আমি বীরাঙ্গনা বলছি

(আমি বীরঙ্গনা বলছি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আমি বীরাঙ্গণা বলছি লেখিকা নীলিমা ইব্রাহিম রচিত একটি বই। এই বই'এ মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে ধর্ষিত হওয়া সাত জন নারীর করুন কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। [][]

আমি বীরাঙ্গণা বলছি
লেখকনীলিমা ইব্রাহিম
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
বিষয়বীরাঙ্গণাদের আত্নজীবনী
প্রকাশিত১৯৯৪
মিডিয়া ধরনমুদ্রিত গ্রন্থ

বই থেকে কিছু উদ্ধৃতি

সম্পাদনা

লেখিকা বইটিতে সাত জন বীরাঙ্গণা নারীর কথা বলেছেন যারা ভিন্ন ভিন্ন পারিবারিক অবস্থা থেকে এসেছে। দর্জির মেয়ে আছে, গ্রামের বিত্তশালী কৃষকের মেয়ে আছে আবার শহরের উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা থেকে রাজনীতিবিদের মেয়ে আছে। তবে এই বীরাঙ্গণাদের মধ্যে একটি মিল হচ্ছে তারা জীবন যুদ্ধে কেউই পরাজিত হয়নি।

মেহেরজান বলছে, “জীবনটা তো সরল সমান্তরালরেখায় সাজানো নয়। এর অধিকারী আমি সন্দেহ নেই, কিন্তু গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করেন – কি বললেন আল্লাহ, পাগল হয়েছেন! বাঙালি মেয়ের জীবন পরিচালিত হবে আল্লাহর নির্দেশে! তাহলে এদেশের মৌলবী মওলানারা তো বেকার হয়ে থাকবেন, আর রাজনীতিবিদরাই বা চেঁচাবেন কি উপলক্ষ করে? না এসব আমার নিজস্ব মতামত, অভিযোগের বাঁধা আটি নয়।“

যে কথা তাহের (ফাতেমার স্বামী) জানে না সেই কথাই চাঁপা ডাক্তারকে বললো। সে নির্মম কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে সে নিজেও কেঁদে উঠলো। ডাক্তার নিচু হয়ে চাঁপাকে প্রণাম করলো। দিদি, আপনারা প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আশ্চর্য এতো ত্যাগ স্বীকার করে দেশ স্বাধীন করলো বাঙালিরা, আর মা বোনদের দেয়া ত্যাগের মূল্য দিতে পারলো না। দূর্ভাগ্য সে দেশের!

আমি মাঝে মাঝে ওর ঘরে গিয়ে বসতাম। চোখ নিচু করে মিনা বেরিয়ে যেতো অথবা ঘরে ঢুকতো। কিছু জিজ্ঞেস করলে খুব কুন্ঠিতভাবে জবাব দিতো। বলতাম, জেরিনা এই মেয়েগুলোর বুকে আগুন জ্বেলে দিতে পারিস না, ওরা কেন মাথা নিচু করে চলে? নীলিমাদি তোমাদের এ সমাজ ওদের চারিদিকে যে আগুন জ্বেলে রেখেছে তার উত্তাপেই ওরা মুখ তুলতে পারে না। বেশি বেশি বক্তৃতা দিও না। ওদের সম্পর্কে জেরিনা খুব বেশি স্পর্শকাতর ছিল।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Armbruster, Heidi; Anna Laerke (২০০৯)। Taking Sides: Ethics, Politics, and Fieldwork in Anthropology। Berghahn। পৃষ্ঠা 78। আইএসবিএন 978-1-84545-701-3 
  2. Azim, Firdous (২০১২)। Ania Loomba, Ritty A. Lukose, সম্পাদক। South Asian Feminisms। Duke University Press। পৃষ্ঠা 273। আইএসবিএন 978-0-8223-5179-5