আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচার
আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচার (সংক্ষেপে একেটিসি) হলো আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (একেডিএন) অন্তর্ভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। চতুর্থ আগা খান উন্নয়নশীল বিশ্ব, বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকার মানুষের কল্যাণ ও প্রত্যাশার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিপূরক উদ্দেশ্য পূরণে একেডিএনের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলেন। বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে শারীরিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনরুজ্জীবিতকরণের লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে।[১] আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচার ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বেসরকারি অসাম্প্রদায়িক মানবহিতৈষী ফাউন্ডেশন হিসেবে নিবন্ধিত হয়।
কার্যক্রম
সম্পাদনা- স্থাপত্যের জন্য আগা খান পুরস্কার (আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার, একেএএ) হলো মুসলিম বিশ্বে স্থাপত্যে নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য প্রদত্ত একটি পুরস্কার।
- আগা খান ঐতিহাসিক নগর কার্যক্রম (হিস্টোরিক সিটিজ প্রোগ্রাম, এইচসিপি) মুসলিম বিশ্বের ঐতিহাসিক নগরগুলোর পুনরুজ্জীবনের কাজে সহায়তা করে।
- আগা খান মিউজিক ইনিশিয়েটিভ (একেএমআই) মধ্য এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গীতের মৌখিক প্রথার সংরক্ষণ ও বিস্তারে অর্থসংস্থান ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে।
- ইসলামি স্থাপত্যের জন্য আগা খান কর্মসূচি (আগা খান প্রোগ্রাম ফর ইসলামিক আর্কিটেকচার, একেপিআইএ) হলো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ইসলামি স্থাপত্যের ইতিহাস, তত্ত্ব ও গবেষণার জন্য ট্রাস্টের অর্থপ্রাপ্ত গবেষণা কেন্দ্র।
- আর্কনেট হলো মুসলিম বিশ্বে স্থাপত্য, পৌর নকশা, নগর পরিকল্পনা ও অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয়ের একটি ওয়েবসাইট। এটি এমআইটির সাথে যৌথ সহযোগিতায় নির্মিত হয়।
- মিউজিয়ামস অ্যান্ড এগজিবিশনস জাদুঘর ব্যবস্থাপনা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করে। কানাডার টরন্টো আগা খান জাদুঘর এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।[২] বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সংগৃহীত নিদর্শন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয় এবং মালি জাতীয় জাদুঘর প্রভৃতি উন্নয়নশীল বিশ্বের বিভিন্ন জাদুঘরে অর্থসহায়তা করে।[৩]
ঐতিহাসিক সংরক্ষণ
সম্পাদনাট্রাস্ট বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায়, প্রায় ৩৫০টি ঐতিহাসিক স্থাপনা সংস্কার ও পুনরুদ্ধারকাজ করেছে। ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ট্রাস্টকে মোট ১৩টি পুরস্কারে ভূষিত করেছে।[৪]
- পাঞ্জাব সরকারের সাথে যৌথ সহযোগিতায় অন্দরুন লাহোর শহরের সংস্কার[৫]
- হুমায়ুনের সমাধিসৌধ ও উদ্যানের ঝরনার সংস্কারকাজ, ২০০৭-২০১৩[৬]
- নিয়াদিল্লির সুন্দর নার্সারির সংস্কারকাজ, ২০০৭–২০১৯।[৭] প্রায় ৯০ একর এলাকা জুড়ে ১৫টি ঐতহাসিক স্থাপনা এবং প্রায় তিন শতাধিক প্রজাতির বৃক্ষ নিয়ে এটি দিল্লির প্রথম আর্বোরেটাম হিসেবে গড়ে ওঠে। ১৬শ শতাব্দীর উদ্যানের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রায় দশ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পে যৌথভাবে সহযোগিতা করে ভারত সরকারের দিল্লি পুরসভা, কেন্দ্রীয় লোকনির্মাণ বিভাগ ও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।[৮][৯][১০]
- ঈসা খাঁর সমাধিসৌধের সংস্কার, ২০১১–২০১৫
- তেলেঙ্গানা সরকারের রাজ্য পুরাতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগের সহায়তায় হায়দ্রাবাদের কুতুব শাহির সমাধিসৌধের সংস্কার[১১]
- হুমায়ুনের সমাধির নিকটে সব্জ বুর্জের সংস্কার, ২০১৯–বর্তমান
- লাহোর দুর্গের চিত্রিত দেয়ালের সংস্কার, ২০১৭–২০১৯[১২]
- ইউনেস্কো কর্তৃক প্রদত্ত টেকসই উন্নয়নের জন্য বিশেষ স্বীকৃতি ২০২০[১৩]
- ইউনেস্কো ২০২০ অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স[১৩]
- আলেপ্পোর পুরাতন শহরের কেন্দ্রীয় চকের সংস্কার। এই কাজের জন্য ট্রাস্ট [[ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব দ্য প্রিজারভেশন অ্যান্ড রিস্টোরেশন অব কালচারাল প্রপার্টি|আইসিসিআরওএম]]-শারজাহ পুরস্কার (আরব অঞ্চলে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি) লাভ করে।[১৪]
- ইন্টারগ্লোব ফাউন্ডেশন ও ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সাথে আবদুল রহিম খানে খানানের সমাধিসৌধের সংস্কার, ২০১৪–২০২০[১৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ এল-আরেফ, নেভাইন (১৩ অক্টোবর ২০১৬)। "Aga Khan memorandum signed" (ইংরেজি ভাষায়)। আল-আহরাম উইকলি। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Aga Khan to Establish Major Academic and Cultural Center and Museum in Canada" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০০৬।
- ↑ "The Aga Khan Trust for Culture and the National Museum of Mali sign a Collaboration Agreement" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। Musée National du Mali। ২০০৬-০৬-০৭। ২০০৯-১২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-২২।
- ↑ "Historic Cities | Aga Khan Development Network" (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ ""Shahi Guzargah" inside the Walled City of Lahore | Pakistan Today"। পাকিস্তান টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Humayun's Tomb conservation completed | Aga Khan Development Network" (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "Sunder Nursery: Before and after | Aga Khan Development Network" (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "Things To Do in Delhi | Sunder Nursery Near Humayun's Tomb"। আউটলুক ট্রাভেলার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Could this be Delhi's answer to Central Park?"। কন্ডে নাস্ত ট্রাভেলার ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ শ্রীবৎসন, অজয় (২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "Delhi's own 'central park' opens today"। লাইভমিন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ নানিসেট্টি, সেরিশ (১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "Restoring the charm of Qutb Shahi tombs"। দ্য হিন্দু (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ https://www.akdn.org/press-release/prime-minister-imran-khan-inaugurates-400-year-old-historic-%E2%80%9Cpicture-wall%E2%80%9D-lahore-fort
- ↑ ক খ "The Aga Khan Trust for Culture receives two awards from UNESCO for sustainable development and excellence | Tajikistan News ASIA-Plus"। এশিয়াপ্লাস্টিজে (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Sharjah awards heritage conservation award to Aga Khan Trust for Culture"। গালফ নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Six-year Project: Behind Rahim's tomb restoration — 1,75,000 man-days and 3,000 craftsmen"। দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিমিডিয়া কমন্সে আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচার সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- "Aga Khan Trust for Culture (website)" (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০০৬।
- "Aga Khan Trust for Culture Brochure" (পিডিএফ)। ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০০৬।
- "Aga Khan Trust for Culture Archives on ArchNet.org"। ৯ মার্চ ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০০৬।
- "The Aga Khan Development Network"। ১৫ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৬।