ইতালি–ফিলিপাইন সম্পর্ক
ইতালি–ফিলিপাইন সম্পর্ক হল ইতালি এবং ফিলিপাইন রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৪৭ সালের ৯ই জুলাই ইতালি এবং ফিলিপাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১]
ইতালি |
ফিলিপাইন |
---|
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক
সম্পাদনা১৯৮৬ সালের পিপল পাওয়ার অভ্যূত্থান দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে মূল ভূমিকা পালন করে। ইতালি প্রথম দেশ হিসেবে কোরাজান অ্যাকুইনোর রাষ্ট্রপতিত্ব স্বীকৃতি দেন। ইতালি এবং ফিলিপাইন নানাবিধ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, বিমান যোগাযোগ, রাজস্ব, বিনিয়োগ, উন্নয়নমূলক সহযোগিতা, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, ক্ষুদ্র ও মধ্যম উদ্যোগ, যানবাহন, যোগাযোগ এবং প্রতিরক্ষাসহ নানান ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য।[২] ফিলিপাইন বহু ইতালিয় বাণিজ্যিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। ইতালিয় ইন্ডাস্ট্রিজ কনফেডারেশন নামক ইতালির বৃহত্ত্ম উৎপাদনকারী সংস্থা ও সেবাদানকারী কোম্পানিও ফিলিপাইনে এসেছে। বাণিজ্য, অবকাঠামো এবং শক্তিসহ নানা কর্মসূচীতেও সমান্তরালে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। ইতালিয় ও ফিলিপাইনের কোম্পানির মধ্যে বেশকিছু বিজনেস-টু-বিজনেস বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।[৩] ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি বেনিঙ্গো তৃতীয় অ্যাকুইনো রোমে বাণিজ্য ও পর্যটন খাতের সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিমান যোগাযোগ চুক্তিপত্রও স্বাক্ষরিত হয়।[৪]
ইতালিতে অবস্থানরত ফিলিপিনো
সম্পাদনাইতালির চতুর্থ-বৃহত্তম অভিবাসী সম্প্রদায় গঠন করেছে ফিলিপিনোরা। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে ছিল যথাক্রমে রোমানিয়, আলবানিয় এবং উত্তর আফ্রিকান সম্প্রদায়। ফিলিপিনোদের বৃহত্তম একত্রিত ইউরোপীয় অভিবাসী গন্তব্যও ইতালি।[৫] ইতালির রাজধানী রোম ফিলিপিনো সম্প্রদায়দের বৃহত্তম আবাসস্থল। প্রায় ১০৮,০০০ ফিলিপিনো ইতালিতে বৈধভাবে সাময়িক কর্মী বা স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে বসবাস করে। আর অবৈধ ফিলিপিনোদের সংখ্যা প্রায় ২০,০০০ থেকে ৮০,০০০ এর মধ্যে।[৬] ২০০৮ সালে ইস্টাট (ইস্টিটিউটো ন্যাজনালে দি স্ট্যাটিস্টিকা) নামক ইতালির পরিসংখ্যা দপ্তর জানায়, ইতালিতে প্রায় ১১৩,৬৮৬ জন ফিলিপিনো বসবাস করছে যা ২০০৭ সালে ছিল ১০৫,৬৭৫ জন।[৭] ফিলিপিনো ইতালিয়দের মধ্যে প্রায় ৬৩% নারী এবং তারা ঘরোয়া কাজের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। ফিলিপিনো কর্ম ও শ্রম মন্ত্রণালয় (ডলে) জানায় যে ইতালি প্রায় ৫০০০ নিয়মিত কর্মী রয়েছে, যে সংখ্যাটা ২০০৭ সালে ছিল ৩০০০।[৮] ডোল বলে যে এ পরিবর্তন ছিল "অভিবাসন খাতে ফিলিপিনোদের সাথে ভালো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চিহ্ন"। ইতালিতে প্রায় ৬০টি ফিলিপিনো সংস্থা ছিল। এগুলো মূলত ছিল গির্জা-ভিত্তিক, যদিও সেখানে বেশকিছু সাংস্কৃতিক ও পৌর দলও ছিল।[৯] এরকম একটি সংস্থা হল ফিলিপিনো উইমেনস কাউন্সিল। এ সংস্থাটির প্রধান উদ্দেশ্য হল ফিলিপিনো নারী অভিবাসীদের অধিকার বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করে তোলা এবং সেই সাথে তাদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকা।[১০] ২০০৭ সালে ইতালি ফিলিপিনোদের মধ্যে যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল, তাদের ইতালির ড্রাইভিং লাইসেন্সও প্রদান করে।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Treaty of Friendship and General Relations between the Republic of the Philippines and the Italian Republic" (পিডিএফ)। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Philippines - Italian Relations"। ফিলিপাইন দূতাবাস রোম। মার্চ ৩০, ২০১১। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Philippines welcomes first Italian business mission in 65 years"। সানস্টার। ২৩ নভেম্বর ২০১২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ de Leon, Patricia (৩ ডিসেম্বর ২০১৫)। "PH signs air services pact with Italy to beef up trade, tourism ties"। সিএনএন ফিলিপাইন্স। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Filipino migration" (পিডিএফ)। জাতিসংঘ। ২৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ Dancel, Joshua (২৫ সেপ্টেম্বর ২০০২)। "Get amnesty before Italy kicks you out, OFWs told"। সান স্টার ম্যানিলা। ২০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০০৯।
- ↑ "80,000 more Filipinos in Italy in 2008"। এবিএস সিএনএন নিউজ। ৯ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ Uy, Veronica (১৮ ডিসেম্বর ২০০৭)। "More jobs for Filipinos in Italy, says DoLE"। গ্লোবাল ন্যাশন। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০০৯।
- ↑ "PGMA's Italy visit brightens hope for early accord on 3 RP proposals on Filipino workers"। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ফিলিপাইন)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ফিলিপাইন)। ২০০৬। ৮ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০০৯।
- ↑ "Life in Italy is no Dolce Vita"। আইসিস ইন্টারন্যাশনাল। ৮ মে ২০১৭। ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ "OFWs in Italy receive 2 unexpected gifts during President's visit"। পিএলডিটি। ২০০৭। ১৩ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০০৯।