আনন্দ বাগচী
আনন্দ বাগচী ( ১ জুলাই ১৯৩২ - ৯ জুন ২০১২) ছিলেন ভারতীয় বাঙালি কবি ও উপন্যাসিক।[১]
আনন্দ বাগচী | |
---|---|
জন্ম | পাবনা ব্রিটিশ ভারত (অধুনা বাংলাদেশ) | ১৫ মে ১৯৩২
মৃত্যু | ৯ জুন ২০১২ কল্যাণী, নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ ভারত | (বয়স ৭৯)
ছদ্মনাম | হর্ষবর্ধন, ত্রিলোচন কলমচি |
পেশা | কবি ও ঔপন্যাসিক |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | স্কটিশ চার্চ কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
দাম্পত্যসঙ্গী | মীরা বাগচী (বি.১৯৭5) |
সন্তান | সুনন্দ বাগচী (পুত্র) |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআনন্দ বাগচীর জন্ম অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার স্বাগতা গ্রামে। পিতা শ্রীচন্দ্র বাগচী এবং মাতা সজলবালা দেবী। পাঁচ ভাই বোনের সকলের বড় ছিলেন তিনি।[২] তার উচ্চ শিক্ষা কলকাতায়। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়ার সময় তার সহপাঠী ছিলেন কবি দীপক মজুমদার।[৩] পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম.এ পাশ করেন।
কর্মজীবন ও সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাএম.এ পাশের পর তিনি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে কর্মজীবন শুরু করেন বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজে| [৩] বাঁকুড়ার এই কলেজে ষোল বৎসর অধ্যাপনা করার পর তিনি সাগরময় ঘোষের আহ্বানে দেশ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন এবং কলকাতায় চলে আসেন। সাহিত্যজীবনের শুরুতে তিনি হর্ষবর্ধন এবং ত্রিলোচন কলমচির ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন।
উনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে কবি হিসাবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করলেও উপন্যাসিক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তরুণতম কবিদের মুখপত্র কবিতা পত্রিকা কৃত্তিবাস-এর প্রথম সংখ্যায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, দীপক মজুমদার এবং তিনি সম্পাদক ছিলেন। এই পত্রিকাতেই তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ স্বগত সন্ধ্যা-র কবিতা গুলি প্রকাশিত হয় এবং কবি হিসাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।[৩] কৃত্তিবাস পত্রিকার মাধ্যমে তিনি শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় প্রমুখের সঙ্গে আধুনিক কবিতা আন্দোলনে নিবিড়ভাবে যুক্ত হন। এছাড়া তিনি শেষে সেতু, পারাবত, বৃশ্চিক প্রভৃতি পত্রিকা বিভিন্ন সময়ে সম্পাদনা করেছেন। [৪] কবিতা উপন্যাস ছাড়াও তিনি কিশোরদের উপন্যাস, ছোটগল্প, রম্যরচনা ইত্যাদি রচনা করেছেন। প্রকাশিত রচনা ও গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল -
সাহিত্যকীর্তি
সম্পাদনা- কাব্যগ্রন্থ-
- উপন্যাস ও অন্যান্য রচনা-
- চকখড়ি (১৯৬৪)
- আক্ষেপানুরাগ [৩]
- স্বকালপুরুষ (১৯৯২)
- ফেরা না ফেরা
- চাঁদ ডুবে গেল
- পরমায়ু
- রাজযোটক
- এই জন্ম অন্য জীবন
- ছায়ার পাখি
- সাহিত্য প্রসঙ্গে প্রভৃতি। [২]
কবির স্বকালপুরুষ গ্রন্থটি হল কাব্যোপন্যাস এবং এটিই ছিল বাংলা সাহিত্যে সম্ভবত প্রথম প্রচেষ্টা। [১]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাকবি আনন্দ বাগচী ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি মীরা বাগচীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র পুত্র সুনন্দ বাগচী।
জীবনাবসান
সম্পাদনাকবি আনন্দ বাগচী জীবনের শেষ দিকে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হালিশহরের বাড়িতে আর্থিক অনটনের মধ্যে থাকতেন। শেষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন কল্যানীর এক বেসরকারি নার্সিংহোমে পরলোক গমন করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ শিশিরকুমার দাশ (২০১৯)। সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী। সাহিত্য সংসদ, কলকাতা। পৃষ্ঠা ২১। আইএসবিএন 978-81-7955-007-9।
- ↑ ক খ গ "আনন্দ বাগচী (১ম পর্ব)"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "কবি আনন্দ বাগচী স্বকীয় পথে হেঁটেছেন: স্বপন কুমার মণ্ডল"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৭।
- ↑ "আনন্দ বাগচী:'শেষ ইস্টিশান ছুঁয়ে যায়'"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৭।