আর্থার রিচার্ডসন

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

আর্থার জন রিচার্ডসন (ইংরেজি: Arthur Richardson; জন্ম: [২৪ জুলাই, ১৮৮৮ - মৃত্যু: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৭৩) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সেমাফোর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৪ থেকে ১৯২৬ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

আর্থার রিচার্ডসন
১৯২৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আর্থার রিচার্ডসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
আর্থার জন রিচার্ডসন
জন্ম(১৮৮৮-০৭-২৪)২৪ জুলাই ১৮৮৮
ক্লেয়ার, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২৩ ডিসেম্বর ১৯৭৩(1973-12-23) (বয়স ৮৫)
সেমাফোর, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ-স্পিন, ডানহাতি মিডিয়াম পেস
ভূমিকাব্যাটসম্যান, আম্পায়ার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১৮)
১৯ ডিসেম্বর ১৯২৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৪ আগস্ট ১৯২৬ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯১৮–১৯২৭সাউথ অস্ট্রেলিয়া
১৯২৭–১৯৩০ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া
আম্পায়ারিং তথ্য
টেস্ট আম্পায়ার২ (১৯৩৫–১৯৩৫)
এফসি আম্পায়ার১৪ (১৯৩৪–১৯৩৭)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৮৬
রানের সংখ্যা ৪০৩ ৫২৩৮
ব্যাটিং গড় ৩১.০০ ৪১.৫৭
১০০/৫০ ১/২ ১৩/১৬
সর্বোচ্চ রান ১০০ ২৮০
বল করেছে ১৮১২ ১৭০৮৩
উইকেট ১২ ২০৯
বোলিং গড় ৪৩.৪১ ৩১.৩৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২০ ৬/২৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/০ ৩৪/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে ডানহাতে অফ-স্পিন, মিডিয়াম পেস বোলিং করতে পারতেন আর্থার রিচার্ডসন

ঘরোয়া ক্রিকেট

সম্পাদনা

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার গ্রামীণ এলাকা ক্লেয়ারে জন্মগ্রহণকারী আর্থার রিচার্ডসন সেভেনহিলস ক্রিকেট ক্লাবে খেলতে শুরু করেন। ১৯১১-১২ মৌসুমে ক্লাবটির সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ঘটিয়ে কাইবাঙ্গা ক্রিকেট ক্লাবে চলে যান। স্ট্যানলি ক্রিকেটিং অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ব্যাটিং ও বোলিং - উভয় বিভাগেই শীর্ষস্থানে ছিলেন। ৯২.২০ গড়ে ৭৩৮ রান ও ৮.০০ গড়ে ৪০ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।[]

স্বল্পসংখ্যক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে খেলা চলাকালীন চশমা পরিধান করতেন তিনি। ১৯১৮-১৯ মৌসুম থেকে ১৯২৬-২৭ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন। এছাড়াও অফস্পিন বোলিং করতেন তিনি। নিজস্ব শেষ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা বিজয়ী সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ৬৭.৪৪ গড়ে ৬০৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে, কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ২৩২ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেছিলেন আর্থার রিচার্ডসন।

১৯২২-২৩ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সদস্য থাকা অবস্থায় সফররত এমসিসি’র বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৮০ রান তুলেছিলেন ২৪২ মিনিটে।[] এরপূর্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে মধ্যাহ্ন বিরতির পূর্বেই সেঞ্চুরি করার গৌরবগাঁথা রচনা করেছিলেন।[] ১৯২৬ সালে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে খেলায় তিনি ৬/২৮ ও ৫/৩৬ পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।[]

ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশগ্রহণ

সম্পাদনা

১৯৩০-এর দশকে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে ব্যাকআপ ও বার্নলে ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন। টডমোর্ডেন ক্রিকেট ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত প্রথম খেলায় এতোটাই ভয় পেয়েছিলেন যে, টডমোর্ডেনের বোলার ফ্রেড রুটকে মাঝপথে বোলিং করা থামিয়ে দেন।[] ১৯২৯ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে সর্বাধিকসংখ্যক ১১৯৩ রানের নতুন রেকর্ড স্থাপন করেন। পরবর্তীতে এভারটন উইকস তার এ রেকর্ড ভঙ্গ করেছিলেন।[]

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে নয়টি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন আর্থার রিচার্ডসন। ১৯ ডিসেম্বর, ১৯২৪ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯২৪-২৫ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়ায় আসে। ঐ সিরিজের চার টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। এরপর, ১৯২৬ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। সিরিজের পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই অংশগ্রহণ ছিল তার। তন্মধ্যে লিডসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে মনোরম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।[]

অক্টোবর, ১৯২৭ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদের চুক্তিতে রাজ্য দলের কোচ হিসেবে মনোনয়ন পান।[] ১৯২৭-২৮ মৌসুম থেকে ১৯২৯-৩০ মৌসুম পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ ছিল তার।

১৯৩০ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে কোচের দায়িত্বে ফিরে আসেন। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।[] ১৯৩৫ সালে পোর্ট অব স্পেনে কুইন্স রয়্যাল কলেজে কোচের দায়িত্ব পালন করেন।[১০] এ সময়ে ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে সফররত ইংরেজ দলের সাথে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই টেস্টে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন আর্থার রিচার্ডসন।[] এছাড়াও, ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডের বেশ কয়েকটি খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

২৩ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সেমাফোরে ৮৯ বছর বয়সে আর্থার রিচার্ডসনের দেহাবসান ঘটে।

সমসাময়িক অস্ট্রেলীয় জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সঙ্গী ভিক্টর রিচার্ডসনের সাথে আত্মীয়তার কোন যোগসূত্র নেই। একই খেলায় উভয়েরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল।[১১] এছাড়াও, ছয় বছর পর উভয়েরই একযোগে টেস্ট অভিষেক হয়।[১২]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Stanley Cricketing Association", Blyth Agriculturalist, 26 April 1912, p. 4.
  2. South Australia v MCC 1922–23
  3. Wisden 1974, p. 1078.
  4. Oxford University v Australians 1926
  5. "Neil Dansie", CKCricket Heritage "Archived copy" (পিডিএফ)। ৫ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০০৯  Accessed 2 January 2009
  6. The Oxford Companion to Australian Cricket, Oxford, Melbourne, 1996, p. 448.
  7. England v Australia, Leeds 1926
  8. Barker, Anthony J. (১৯৯৮)। The WACA: An Australian Cricket Success Story। Allen & Unwin। পৃষ্ঠা 82। আইএসবিএন 1-86448-675-9 
  9. Cricketer, February 1974, p. 17.
  10. Ray Robinson, Green Sprigs, Collins, London, 1954, p. 191.
  11. Victoria v South Australia 1918–19
  12. Australia v England, Sydney 1924–25

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা