আবাসান আল-কবিরা একটি ফিলিস্তিনি শহর, যা ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা উপত্যকায় খান ইউনিস গভর্নরেট-এ অবস্থিত। এটি খান ইউনিস শহরের সাথে একটি স্থানীয় রাস্তার মাধ্যমে সংযুক্ত, যা বনী সুহেইলা এবং খুজা-এর মতো অন্যান্য গ্রাম পার হয়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবাসান আল-কবিরা এবং পার্শ্ববর্তী গ্রাম আবাসান আল-সগিরা একসাথে গড়ে উঠেছে, ফলে তারা খান ইউনিসকে কেন্দ্র করে একটি বৃহত্তর শহুরে এলাকা গঠন করেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আবাসান আল-কবিরা
'A' প্রকারের পৌরসভা (শহর)
আরবি প্রতিলিপি
 • আরবিعبسان الكبيرة
আবাসান আল-কবিরা
আবাসান আল-কবিরা
আবাসান আল-কবিরা ফিলিস্তিন-এ অবস্থিত
আবাসান আল-কবিরা
আবাসান আল-কবিরা
ফিলিস্তিনে আবাসান আল-কবিরার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩১°১৯′২৪″ উত্তর ৩৪°২০′৪৯″ পূর্ব / ৩১.৩২৩৩৩° উত্তর ৩৪.৩৪৬৯৪° পূর্ব / 31.32333; 34.34694
ফিলিস্তিন গ্রিড০৮৭/০৮১
রাষ্ট্রটেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র
গভর্নরেটখান ইউনিস
সরকার
 • ধরনশহর
 • পৌরসভার প্রধানমুস্তাফা আলশাওয়াফ
জনসংখ্যা (২০১৭)[]
 • মোট২৬,৭৬৭

ইতিহাস

সম্পাদনা

বাইজেন্টাইন শাসনের সময় (৬০৬ খ্রিস্টাব্দের একটি গ্রিক শিলালিপি এখানে পাওয়া গেছে) এখানে বসতি স্থাপিত হয়েছিল এবং সেই সময়ের বেশ কয়েকটি ধ্বংসাবশেষও এখানে বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও এখানে কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান রয়েছে যা ইসলামি যুগ এবং ইসলাম-পূর্ব সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিছু ইতিহাসবিদ আবাসানের লোকজনকে "আবেস পরিবার"-এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আবাসান আল-কবিরায় পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে একটি গ্রিক চিত্র রয়েছে, যা একটি মোজাইকে ফুটে উঠেছে। এই মোজাইকটি প্রায় ৯x৪ মিটার আকারের এবং এতে জ্যামিতিক ও ফুলের নকশা, পাখি, ফলভর্তি কাপ এবং একটি বোনা ব্যান্ডের অংশ প্রদর্শিত হয়েছে।[]

অটোমান যুগ

সম্পাদনা

১৫৯৬ সালের অটোমান কর নিবন্ধনে আবাসানকে গাজার নাহিয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এটি গাজার লিওয়া-এর অংশ ছিল এবং এখানে ২৮টি মুসলিম পরিবার বাস করত, যারা গম, বার্লি, গ্রীষ্মকালীন শস্য, ফল গাছ, খামার রাজস্ব, ছাগল এবং/অথবা মৌমাছির চাকের উপর কর প্রদান করত।[]

১৮৮৬ সালের বর্ণনা অনুযায়ী আবাসান আল-কবিরা একটি ছোট কিন্তু সমৃদ্ধ গ্রাম, যা পাথরে নির্মিত ছিল। গ্রাম এলাকায় চারটি প্রাচীন সাদা মার্বেলের স্তম্ভ আবিষ্কৃত হয়েছিল, যার মধ্যে তিনটি বিদ্যমান ছিল।[]

ব্রিটিশ ম্যান্ডেট যুগ

সম্পাদনা

১৯২২ সালের ব্রিটিশ ম্যান্ডেট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত ফিলিস্তিনের আদমশুমারি অনুসারে, আবাসান (সম্ভবত আবাসান আল-কবিরা এবং আবাসান আল-সগিরা উভয়কেই নির্দেশ করে, যা গাজা সাবডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত) এর জনসংখ্যা ছিল ৬৯৫, যাদের সকলেই ছিল মুসলিম।[] ১৯৩১ সালের আদমশুমারিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১১৪৪ জনে পৌঁছায়, যারা সবাই ছিলেন মুসলিম এবং ১৮৬টি বাড়িতে বসবাস করতেন।[]

১৯৪৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আবাসান নামক দুই অঞ্চলকে তখনও একত্রে গণনা করা হয়েছিল এবং তাদের জনসংখ্যা ছিল ২,২৩০, যারা সবাই ছিলেন মুসলিম।[] সে সময় এ অঞ্চলে ১৬,০৮৪ দুনাম জমি ছিল, যা একটি সরকারি ভূমি ও জনসংখ্যা জরিপ অনুসারে নির্ধারিত হয়েছিল।[] এর মধ্যে ৯২ দুনাম ছিল বাগান এবং সেচযোগ্য জমি, ১৫,৬১৬ দুনাম ব্যবহার করা হতো শস্যের জন্য[] এবং ৬৯ দুনাম ছিল নির্মিত (শহুরে) জমি।[১০]

১৯৪৮ এবং পরবর্তী

সম্পাদনা

মিশরীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন অবস্থায়, মিশর মিশ্র অস্ত্রবিরতি কমিশনের কাছে অভিযোগ জানায় যে, ১৯৫০ সালের ৭ এবং ১৪ অক্টোবর তারিখে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মিশরের নিয়ন্ত্রণাধীন গাজা অঞ্চলের আবাসান আল-কবিরা এবং বেইত হানুন-এর আরব গ্রামগুলিতে শেল এবং মেশিনগান দিয়ে হামলা চালায়। এই আক্রমণে সাতজন নিহত এবং বিশজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়।[১১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. প্রাথমিক ফলাফল: জনসংখ্যা, গৃহ এবং প্রতিষ্ঠান গণনা, ২০১৭ (পিডিএফ)ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (PCBS) (প্রতিবেদন)। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। ফেব্রুয়ারি ২০১৮। পৃষ্ঠা ৬৪–৮২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২৩ 
  2. "XXXIX. আবাসান আল-কাবির", Volume 3 South Coast: 2161-2648 (ইংরেজি ভাষায়), ডি গ্রুইটার, পৃষ্ঠা ৫৭১–৫৭২, ১৪ জুলাই ২০১৪, আইএসবিএন 978-3-11-033767-9, ডিওআই:10.1515/9783110337679.571, সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  3. Hütteroth and Abdulfattah, ১৯৭৭, পৃ. ১৫০
  4. Schumacher, 1886, pp. 191-192
  5. Barron, 1923, Table V, Sub-district of Gaza, p. 8
  6. Mills, 1932, p. 2
  7. Government of Palestine, Department of Statistics, 1945, p. 31 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ এপ্রিল ২০২০ তারিখে
  8. Government of Palestine, Department of Statistics. Village Statistics, April 1945. Quoted in Hadawi, 1970, p. 45 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে
  9. Government of Palestine, Department of Statistics. Village Statistics, April 1945. Quoted in Hadawi, 1970, p. 86 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে
  10. Government of Palestine, Department of Statistics. Village Statistics, April 1945. Quoted in Hadawi, 1970, p. 136 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে
  11. UN Doc S/1459[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০ তারিখের মিশ্র অস্ত্রবিরতি কমিশনের প্রতিবেদন