আবু হানিফা মসজিদ
আবু হানিফা মসজিদ (আরবি: مسجد أبو حنيفة মসজিদ আবু হানিফাহ) বা (আরবি: مسجد أبي حنيفة মসজিদ আবি হানিফাহ'), (আরবি: جامع الإمام الأعظم গামি` আল –ইমাম আল-আজম) নামেও পরিচিত, ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত সুন্নি মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। মসজিদটি হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফাহ আন-নুমানের, প্রখ্যাত ইমাম (আল-ইমাম আল-আজম) নামেও অধিক পরিচিত, মাজারের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটি বাগদাদের উত্তরাঞ্চলের জেলা আদহামিয়াহতে অবস্থিত যা আবু হানিফার আল ইমাম আল আজম নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে।
আবু হানিফা মসজিদ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাস |
নেতৃত্ব | ইমাম: শেখ আবদ আল সাত্তার আবদ আল জাব্বার[১] শেখ আহমেদ হাসান আল তাহা |
অবস্থান | |
অবস্থান | বাগদাদ, ইরাক |
স্থাপত্য | |
ধরন | মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | ইসলামিক; সেলজুক; অটোমন |
প্রতিষ্ঠার তারিখ | আনু. 985–986 AD / 375 AH |
বিনির্দেশ | |
ধারণক্ষমতা | ৫,০০০ |
অভ্যন্তরীণ | ১০,০০০ মি২ (১,১০,০০০ ফু২) |
গম্বুজসমূহ | ৪ |
মিনার | ২ |
মিনারের উচ্চতা | ৩৫ মি (১১৫ ফু) |
পটভূমি
সম্পাদনাআবু জাফর আল মনসুর আবু হানিফাকে কাজী আল কুজাত, বিচারকদের বিচারক, হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন, কিন্তু তিনি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এই প্রস্তাব প্রত্যাথ্যান করায় তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয় এবং তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রাজি হওয়া পর্যন্ত তাকে ১১০ বার চাবুকের দ্বারা আঘাত করা হয়। আল মনসুর আবু হানিফাকে এমন ফতোয়া জারি করার জন্য আদেশ দেন যা খলিফার কর্তৃত্বকে আরো শক্তিশালী করবে। আবু হানিফা তা করতে রাজি না হলে খলিফা তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।[২] কারাগারে থাকা অবস্থায়, বার্ধক্যজনিত কারণে বা কারাগারে বন্দি জীবন অতিবাহিত করার কারণে তিনি ১৫০ হিজরীতেবাগদাদে মৃত্যুবরণ করেন।[৩] তাকে ‘‘‘আল খায়জুরান সমাধিক্ষেত্রে’’’ সমাহিত করা হয়। সমাধিক্ষেত্রের নামকরণ আল খায়জুরান বিনতে আত্তার নাম অনুসারে করা হয় যাকে আবু হানিফার মৃত্যুর ২৮ বছর পর সেখানে সমাহিত করা হয়।[৪] বলা হয়ে থাকে যে তার নামাজে জানাযায প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং স্বয়ং আল মনসুর নিজেই উপস্থিত ছিলেন।[৫]
ইতিহাস
সম্পাদনাবুয়াহিদ
সম্পাদনাআব্বাসীয় খলিফা বুয়াহিদের শাসনের সময় ৩৭৫ হিজরীতে সামসাম আল দাউলার আদেশে আবু হানিফার মাজারের পাশেই একটি মধ্যম আয়তনের মসজিদ নির্মাণ করা হয়।[৬] বলা হয়ে থাকে যে আবু জাফরে আল জাম্মাম ৩৭৯ হিজরীতে মসজিদের ভেতরে একটি হল নির্মাণ করেন।[৭]
পুনঃসংস্কার ও সম্প্রসারণ
সম্পাদনা১৭৫৭ সালে, ইরাকের মামলুক সাম্রাজ্যের শাসন আমলে, বাগদাদের বালি, সুলেমান পাশা সমাধিটি পুনঃসংস্কার করেন এবং একটি গম্বুজ ও বিপণী বিতান নির্মাণ করেন। ১২১৭ সালে, মসজিদের বেশকিছু অংশ্ প্রায় ভেঙ্গে পড়ে যা মসজিদের স্থাপত্য শিল্পের অনেক কিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু সুলেমান পাশা ব্যাপাটি সামাল দেন এবং এবং মসজিদের পুরাতন ভবনটির পুনঃসংস্কার করেন এবং মসজিদের মিনারটিতে সোনালী রঙের প্রলেপ করান।[৮] ১২৫৫ হিজরীতে সুলতান আব্দুলমেসিদ ১ মসজিদের ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরাতন অংশের পুনঃসংস্কার করার জন্য আদেশ দেন। [৮]
মসজিদের বর্ণনা
সম্পাদনামসজিদটি সম্পূর্ণ আয়তন হল ১০,০০০মি²। এই মসজিদে প্রায় ৫০০০ লোক এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারে। জুম্মাবারে প্রায় ১০০০ জন সালাত আদায়কারী নিয়মিতভাবে সালাত আদায় করেন এবং সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতে ২০০-২৫০ জন নিয়মিতভাবে নালাত আদায় করেন।.[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Imam of the Abu Hanifa mosque, Abd al-Sattar Abd al-Jabbar, calls the security forces to stop some of their members from provoking people in a way that raises sectarian gaps"। Sharqiya Television। মে ২১, ২০১৪। মে ৩০, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২১, ২০১৬।
- ↑ Ibn al-Bazzaz, Mohammed M. (১৯০৪)। Virtues of Imam Abu Hanifa। Riyadh: National King Fahd Library।
- ↑ Najeebabadi, Akbar S. (২০০১)। The History of Islam (2 সংস্করণ)। Darussalam Press। আইএসবিএন 9960892883।
- ↑ al-Aadhamy, Waleed (২০০১)। Elders of Time and Neighbors of Nu'man। Baghdad: al-Raqeem Library।
- ↑ Abu Zahra, Mohammed (১৯৪৭)। Abu Hanifa: Life and Era - Opinions and Fiqh (2 সংস্করণ)। Cairo: Dar al-Fikr al-Arabi। আইএসবিএন 9771024361।
- ↑ Nasir, Turki M. (২০১১)। "Minarets: Great Imam Mosque (Abu Hanifa An-Nu'man)"। al-Wa'i al-Islami (555)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ al-Maqdisi, al-Bushari (১৯৯১)। Best partitions in the knowledge of the region (3 সংস্করণ)। Madbouli Library।
- ↑ ক খ al-Aadhamy। History of the Great Imam mosque and al-Adhamiyah mosques 1। পৃষ্ঠা 54।
- ↑ "Abu Hanifa Mosque"। Masajid al-Iraq। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৬।