ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (ঐতিহাসিকভাবে সালো প্রজাতন্ত্র নামেও পরিচিত) জার্মানির একটি পুতুল রাজ্য ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে এটি সৃষ্টি হয়েছিল। জার্মানি ১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইতালি দখল করে নেয়। তখনই এর সৃষ্টি। ১৯৪৫ সালের মে মাসে ইতালিতে অবস্থানরত জার্মান সৈন্যদের আত্মসমর্পণ করলে এর পতন ঘটে।
ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র Repubblica Sociale Italiana | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৪৩–১৯৪৫ | |||||||||
নীতিবাক্য: Per l'onore d'Italia "For the honour of Italy" | |||||||||
জাতীয় সঙ্গীত: জিওভিনেজ্জা[১]
| |||||||||
Administrative divisions of the Italian Social Republic | |||||||||
অবস্থা | নাৎসি জার্মানির পুতুল রাজ্য[২][৩] | ||||||||
রাজধানী | সালো (de facto) Rome (de jure) | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | ইতালি | ||||||||
ধর্ম | রোমান ক্যাথলিক | ||||||||
সরকার | ফ্যাসিবাদী একদলীয় সর্বাত্মকবাদী একনায়কতান্ত্রিক | ||||||||
দুচে | |||||||||
• ১৯৪৩–১৯৪৫ | বেনিতো মুসোলিনি | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতালীয় গৃহযুদ্ধ | ||||||||
১২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ | |||||||||
২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ | |||||||||
২৫ এপ্রিল ১৯৪৫ | |||||||||
মুদ্রা | ইতালীয় লিরা | ||||||||
|
এটি ইতালীয় ফ্যাসিবাদী প্রজাতন্ত্রের দ্বিতীয় সংস্করণ। ইল দুচে বা ফ্যাসিবাদী নেতৃত্বের অধিপতি বেনিতো মুসোলিনি এর নেতৃত্ব প্রদান করেন। সেখানে রাজতন্ত্রবিরোধী প্রজাতন্ত্রী ফ্যাসিবাদী দলের কর্তৃত্ব ছিল। প্রজাতন্ত্রটি রোমকে রাজধানী ঘোষণা করলেও এর কার্যক্রম সালো-কে ঘিরে আবর্তিত হতো। এটি গার্দা হ্রদের নিকটে অবস্থিত একটি ছোট শহর। মুসোলিনি ও ফ্যাসিবাদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এখানো পরিচালিত হতো। উত্তর ও কেন্দ্রীয় ইতালিতে এর আধিপত্য ছিল। তবে কর্তৃত্ব প্রদর্শনের জন্য এটি জার্মান সেনাদের উপর অনেকাংশে নির্ভর ছিল।
১৯৪৩ সালের জুলাই-য়ে মিত্রশক্তি উত্তর আফ্রিকা হতে ইতালিকে উৎখাত করে। অতঃপর এটি সিসিলি আক্রমণ করে। মহা ফ্যাসিবাদী কাউন্সিল, রাজা ভিক্তর ইমানুয়েলের সমর্থন নিয়ে মুসোলিনিকে আটক ও উৎখাত করে। মিত্রশক্তির সাথে নতুন সরকার গোপনে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যায়। ৮ সেপ্টেম্বর কাসিবিল সশস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরপরই জার্মানি সম্যক প্রস্তুতি নিয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে। এটি ইতালির অর্ধেক তথা উত্তরের অংশ দখল করে নেয় এবং মুসোলিনিকে মুক্ত করে। তারপর জার্মান অধিকৃত এলাকায় মুসোলিনিকে এনে একটি করদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৪৩ সালের ২৩ এপ্রিল এভাবেই ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (আরএসআই) গড়ে ওঠে। ইতালির একটি বিরাট অংশের উপর কর্তৃত্ব দাবি করলেও খুব কম অংশ জুড়েই এর নিয়ন্ত্রণ ছিল। অক্ষশক্তি এবং তাদের করদ রাজ্য থেকেই শুধু আরএসআই সমর্থন পেয়েছিল। তবে ফিনল্যান্ড ও ভিশি ফ্রান্স একে কোনো প্রকার সমর্থন দেয়নি। আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল ও স্পেনের সাথেও এর কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। ব্যবসায়িক এজেন্টদের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের সাথেও এটি সম্পর্ক বজায় রাখে। তবে ভ্যাটিকান সিটি একে কোনোরকম স্বীকৃতি দেয়নি।
১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল, প্রতিষ্ঠার উনিশ মাস পরে আরএসআই-য়ের পতন ঘটে। দিনটি ইতালিতে মুক্তি দিবস (ফেস্তা দেল্লা লিবারাজিওনে) হিসেবে উদযাপিত হয়। ঐ দিন সংক্ষুব্ধ ফ্যাসিবাদীরা মিত্রশক্তির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে জার্মানদের ইতালি হতে সম্পূর্ণ উৎখাত করে। ২৭ এপ্রিল পালিয়ে যাওয়ার সময় মুসোলিনি ও তার উপপত্নী ক্লারা পেতাচ্চি ধরা পড়েন। তাদের ২৮ এপ্রিল হত্যা করা হয়। ১ মে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রোদোলফো গ্রাজিয়ানি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Giacomo De Marzi, I canti di Salò, Fratelli Frilli, 2005.
- ↑ Renzo De Felice, Breve storia del fascismo, Milano, Mondadori (Collana oscar storia), 2002, pp. 120–121.
- ↑ ক খ Pauley, Bruce F. (২০০৩), Hitler, Stalin and Mussolini: Totalitarianism in the Twentieth Century Italy (2nd সংস্করণ), Wheeling: Harlan Davidson, পৃষ্ঠা 228, আইএসবিএন 0-88295-993-X
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ফ্যাসিস্ট ইতালি:ইহুদি বনাম মিথ্যা ইয়াদ ভাশেমের ইয়ায়েল নিদাম ওরভিয়েতোর অনলাইন লেকচার
- অক্ষশক্তির ইতিহাস- ফেসবুক
- কোমান্দো সুপ্রিমো
- ইতালির ঐতিহাসিক পতাকা
- ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের যুদ্ধকালীন পতাকা