আন্তর্জাতিক ভলিবল সংস্থা
আন্তর্জাতিক ভলিবল সংস্থা বা এফআইভিবি হলো বীচ ভলিবলসহ ইনডোর ভলিবল এবং ঘাসপূর্ণ মাঠে ভলিবল খেলার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে পরিচিত।[৩] সংস্থার সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের লৌজানে অবস্থিত। বর্তমানে এর সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ব্রাজিলের আরি গ্রাচা।[৪]
সংক্ষেপে | FIVB |
---|---|
প্রতিষ্ঠাকাল | ২০ এপ্রিল ১৯৪৭ |
প্রতিষ্ঠাস্থান | প্যারিস, ফ্রান্স |
ধরন | ক্রীড়া সংস্থা |
সদরদপ্তর | লোজান, সুইজারল্যান্ড |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বিশ্বব্যাপী |
সদস্যপদ | ২২২টি জাতীয় ভলিবল সংস্থা |
দাপ্তরিক ভাষা | ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, পর্তুগিজ, রুশ[১] |
সভাপতি | আরি ডা সিলভা গ্রাচা ফিলহো |
সহায়করা | |
সম্পৃক্ত সংগঠন | আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি |
আয় (২০১৭) | $৬৫.৩৪ মিলিয়ন[২] |
ব্যয় (২০১৭) | $৬০.৫৪ মিলিয়ন[২] |
ওয়েবসাইট | FIVB.com |
ইতিহাস
সম্পাদনাভলিবলের ১০০ বছরের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল এপ্রিল, ১৯৪৭ সালে সংস্থাটির গঠন। বেলজিয়াম, ব্রাজিল, চেকস্লোভাকিয়া, মিশর, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, হাঙ্গেরী, ইতালি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, উরুগুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুগোস্লাভিয়া - এ ১৪ দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক ভলিবল সংস্থা ফ্রান্সের প্যারিসে ফরাসী ভলিবল সংস্থার সভাপতি পল লিবঁদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। এর সদর দফতর প্যারিসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘ ৩৭ বছর এর সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে ড. রুবেন একোস্তা তাঁর কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।
এফআইভিবি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ভলিবল আন্তর্জাতিক অ্যামেচার হ্যান্ডবল ফেডারেশনের অংশ ছিল। এফআইভিবি ১৯৪৭-এর এপ্রিল মাসে ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে, কিছু ইউরোপীয় জাতীয় ফেডারেশন ভলিবল খেলার জন্য একটি আন্তর্জাতিক গভর্নিং বডি তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে শুরু করে। প্রাথমিক আলোচনা শেষ পর্যন্ত ১৯৪৭ সালে একটি সাংবিধানিক কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যায়। পাঁচটি ভিন্ন মহাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী চৌদ্দটি জাতীয় ফেডারেশন সেই সভায় অংশ নিয়েছিল যেখানে, ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে, সত্তাটি আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়েছিল, যার প্রথম সভাপতি ছিলেন ফরাসি পল লিবঁ। প্রথম এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ ১৯৫৫ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এই চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত ফাইনালে জাপানকে হারিয়েছিল।
১৯৪৭ সালের কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য দুই বছর পরে প্রথম আন্তর্জাতিক বড় ভলিবল ইভেন্ট, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছিল। ১৯৫২ সালে, টুর্নামেন্টের একটি মহিলা সংস্করণও চালু করা হয়েছিল।
১৯৬৪ সালে, আইওসি অলিম্পিক প্রোগ্রামে ভলিবলের সংযোজন অনুমোদন করে। এই সময়ের মধ্যে, এফআইভিবি এর সাথে যুক্ত জাতীয় ফেডারেশনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯। পরে সেই বছর (১৯৬৯), একটি নতুন আন্তর্জাতিক ইভেন্ট, বিশ্বকাপ প্রবর্তন করা হয়। এটি ১৯৯১ সালে অলিম্পিক গেমসের জন্য একটি বাছাইপর্বের ইভেন্টে পরিণত হবে।
অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্তি
সম্পাদনাআকর্ষণীয় ও মর্যাদাপূর্ণ খেলা হিসেবে পরীক্ষিত হবার পর ১৯৫৯ সালে মিউনিখে অনুষ্ঠিত আইওসি'র সভায় অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় ভলিবল ক্রীড়াকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। ১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো খেলা হয়। এতে পুরুষ বিভাগে ১০টি এবং মহিলা বিভাগে ৬টি দেশ অংশ নেয়। দলগত ক্রীড়া হিসেবে ভলিবলের পুরুষ বিভাগে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মহিলা বিভাগে জাপান স্বর্ণপদক লাভ করে। কাকতালীয়ভাবে অলিম্পিকের পর জাপানে ভলিবল খেলায় প্রাণচাঞ্চল্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
৩২ বছর পর ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠা বীচ ভলিবলের অন্তর্ভুক্তি ঘটে। উল্লেখ্য যে, বীচ ভলিবল ইনডোর ভলিবলের অন্যতম সফল দ্বিতীয় সারির খেলা।
ফিভবি হিরোজ
সম্পাদনাআনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় ফিভবি হিরোজ ব্যবহার করা হচ্ছে। এ প্রচারণার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে খেলোয়াড়দের মধ্যে সচেতনতা, উজ্জ্বীবিতকরণ এবং বৈশ্বিকভাবে ভলিবল খেলার গুরুত্ব জনসমক্ষে তুলে ধরা। ফিভবি হিরোজে ১৯ দেশের ৩৩ জন অসাধারণ ভলিবল এবং ২৯ জন বীচ ভলিবল খেলোয়াড়কে সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে।
অলিম্পিক সংবাদে বলা হয় যে, সম্প্রতি রোমে ফিভবি হিরোজ উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রচারণার লক্ষ্যে বিলবোর্ড, পোস্টার এবং শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদদের প্রতিকৃতি রয়েছে।
প্রতিযোগিতা সমূহ
সম্পাদনা- অলিম্পিক: ১৯৬৪ থেকে, চতুর্বার্ষিক
- পুরুষদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ: ১৯৪৯ থেকে, চতুর্বার্ষিক
- মহিলাদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ: ১৯৫২ থেকে, দ্বিবার্ষিক
- পুরুষদের বিশ্বকাপ: ১৯৬৫ থেকে, চতুর্বার্ষিক
- মহিলাদের বিশ্বকাপ: ১৯৭৩ থেকে, চতুর্বার্ষিক
- পুরুষদের নেশন্স লিগ: ২০১৮ থেকে, বার্ষিক
- মহিলাদের নেশন্স লিগ: ২০১৮ থেকে, বার্ষিক
- পুরুষদের চ্যালেঞ্জার কাপ: ২০১৮ থেকে, বার্ষিক
- মহিলাদের চ্যালেঞ্জার কাপ: ২০১৮ থেকে, বার্ষিক
- পুরুষদের বিশ্ব ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ: ১৯৮৯ থেকে, বার্ষিক
- মহিলাদের বিশ্ব ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ: ১৯৯১ থেকে, বার্ষিক
সভাপতির তালিকা
সম্পাদনা- পল লিবঁ (১৯৪৭–১৯৮৪)
- রুবেন আকোস্তা হার্নান্দেজ (১৯৮৪–২০০৮)
- উই জিঝং (২০০৮–২০১২)
- আরি গ্রাচা (২০১২–বর্তমান)
মহাদেশীয় কনফেডারেশন
সম্পাদনার্যাঙ্কিং
সম্পাদনা
পুরুষসম্পাদনাবর্তমানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ২০টি জাতীয় পুরুষ ভলিবল দল:[৫]
|
|
নারীসম্পাদনাবর্তমানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ২০টি জাতীয় নারী ভলিবল দল:[৭]
|
পৃষ্ঠপোষক
সম্পাদনাপৃষ্ঠপোষকদের তালিকা |
---|
|
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "FIVB Constitution (Edition 2014)" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। Fédération Internationale de Volleyball। ৯ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ ক খ Perelman, Rich (২৪ মে ২০২০)। "Who's in the money? EXCLUSIVE analysis of our survey of International Federation finances"। The Sports Examiner। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০২২।
- ↑ "The FIVB". Retrieved 2012-03-09.
- ↑ "FIVB History". Retrieved 2012-03-09.
- ↑ "FIVB Rankings – Men's volleyball"। FIVB। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "The FIVB World Ranking"। এফআইভিবি। ১৯ আগস্ট ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০২৩।
- ↑ "FIVB Rankings – Women's volleyball"। FIVB। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "The FIVB Women's World Ranking"। এফআইভিবি। ১৮ অক্টোবর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০২৩।