আগুনের পরশমণি (চলচ্চিত্র)
আগুনের পরশমণি ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। এটি তার নিজের লেখা আগুনের পরশমণি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মাণ করেন এবং এটিই তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছেন বিপাশা হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত, ডলি জহুর সহ আরো অনেকে। বাংলাদেশে সরকারী চলচ্চিত্র অনুদানে নির্মিত আগুনের পরশমণি চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ আটটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে।[১]
আগুনের পরশমণি | |
---|---|
পরিচালক | হুমায়ূন আহমেদ |
প্রযোজক | নুহাশ চলচ্চিত্র |
রচয়িতা | হুমায়ূন আহমেদ |
শ্রেষ্ঠাংশে | বিপাশা হায়াত আসাদুজ্জামান নূর আবুল হায়াত ডলি জহুর |
সুরকার | সত্য সাহা |
চিত্রগ্রাহক | আখতার হোসেন |
সম্পাদক | আতিকুর রহমান মল্লিক |
পরিবেশক | নুহাশ চলচ্চিত্র |
মুক্তি | ১৯৯৪ |
স্থিতিকাল | ১২৩ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
কাহিনি সংক্ষেপ
সম্পাদনা১৯৭১ সালের মে মাস। অবরুদ্ধ ঢাকায় ভীষণ নিস্তব্ধ রাতের বুক চিরে ছুটছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ির বহর। তীব্র হতাশা, তীব্র ভয়ে কাঁপছে বাংলাদেশের মানুষ। অবরুদ্ধ ঢাকার একটি পরিবারের কর্তা মতিন সাহেব ট্রানজিস্টার শোনার চেষ্টা করছেন মৃদু ভলিউমে। ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শোনার চেষ্টা করছেন। নব ঘোরাচ্ছেন ট্রানজিস্টারের। হঠাৎ শুনতে পেলেন বজ্রকণ্ঠের অংশ বিশেষ : ‘মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি / রক্ত আরও দিবঃ / এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম / এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিছুই ভালো লাগেনা মতিন সাহেবের বড় মেয়ে রাত্রির। তাদের পরিবারে কয়েকদিন পর হাজির হন মতিন সাহেবের বন্ধুর ছেলে বদি। বদি এবং তার সহযোদ্ধারা একের পর এক অভিযান করে সফলতা লাভ করে। কিন্তু এক এক করে তারা পাক বাহিনীর হাতে বন্দি হয়। একটি অপারেশনে গুলিবিদ্ধ হয় বদি। তাকে মতিন সাহেবের বাড়িতে রেখে ফেরার পথে ধরা পড়ে গেরিলাযোদ্ধা রাশেদুল করিম। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় থু থু ছিটিয়েছেন পাকিস্তানি মেজরের মুখে। হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে তার। তবুও তিনি মাথা নোয়াননি। কার্ফ্যু শুরু হওয়ায় তাকে সারানোর মত ডাক্তার, ঔষধের জন্য সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তিনি কি পারবেন সকাল পর্যন্ত বাঁচতে? তিনি কি আরেকটি ভোরের সূর্যালোক দেখতে পাবেন? এভাবেই শেষ হয় চলচ্চিত্রের কাহিনি।
চরিত্রসমূহ
সম্পাদনা- বিপাশা হায়াত - রাত্রি
- আসাদুজ্জামান নূর - বদিউল আলম
- আবুল হায়াত - মতিন সাহেব
- ডলি জহুর - সুরমা
- শিলা আহমেদ - অপালা
- দিলারা জামান - বদি'র মা
- মোজাম্মেল হোসেন - বদির মামা (শরীফ সাহেব)
- সালেহ আহমেদ - চায়ের দোকানদার (ইদ্রিস মিয়া)
- হোসনে আরা পুতুল - বিন্তি
- ফজলুল কবীর তুহিন - রাশেদুল করিম
- লুৎফর রহমান জর্জ - জর্জ
সঙ্গীত
সম্পাদনাআগুনের পরশমণি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সত্য সাহা। গানের কথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও হাছন রাজার গান থেকে নেয়া। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন শাম্মী আখতার, মিতা হক।
পুরস্কার
সম্পাদনা- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - হুমায়ূন আহমেদ (প্রযোজক)
- শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - বিপাশা হায়াত
- শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী - শিলা আহমেদ
- শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক - সত্য সাহা
- শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার - হুমায়ূন আহমেদ
- শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা - হুমায়ূন আহমেদ
- শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক - মফিজুল হক
- শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী (বিশেষ শাখা) - হোসনে আরা পুতুল
চলচ্চিত্র উৎসব
সম্পাদনা- বাংলাদেশী চলচ্চিত্র উৎসব, কলকাতা - ২০১১[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "চলে গেলেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমাযূন আহমেদ"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ২০ জুলাই ২০১২। ২০১৪-০৪-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৬।
- ↑ "কলকাতায় প্রথম বাংলাদেশী চলচ্চিত্র উৎসব"। ডয়েচে ভেলে। ২৭ নভেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আগুনের পরশমণি (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে আগুনের পরশমণি
- রটেন টম্যাটোসে আগুনের পরশমণি (ইংরেজি)