আব্দুল বাতেন জৌনপুরী
আব্দুল বাতেন জৌনপুরী সিদ্দিকী (উর্দু: عبد الباطن جونپوری صدّیقی; ১৯০০-১৯৭৩) ছিলেন একজন স্বনামধন্য ভারতীয় মুসলিম আলেম, লেখক ও শিক্ষাবিদ।[১] তিনি বাংলা-কেন্দ্রিক তাইয়ুনী আন্দোলনের অনেক নেতাদের জীবনী রচনা করেছেন।[২][৩] এছারাও তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁয়ে কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে বাতেনিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করে।[৪]
আব্দুল বাতেন জৌনপুরী | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯০০ |
মৃত্যু | ১৯৭৩ (বয়স ৭২–৭৩) |
সমাধিস্থল | মাজার রোড, গাবতলী, ঢাকা |
ধর্ম | ইসলাম |
পিতামাতা |
|
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | তাইয়ুনী |
কাজ | আলেম, লেখক |
আত্মীয় | কারামত আলী জৌনপুরী (দাদা) হাফেজ আহমদ জৌনপুরী (চাচা) রশীদ আহমদ জৌনপুরী (ফুফুতো ভাই) আব্দুর রব জৌনপুরী (চাচাতো ভাই) |
মুসলিম নেতা | |
শিক্ষক | আব্দুল আউয়াল জৌনপুরী |
যার দ্বারা প্রভাবিত |
প্রারম্ভিক জীবন এবং পরিবার
সম্পাদনাআব্দুল বাতেন সিদ্দিকী ১৯০০ খ্রীষ্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশে অবস্থিত জৌনপুরের মোল্লাটোলায় আব্দুল আউয়াল জৌনপুরী এবং ফকিরা বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। এই পরিবারের পূর্বপুরুষ খলিফা আবু বকর বলে মনে করা হয় এবং পরিবারটি প্রায়শই বাংলা ও আসামে ইসলামী দাওয়াত দিতেন। তার বাবা ইসলামী সাহিত্যের ১২১টি কেতাবের অবদান রেখেছেন এবং আরমানিটোলার ঐতিহ্যবাহী হাম্মাদিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সিদ্দিকীর দাদা কারামত আলী জৌনপুরী বাংলার মুসলমানদের সংস্কারে অবদান রেখেছিলেন।[৫]
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনাজৌনপুরীর শিক্ষা তার নিজ শহরে শুরু হয়, তারপর ভারতজুড়ে বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠানে তিনি অধ্যয়ন করেন। অধ্যয়ন শেষ করার পর, জৌনপুরী বাংলায় বসতি স্থাপন করেন, যা তার দাদা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তাইয়ুনী আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল যেখানে তিনি প্রচুর অনুসারী অর্জন করেছিলেন। তিনি সক্রিয়ভাবে ধর্ম, শিরক ও বিদআতের বিরুদ্ধে প্রচার করেন।[৬]
জৌনপুরী উর্দুতে অসংখ্য বই লিখেছেন বলে জানা যায়,[৭] নিন্মে তার লেখা কয়েকটি বইয়ের নাম উল্লেখ করা হল:
- সিরাত-ই-মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (আসরার-ই-করীমী প্রেস, এলাহাবাদ, ১৯৪৯)
- সিরাত-ই-মাওলানা আব্দুল আউয়াল জৌনপুরী (মাওলানা আবুল বশর দ্বারা সহ-লেখক, আসরার-ই-করীমী প্রেস, ১৯৫০)
- সীরাত-ই-মাওলানা হাফেজ আহমদ জৌনপুরী
- উলূম-ই-আরব গইর মুসলিমোঁ কি নজর মেঁ (আঞ্জুমান-ই-তরক্কী-ই-উর্দূর্দু, উর্দুবাজার, দিল্লি, ১৯৫৪)
- ইসলাম তলওয়ার সে নহীঁ ফয়লা (কুতুবখানা-ই-আঞ্জুমান-ই-তরক্কী-ই-উর্দূ, দিল্লি, ১৯৫৫)
- কশকোল-ই-বাতেন (কুতুবখানা-ই-আঞ্জুমান-ই-তরক্কী-ই-উর্দূ, দিল্লি, ১৯৬১)
- এরশাদুস সালেকীন (কুতুবখানা-ই-আঞ্জুমান-ই-তরক্কী-ই-উর্দূ, দিল্লি, ১৯৬২)
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৭৩ সালে আব্দুল বাতেন জৌনপুরী বাংলাদেশের ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকায় অবস্থিত গাবতলীর মাজার রোডে দাফন করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ পূর্বাচল। Information and Radio Ministry। ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 47, 50।
- ↑ National Reconstruction Bureau (১৯৬৫)। তোমাদের স্মরণ করি। National Reconstruction Bureau। পৃষ্ঠা 46।
- ↑ আব্দুল্লাহ, মুহাম্মদ (১৯৮৬)। বাংলাদেশের খ্যাতনামা আরবীবিদ, ১৮০১–১৯৭১। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা 253।
- ↑ হক, সাজেদুল; হক, শামসুল (১৯৭৭)। গফরগাঁয়ের কথা ও কাহিনী। এম. এ. মোমেন। পৃষ্ঠা ১২, ১৯৮।
- ↑ মহম্মদ ইসমাঈল (২০১০)। Hagiology of Sufi Saints and the Spread of Islam in South Asia। জ্ঞানদা প্রকাশন। পৃষ্ঠা 172। আইএসবিএন 9788171393756।
- ↑ আনসারি, আবদুল লাইস (১৯৬২)। মোজেযাত ও কারামাত। ইসলামিয়া লাইব্রেরি।
- ↑ تاريخ ادبيات مسلمانان پاکستان و هند (উর্দু ভাষায়)। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭১।