আবু মিনা

শহর, আশ্রম কমপ্লেক্স এবং প্রাচীন মিশরের খৃস্টান তীর্থ কেন্দ্র।

আবু মেনা (আবু মিনা বানান করা হয়; মিশরীয় আরবি: ابو مينا মিশরীয় আরবি: æbuˈmiːnæ, æbo-) ছিল একটি শহর, আশ্রম কমপ্লেক্স  এবং প্রাচীন মিশরের খৃস্টান তীর্থ কেন্দ্র। আলেকজান্দ্রিয়ার প্রায় ৪৫ কিমি (২৮ মা) দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থিত।   ১৯৭৯ সালে এর ধ্বংসাবশেষ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।  খুব সামান্য ধ্বংসাবশেষ টিকে আছে কিন্তু অধিকাংশ প্রধান ভবন যেমন বিখ্যাত ব্যাসিলিকা সহজেই পরিলক্ষিত হয়।

আবু মিনা
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
মানদণ্ডসাংস্কৃতিক: iv
সূত্র৯০
তালিকাভুক্তকরণ১৯৭৯ (তৃতীয় সভা)
বিপদাপন্ন২০০১ –বর্তমান
স্থানাঙ্ক৩০°৫০′২৮″ উত্তর ২৯°৩৯′৪৭″ পূর্ব / ৩০.৮৪১১° উত্তর ২৯.৬৬৩১° পূর্ব / 30.8411; 29.6631
আবু মিনা মিশর-এ অবস্থিত
আবু মিনা
মিশরে আবু মিনার অবস্থান

সাম্প্রতিককালে এই এলাকায় চাষাবাদের জন্য পানি সেচ করার ফলে ভূমিতে পানির মাত্রা বেড়ে গেছে। ফলশ্রুতি তে পুরোনো স্থাপনার বেশ কিছু ধ্বসে গেছে অথবা যাওয়ার দশায় আছে। ২০০১ সালে সাইটটি বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় সংযুক্ত করা হয়। অধিকাংশ বিপদাপন্ন সাইটে কর্তৃপক্ষকে জোর করে ভবনের গোড়ায় বালু দিতে বাধ্য করা হয়।

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
খ্রিষ্ট এবং আবট মেনাস, ষষ্ঠ শতকের মিশরীয় দেবতা

আলেকজান্দ্রিয়ার মেনাস ৩য় শতকের শেষ ও ৪র্থ শতকের প্রথম দিকে শহীদ হন। ৫ম শতাব্দী এবং তার পরের বিভিন্ন উদ্ধৃতি থেকে তাঁর কবর এবং গির্জা সম্পর্কে সামান্য পার্থক্যে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। তার শরীরের অপরিহার্য অংশ উঠের পিঠে করে আলেকজান্দ্রিয়া থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মারেওতিস খালের পেছনের মরুভূমিতে। চলার পথে উট বার বার থেমে যেতে থাকে। কিছুতেই তাদের নড়ানো যাচ্ছিলো না। এটাকে ঐশ্বরিক নিদর্শন ভেবে তার দেহাবশেষ সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়।

গল্পটির অধিকাংশ বর্ণনা মতে সমাধির অবস্থান সবাই ভূলে যায়। এক পর্যায়ে স্থানীয় রাখাল বালক অলৌকিক ভাবে এটা পূন: আবিষ্কার করে। ইথিয়পীয় সাইন্যাক্সিয়ারিয়াম থেকে:

সেইন্ট মিনাসের সমাধিস্থল প্রকাশের ইচ্ছা করলেন। এবং সেইমরুভূমিতে মেষ পালকেরা থাকতো, এবং একদিন রোগাক্রান্ত একটি ভেড়া সেই স্থানে গেলো, এবং সেই স্থানের ক্ষুদ্র প্রসবণে নিজের শরীর ডুবিয়ে রাখে এবং সে এর মধ্যে গড়াতে থাকে এবং সাথে সাথে রোগমুক্ত হয়। এবং যখন মেষপালক এটা দেখলো এবং অলৌকিকত্ব বুঝতে পারলো এবং অতীব অবাক হলো। সে সমাধি থেকে কিছু ধুলো নিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে রোগগ্রস্ত মেষের গায়ে লাগিয়ে দিলো। এভাবে সে সব মেষকে সুস্থ করে তুললো। যারা রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে তার কাছে আসতো সে তাদেরকে এভাবে সুস্থ করতো।

আর্কাদিয় শাসনামলে স্থানীয় বিশপ ছোট গীর্জাভবনে জনতার উপচে পড়া লক্ষ করে পূর্বাঞ্চলের সম্রাটকে লিখলেন। সম্রাট বড় আকারে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং সম্প্রসারণের আদেশ দিলেন। প্রথমে তিনটি প্রধান গির্জা সম্প্রসারণ করা হবে। এন্টিক যুগের শেষের দিকে আবু মিনা মিশরের নেতৃত্বস্থানীয় তীর্থস্থানে রূপান্তরিত হয়।[][]

প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন

সম্পাদনা
 
প্রাচীন সাইটের পাশে আধুনিক খ্রিস্টীয় মঠ।

সাইটটি ১৯০৫ থেকে ১৯০৭ সালের মধ্যে প্রথম খনন করা হয়। এই খননে একটি বৃহদাকৃতির ব্যসিলিকা গির্জা, সংলগ্ন সেইন্টের শবাশেষ গৃহ এবং রোমান স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়[]

পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী খননকাজ চালানো হয় যা ১৯৯৮ সালে শেষ হয়। সাম্প্রতিককালের খননে গরীব তীর্থযাত্রীদের থাকার বৃহৎ স্থান আবিষ্কৃত হয়েছে যেখানে নারী এবং পুরুষের জন্য পৃথক থাকার জায়গা ছিলো। গ্রেট ব্যাসিলিকার একটি চত্বরে সম্ভবত হেগুমেনস অথবা আবোটের গৃহ ছিলো। খননে জেনোডোকেইন আবিষ্কৃত হয়েছে যেখানে তীর্থযাত্রী দের অভ্যর্থনা জানানো হয় যা মূলত একটি কবরখানা ছিলো।

চিত্রশালা

সম্পাদনা

২০০১ সালে স্থানীয় পানির তালিকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনেস্কো সাইটটিকে বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। সাইটটির চারপাশের কাদামাটি নরম হয়ে গিয়ে ভবনের গোড়ার ভিত্তিকে দুর্বল করে ফেলে। ফলশ্রুতিতে কিছু স্থাপনা ঝুঁকে পড়েছে এবং কিছু ধ্বসে গেছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bagnall, Roger S. (২০০১)। "Archaeological Work on Hellenistic and Roman Egypt, 1995-2000"American Journal of Archaeology। Archaeological Institute of America। 105 (2): 227–243। জেস্টোর 507272ডিওআই:10.2307/507272 
  2. Weitzmann, Kurt (১৯৭৭)। "The Late Roman World"। The Metropolitan Museum of Art Bulletin। The Metropolitan Museum of Art। 35 (2): 2–96। জেস্টোর 3259887ডিওআই:10.2307/3259887 
  3. Wilber, Donald N. (১৯৪০)। "The Coptic Frescoes of Saint Menas at Medinet Habu"। The Art Bulletin। College Art Association। 22 (2): 86–103। জেস্টোর 3046689ডিওআই:10.2307/3046689 
  4. UNESCO World Heritage in Danger List

বহি:সংযোগ

সম্পাদনা
  • আবু মিনা, ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারে।