আহমদ ইয়ার খান নঈমী
মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন সুন্নি ইসলামি পন্ডিত, ভাষ্যকার, আইনবিদ ও সুফি। তিনি "হাকিমুল উম্মত" (জাতির জ্ঞানী নেতা) উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি তার ধর্মতাত্ত্বিক অবদান এবং তার সেরা রচনা, তাফসীরে নঈমীর জন্য সুপরিচিত, যা কুরআনের একটি ব্যাপক ব্যাখ্যা।[১]
আহমদ ইয়ার খান নঈমী | |
---|---|
উপাধি | হাকীমুল উম্মাহ (জাতির জ্ঞানী নেতা) |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | (৪ জমাদিউল আউয়াল ১৩১২ হিজরী) | ২ নভেম্বর ১৮৯৪
মৃত্যু | ২৪ অক্টোবর ১৯৭১ (৩ রমজান ১৩৯১ হিজরী) | (বয়স ৭৬)
সমাধিস্থল | গুজরাট |
ধর্ম | ইসলাম |
যুগ | আধুনিক যুগ |
অঞ্চল | দক্ষিণ এশিয়া |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | মাতুরিদী |
আন্দোলন | বেরলভী |
প্রধান আগ্রহ | ফিকহ, তাফসীর, হাদীস, আকিদা, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা |
উল্লেখযোগ্য কাজ | তাফসীরে নঈমী (পবিত্র আল কোরআনের ব্যাখ্যা), জা'আল হক |
তরিকা | কাদেরী |
মুসলিম নেতা | |
এর শিষ্য | নঈম উদ্দিন মুরাদাবাদী |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
যাদের প্রভাবিত করেন |
জন্ম
সম্পাদনাআহমদ ইয়ার খান নঈমী ১৩১২ হিজরী মোতাবেক ১৮৯৪ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের বদায়ুন জেলার উজাহানি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মনোয়ার খাঁন ইবনে মাওলানা মুহাম্মদ ইয়ার খাঁন। তিনি উজাহানি জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।[২]
শিক্ষা
সম্পাদনাতিনি ১০ বছর বয়স পর্যন্ত তার পিতার তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। বদায়ুনের মাদ্রাসা শামসুল উলুমে ১৯১৬ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপরে তিনি যুক্তিবাদী বিজ্ঞান, ইসলামি আইনশাস্ত্র (উসুল আল ফিকহ) ও ধর্মতত্ত্বে (ইলম আল কালাম) অধ্যয়নের জন্য মুরাদাবাদে যান। তিনি সেখানকার ইসলামি পণ্ডিত মাওলানা কাদের বখশ বদায়ুনী থেকে জ্ঞান অর্জন করেন। এই সময় তিনি ইমাম আহমদ রেজা খান বেরলভীর সাথে সাক্ষাত করেন। শামসুল উলুমের পরে, তিনি জামিয়া নাঈমিয়ায় যান, সেখানে তিনি সৈয়দ নঈম উদ্দিন মুরাদাবাদীর অধীনে অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯২৫ সালে দরসে নিজামী সম্পন্ন করেন।[১]
কর্ম
সম্পাদনাশিক্ষকতার মাধ্যমে নঈমীর কর্মজীবনের সূচনা হয়। গুজরাটের দারুল উলূমে শিক্ষকতার জন্য পাকিস্তানের বিশিষ্ট মুফতি মাওলানা আবুল বারাকাতের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ার পূর্বে তিনি ভারতের বেশ কয়েকটি ইসলামি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছিলেন। পাশ করার ছয় মাস আগে তিনি জামিয়া গাউসিয়া নাঈমিয়ায় শিক্ষকতা, ইসলামিক রায় প্রদান এবং শিক্ষাগত গ্রন্থ রচনায় জড়িত ছিলেন। কথিত আছে, তিনি পাঁচ শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
উল্লেখযোগ্য ছাত্র
সম্পাদনাতালিকা
- খাদিম হোসাইন রিজভী (তেহরিকে লাব্বাইক ইয়া-রাসুলুল্লাহ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা)
- মাওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দীন কাশ্মীরী
- মুহাম্মদ ফাযিল নঈমী
- মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী
- আল্লামা জালালুদ্দীন আল-কাদেরী
- শায়খুল হাদীস গোলাম আলী উকাড়বী
বই
সম্পাদনাতিনি প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। নিম্নে তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের তালিকা:
- তাফসীরে নঈমী (পবিত্র আল কুরআনের ব্যাখ্যাগ্রন্থ)
- ফতোয়ায়ে নঈমীয়া
- নূরুল ইরফান (কানযুল ঈমানের পাদটীকা)
- নাঈমুল বারী ফী ইনশিরাহ আল বুখারী
- মিরাত শরাহ মিশকাত মিশকাতুল-মাসাবিহ (৮ খণ্ড, উর্দুতে মিশকাত শরীফের ভাষ্য)
- রিসালা-এ-নুর
- জা'আল হক (তিন খণ্ড)
- সালতানাতে মুস্তাফা (দ.) দার মামলিকাতে কিবরিয়া
- ইলমুল কোরআন (তাফসীর লেখার নিয়মাবলি)
মৃত্যু
সম্পাদনাতিনি ১৩৯১ হিজরীর ৩ রমজান মোতাবেক ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর পাকিস্তানের গুজরাতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মাজার পাকিস্তানের গুজরাতে অবস্থিত।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Hazrat Allama Mufti Ahmed Yaar Khan Naeemi"। www.ziaetaiba.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "BIOGRAPHY OF MUFTI AHMAD YAR KHAN NAEEMI"। dokumen.tips। ২৯ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।