিম জনসংখ্যার দিকদিয়ে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার সম্পর্ক খারাপ ছিল।

২০০০ সালের পর আবার দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ২০০৮ সালে, সার্বিয়ার অখণ্ডতাকে সমর্থন করে, ইন্দোনেশিয়া, সার্বিয়ার থেকে কসোভো এর স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদান হতে বিরত থাকে। যদিও কসোভো এর সঙ্গে সার্বিয়ার বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান করার লক্ষ্যে ইন্দোনেশিয়া, সবসময়ই সার্বিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে এসেছে।[]

বাণিজ্য

সম্পাদনা

২০০৪ সালে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৫ মিলিয়ন (১.৫ কোটি) মার্কিন ডলার। যা, ২০০৮ সালে বেড়ে দাঁড়িয়ে হয় ৫০ মিলিয়ন (৫ কোটি) মার্কিন ডলার।[] ২০১২ সালের এই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪০.৯ মিলিয়ন (৪.০৯ কোটি) মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৩৩.৯ মিলিয়ন (৩.৩৯ কোটি) মার্কিন ডলার ছিল, সার্বিয়ায়, ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি আয়। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ায়, সার্বিয়ার রপ্তানি আয় ছিল ৭ মিলিয়ন (৭০ লক্ষ) মার্কিন ডলার। []

সার্বিয়ায়, ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হল; টেক্সটাইল এবং কৃষি পণ্য। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ায়, সার্বিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হল; যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক দ্রব্য এবং স্বাস্থ্যখাতের যন্ত্রপাতি।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Bileteral issues with foreign countries: Indonesia"। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সার্বিয়া। সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১১, ২০১৪ 
  2. ফার্নান রাহাদি (জুন ৮, ২০১৩)। "Presiden Serbia Puji Indonesia" (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। রিপাবলিকা অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ মে ১১, ২০১৪ 
  3. "Profil Negara dan Kerjasama" (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইন্দোনেশিয়া। ১৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১১, ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা