আলপিন (ক্রোড়পত্র)
আলপিন বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলো-র সোমবারের একটি ক্রোড়পত্র ছিল। ক্রোড়পত্রটি বাংলাদেশের সমাজজীবনের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে বিদ্রূপাত্মক রচনা, কার্টুন ইত্যাদি ছাপিয়ে থাকত।
বিভাগীয় সম্পাদক | সুমন্ত আসলাম |
---|---|
বিভাগ | বিদ্রুপ ম্যাগাজিন |
প্রকাশনা সময়-দূরত্ব | সাপ্তাহিক |
প্রকাশক | মাহফুজ আনাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নিয়মিত ফিচারসমূহ
সম্পাদনাআলপিন সংকলনের নিয়মিত বিভাগগুলো হল মূল গল্প নিয়ে লেখা “গজাল” ,[১] সম্পাদকীয় “বাউণ্ডুলে”[২] এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্টুন। কার্টুনসহ অন্যান্য ফিচার বিভাগগুলোতে মূলত পাঠকরাই অবদান রাখেন।
বিতর্ক
সম্পাদনা১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে প্রকাশিত আলপিনের ৪৩১তম সংখ্যায় স্থান পাওয়া একটি কার্টুনকে নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্কের সূচনা হয়। কার্টুনটিতে একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের সাথে একজন বালকের সংলাপে বালকটি ইসলামের নবী মুহাম্মাদের নাম নিয়ে একটি কৌতুক করে।[৩]
২০ বছর বয়সী কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানের আঁকা কার্টুনটির বিষয়বস্তু একজন বয়স্ক মানুষের সাথে বিড়াল হাতে এক বালকের আলাপচারিতা। কার্টুনটির লিখিত সংলাপই মূলত বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন বালকটিকে তার নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তখন সে নামের আগে "মোহাম্মদ" উল্লেখ করে না, যা বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মানার্থে ব্যবহার করে। অগ্রজ লোকটি ছেলেটিকে সকল নামের আগে এই শব্দ ব্যবহার করতে বলে। কার্টুনের শেষ অংশে যখন লোকটি জানতে চায় যে, বালকটির হাতে কী, তখন জবাবে সে বলে "মোহাম্মদ বিড়াল"।[৪]
বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ কার্টুনটির তীব্র প্রতিবাদ করে ও গণপ্রতিবাদের আয়োজন করে, যা ২০০৭ সালের শুরুতে স্থাপিত বাংলাদেশের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিষিদ্ধ ছিল।[৩][৫] মুসলিম নেতারা সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে এবং প্রথম আলোর অনুমোদন নিষিদ্ধকরণের আবেদন জানায়।[৪] বাংলাদেশ সরকার আলপিনের ৪৩১তম সংখ্যাটির বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং এর সকল কপি বাজেয়াপ্ত করে। কার্টুনটির রচয়িতা আরিফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।[৪][৬]
পরবর্তীতে আলপিন ও মূল প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান প্রথম আলোয় একটি লিখিত মন্তব্যে কার্টুনটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং তা প্রকাশের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেন।[৬][৭] তিনি বলেন "অসম্পাদিত, অননুমোদিত ও অগ্রহণযোগ্য" কার্টুনটিকে অপসারণ করা হয়েছে এবং "সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে"। অবশ্য দেশের ধর্মীয় নেতারা তাদের আপত্তি অব্যাহত রাখে এবং মতিউর রহমান ও প্রথম আলোর প্রকাশক মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তার দাবি করে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "পানিতে ঢাকা ঢাকা শহর"। আলপিন, প্রথম আলো। ১৩ আগস্ট ২০০৭। পৃষ্ঠা ৪–৬।
- ↑ "প্রিয় বাচ্চারা, তোমরা যারা রুপকথার গল্প শুনতে ভালোবাসো!"। আলপিন, প্রথম আলো। ২৭ আগস্ট ২০০৭। পৃষ্ঠা ১৪।
- ↑ ক খ "Violence over Bangladesh cartoon"। BBC News। ২০০৭-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৫।
- ↑ ক খ গ "Anti-Prophet Cartoon in Bangladesh"। IslamOnline। ২০০৭-০৯-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৫।
- ↑ "'Alpin' cartoon protesters clash with police"। The Financial Express। ২০০৭-০৯-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৫।
- ↑ ক খ "Prothom Alo ordered to suspend 'Alpin' publication"। The Independent। ২০০৭-০৯-২৫। ২০০৯-০৭-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৫।
- ↑ "Cartoonist Liton arrested"। The Independent। ২০০৭-০৯-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]