ইজ্জতুল্লাহ বাঙ্গালী
ইজ্জতুল্লাহ বাঙ্গালী ১৮ শতকের একজন বাঙালি ফার্সি ভাষার লেখক। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার অধিবাসী ছিলেন।[১] তিনি অনেক বই লিখলেও কেবল ১৭২২ সালে[২] লেখা তাজলমুলক গুলে বকাওলি বইটি পাওয়া যায়। বইটি ফার্সি ভাষায় গদ্যাকারে রচিত। বইটির একটি পান্ডুলিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে (নং এইচ/আর ৬৬.৭) এখনও সংরক্ষিত আছে। [৩]
তাজলমুলক গুলে বকাওলি
সম্পাদনাতাজলমুলক গুলে বকাওলি নামক বইটি মূলত একটি রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান। এর কাহিনি মূলত লোককাহিনি আশ্রিত। তাজলমুলক নামক কোন এক রাজপুত্রের সাথে পরীকন্যা গুলে বকাওলি প্রণয়-ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে বইটির কাহিনি আবর্তিত হয়।
কাহিনি
সম্পাদনাকোনভাবে রাজপুত্র তাজমুলকের বাবা অন্ধ হয়ে যায়। সে জানতে পারে শুধুমাত্র বকাওলি ফুল দিয়েই তার বাবার অন্ধত্ব দূর করা সম্ভব। ‘বকাওলি’ হচ্ছে এক ধরনের কাল্পনিক ফুল। এটি শুধুমাত্র পরীস্থানের ফুলবাগানেই পাওয়া যায়। তাই অন্ধ পিতার চোখ ভাল করতে সে যায় 'বকাওলি' ফুলের সন্ধানে। এই ফুল সংগ্রহ করার সময় সে পদে পদে অনেক অলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হয়। অবশেষে বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সেই অলৌকিক ফুল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু ফুল সংগ্রহ করার সময়, পরীস্থানের পরীকন্যা গুলে বকাওলির সাথে তার প্রণয় হয়। তাই সে ফুলের পাশাপাশি পরীকন্যা গুলে বকাওলিকেও লাভ করে।
তাজলমুলক গুলে বকাওলি বইয়ে বর্ণিত কাহিনিটি ছিল খুবই জনপ্রিয় কাহিনি। একই কাহিনি অবলম্বনে তার আগেই সতেরো শতকে নওয়াজিস খান নামক চট্টগ্রামের একজন কবি গুলে বকাওলি নামে বাংলা ভাষায় একটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। একটি হিন্দি বইয়ের কাহিনির উপর ভিত্তি করে ইজ্জতুল্লাহ বাঙ্গালী তার এই তাজলমুলক গুলে বকাওলি বইটি লেখেন। পরবর্তীতে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের মুনশি নেহালচান্দ লাহোরি মজহাবে ইশক (১৮০৩) নামে তাজলমুলক গুলে বকাওলি বইটিকে উর্দু ভাষায় অনুবাদ করেন। [৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Abdul Karim (১৯৯৪)। বাংলা সাহিত্যের কালক্রম: মধ্যযুগ। Bangla Academy। পৃষ্ঠা 138। আইএসবিএন 9789840730230।
- ↑ Morgenroth, Wolfgang, সম্পাদক (১৮ মে ২০২০)। "Sanskrit and World Culture"। Proceedings of the Fourth World Sanskrit Conference of the International Association of Sanskrit Studies। Weimar, Germany: De Gruyter। আইএসবিএন 9783112320945।
- ↑ ক খ আহমদ, ওয়াকিল। "ইজ্জতুল্লাহ বাঙ্গালী"। bn.banglapedia.org। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-১৬।