আব্দুল হামিদ (পণ্ডিত)
আব্দুল হামিদ (১৮৬৯ — ৩১ মার্চ ১৯২০) ছিলেন অবিভক্ত বাংলার একজন দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও বিতার্কিক। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলার দেওবন্দ আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ আব্দুল ওয়াহেদ বাঙ্গালীর দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তার সংস্কার কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তিনি আল জামিয়াতুল হামিদিয়া নছিরুল ইসলাম ফতেহপুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আব্দুল হামিদ | |
---|---|
উপাধি | মুনাযেরে ইসলাম |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৮৬৯ ইং |
মৃত্যু | ৩১ মার্চ ১৯২০ | (বয়স ৫০–৫১)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
পিতামাতা |
|
জাতিসত্তা | বাঙালি |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | শিক্ষা, সমাজ সংস্কার |
উল্লেখযোগ্য কাজ | |
যেখানের শিক্ষার্থী | মােহসেনিয়া মাদ্রাসা |
মুসলিম নেতা | |
শিক্ষার্থী | |
যার দ্বারা প্রভাবিত |
জীবনী
সম্পাদনাআব্দুল হামিদ ১৮৬৯ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার অন্তর্গত উত্তর মাদার্শা গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রুস্তম আলী মুন্সী ও মাতা সুয়াজান। তার পূর্বপুরুষরা ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আরবদেশ থেকে চট্টগ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। প্রথমে নিজ গৃহে পরে মক্তবে গিয়ে কুরআন ও প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা সমাপ্ত করেন। অতঃপর তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম শহরের চট্টগ্রাম মোহসেনিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে প্রত্যেক ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করে লেখাপড়া শেষ করেন।[২]
মোহসেনিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে তিনি আব্দুল ওয়াহেদ বাঙ্গালীর সান্নিধ্যে আসেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার সংস্কার কাজে জড়িয়ে পড়েন। ইসলামের নামে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার দূর করতে তিনি আব্দুল ওয়াহেদের সাথে বিভিন্ন ধর্মসভা ও বিতর্কসভায় যোগদান করেন। তিনি বিতার্কিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শুরুতে তিনি খন্দকিয়াতে একটি মক্তব চালু করেন। উক্ত মক্তবে শিশু থেকে বৃদ্ধাদের তিনি পাঠদান করতে থাকেন। এছাড়াও অনেক জায়গাতে মক্তব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করেন। ১৮৯৬ সালে তিনি ৩ সহকর্মীর সাথে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৩ সহকর্মী হলেন আব্দুল ওয়াহেদ বাঙ্গালী, সুফি আজিজুর রহমান, হাবিবুল্লাহ কুরাইশি। তার প্রতিষ্ঠিত আরও একটি বড় মাদ্রাসা আল জামিয়াতুল হামিদিয়া নাছিরুল ইসলাম ফতেহপুর।[২]
সংস্কার কাজের পাশাপাশি তিনি কিছু গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তার মধ্যে রয়েছে: তুহফাতুল মুমিনীন, মাসায়েলে রামাযান, ফাযায়েলে ঈদগাহ, ফাযায়েলে ইতিকাফ।[৩]
তিনি ১৯২০ সালের ৩১ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।[৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ উদ্দিন, মুহাম্মদ জসিম (২০১৬)। ফিক্হশাস্ত্রে মুফতী মুহাম্মদ ফয়যুল্লাহ-এর অবদান :একটি পর্যালোচনা (পিএইচডি)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৫৩।
- ↑ ক খ নিজামপুরী, আশরাফ আলী (২০১৩)। দ্যা হান্ড্রেড (বাংলা মায়ের একশ কৃতিসন্তান) (১ম সংস্করণ)। হাটহাজারী, চট্টগ্রাম: সালমান প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৫৫,৫৬। আইএসবিএন 112009250-7।
- ↑ ক খ রাসেল, খালেদ। "আল্লামা আবদুল হামিদ (রহ.) অনুপ্রেরণার উৎস সাধক"। মাসিক আত তাওহীদ। আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া। ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২১।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- আহমদুল্লাহ, মুফতি (২০১৬)। মাশায়েখে চাটগাম — ১ম খণ্ড (৩য় সংস্করণ)। ১১/১, ইসলামী টাওয়ার, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০: আহমদ প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৬৮–১০১। আইএসবিএন 978-984-92106-4-1।
- এস এম আমিনুল ইসলাম, মাওলানা; ইসলাম, সমর (জানুয়ারি ২০১৪)। বাংলার শত আলেমের জীবনকথা। বাংলাবাজার,ঢাকা-১১০০: বইঘর। পৃষ্ঠা ৪৭–৫২। আইএসবিএন 9847016800481।
- জাহাঙ্গীর, সালাউদ্দিন (২০১৭)। বাংলার বরেণ্য আলেম — ১ম খণ্ড (১ম সংস্করণ)। মধ্য বাড্ডা, আদর্শ নগর, ঢাকা: মাকতাবাতুল আযহার। পৃষ্ঠা ৮৭–৯৪।
- বাবুনগরী, জুনায়েদ (২০০৩)। দারুল উলুম হাটহাজারীর কতিপয় উজ্জ্বল নক্ষত্র (১ম সংস্করণ)। হাটহাজারী, চট্টগ্রাম: বুখারী একাডেমি। পৃষ্ঠা ১২–১৩।
- হাসনাবাদী, মুহাম্মদ জাকারিয়া (২০২৩)। মাশায়েখে বাবুনগর। বাংলাদেশ: ইত্তিহাদ পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ৬১–৬২।