আজম আলী
আজম আলী একজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী।
আজম আলী | |
---|---|
জন্ম | এপ্রিলে, ১৯৬৭ সেতাবগঞ্জ, দিনাজপুর |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | রসায়ন বিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ইউনিভার্সিটি অব ওটাগো |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
সম্পাদনাআজম আলী ১৯৬৭ সালের এপ্রিলে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের (বর্তমান নাম সেতাবগঞ্জ) বন্ধুগাঁয়ে আজম আলী জন্মগ্রহণ করেন।[১]। তার বাবা আবদুল জলিল চৌধুরী পেশায় ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। মা শরিফা বেগম গৃহিণী। সেতাবগঞ্জ পাইলট হাই স্কুল থেকে ১৯৮২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগ নিয়ে মাধ্যমিক পাস করেছেন আজম আলী। পরে দিনাজপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে ব্যাচেলর্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন যথাক্রমে ১৯৮৮/১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালে।[১] মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সেইনস মালয়েশিয়া থেকে পলিমার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ন্যানোটেকনোলজি বিষয় নিয়ে পিএইচডি করেন ২০০০ সালে। [২][৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাবর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর ডানেডিন ক্যাম্পাসে কাজ করছেন ড. আজম। এর আগে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান গবেষণামূলক সরকারি প্রতিষ্ঠান ক্রাউন রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (এজি রিসার্চ) কাজ করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর। এজি রিসার্চ ছাড়ার আগে তিনি জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে বায়োম্যাটারিয়াল এবং ন্যানোটেকনোলজি বিভাগের বিজ্ঞানী দলের প্রধান পদে দায়িত্বরত ছিলেন। ২০০৩ থেকে ২০০৭-এর জানুয়ারি পর্যন্ত উল রিসার্চ অর্গানাইজেশনে জৈবরসায়নের বায়োম্যাটারিয়ালস নিয়ে গবেষণা দলের প্রধান হয়ে কাজ করেছেন। পিএইচডি শেষ করেই ২০০০ সালে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো হিসেবে যোগ দেন পোহাং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। একই বছরের অক্টোবরে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনায় রসায়ন বিভাগের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে গবেষণা শুরু করেন এবং ২০০৩-এর জুলাই পর্যন্ত কাজ করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ন্যানোফটোরেজিস্ট সিনথেসিস, ফটোলিথোগ্রাফি, পলিমার বা বায়োপলিমেরিক বায়োম্যাটারিয়ালসের উন্নয়ন, টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটারিয়ালস এবং বায়োম্যাটারিয়ালের চরিত্র নির্ণয় এবং এগুলোর নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জটিল সব গবেষণা করেন। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার পাম অয়েল বোর্ড, জাপানের জায়েরি (জেএইআরআই), দক্ষিণ কোরিয়ার পোসটেকে (পিওএসটিইসিএইচ) কাজ করেছেন এই বিজ্ঞানী। [১][২][৩]
গবেষণা
সম্পাদনাআজম আলী উলের প্রোটিন থেকে এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে অগ্নিদগ্ধ ও রাসায়নিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রোগীর ত্বক ও মাংশপেশীর আরোগ্য সম্ভব। তিনি বলেন,[১]
“ | আগুনে মানুষের শরীরের ত্বক ও মাংস উভয়ই ঝলসে যায়। বাজারে যে ওষুধগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো শুধু ক্ষত স্থানের ত্বকই তৈরি করে। আর আমি কাজ করেছি উল নিয়ে। উলে কেরাটিন নামের প্রোটিন থাকে। এই প্রোটিনটা মানুষের নখ ও চুলেও পাওয়া যায়। আমি নিউজিল্যান্ডে পাঁচ বছর ধরে এটা নিয়ে কাজ করেছি। এই কেরাটিনকে রি-ইঞ্জিনিয়ারিং করে আমি কেরাজেল, কেরাডাম ও কেরাফোম তৈরি করেছি। ক্ষত স্থানে এগুলো ব্যবহার করলে শুধু ত্বকই নয়, মাংসপেশির টিস্যুও তৈরি করবে। তা ছাড়া তুলনামূলক ৪০ গুণ দ্রুত কাজ করবে এটা। | ” |
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা২০১০ সালের ২৪ আগস্ট নিউজিল্যান্ডের এজি রিসার্চে কর্মরত থাকাকালীন বিখ্যাত 'বেয়ার ইনোভেটর্স' পুরস্কারে ভূষিত হন ড. আজম। ২০০৩ সালে এনসিবিসি (ইউএস) রিসার্চ ফেলোশিপ, ২০০১ সালে ডিওডি (ইউএস) রিসার্চ ফেলোশিপ, ২০০০ সালে ব্রেইন কোরিয়া কে-২০ ফেলোশিপ, ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ান প্রাইমারি ইন্ডাস্ট্রি সিলভার মেডেল, ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড ফেলোশিপ এবং ১৯৮৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর চ্যান্সেলর স্কলারশিপের অধিকারী তিনি। [১][২][৩]
সদস্যপদ
সম্পাদনা- অস্ট্রেলিয়ান সোসাইটি ফর বায়োম্যাটারিয়ালস অ্যান্ড টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং
- নিউজিল্যান্ড কন্ট্রোলড রিলিজ সোসাইটি
- ক্যান্টাবুরি মেডিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি
- অস্ট্রেলিয়ান পলিমার সোসাইটি
- আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি [৪]
প্যাটেন্ট
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ গ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ http://www.kalerkantho.com/print_edition/index.php?view=details&type=gold&data=news&pub_no=1396&cat_id=1&menu_id=135&news_type_id=1&index=0&archiev=yes&arch_date=19-10-2013#.VMPZDyx0zF8[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ http://www.kalerkantho.com/print_edition/index.php?view=details&type=gold&data=news&pub_no=1396&cat_id=1&menu_id=135&news_type_id=1&index=0&archiev=yes&arch_date=19-10-2013#.VMPghyx0zF9[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১১।