ইসলামিক স্টেট

ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকারী একটি উগ্র সুন্নী মতবাদীভিত্তিক গোষ্ঠী।
(আইএস থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ইসলামিক স্টেট (সংক্ষেপে আইএস) একটি উগ্র সুন্নী মতবাদীভিত্তিক গোষ্ঠী ।[২৩] এছাড়াও তারা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল, মিশরের সিনাই উপদ্বীপ এবং মধ্যপ্রাচ্য,[২৪] উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া[২৫]দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার[২৫][২৬] বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় রয়েছে। খিলাফত ঘোষণার পর তারা বিশ্বব্যপী মুসলিমদের উপর ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্ব দাবি করে। আইএসআইএস ঘোষিত খিলাফত ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে বিনাবিচারে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ হত্যা, শিরচ্ছেদআগুনে পুড়িয়ে প্রতিপক্ষ ও বেসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা দৃশ্যের ভিডিও প্রকাশ, প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস ইত্যাদি।এরা ইসলামের নামে বিভিন্ন আধিপত্যবাদি মানবতা বিরোধী কাজ শুরু করলে সৌদি আরবের মসজিদুল হারাম এর গ্র্যান্ড মুফতি এদেরকে ইসলামের প্রধান শত্রু হিসাবে ঘোষণা করেন। [২৭]

ইসলামিক স্টেট
الدولة الإسلامية في العراق والشام (আরবি)
ad-Dawlah al-Islāmīyah fī al-‘Irāq wash-Shām
পতাকা
'নীতিবাক্য: باقية وتتمدد
Bāqiyah wa-Tatamaddad
"অবশিষ্ট এবং প্রসারিত"[]
জাতীয় সঙ্গীত: أمتي قد لاح فجر
Ummatī, qad lāha fajrun
"হে আমার জাতি, ভোর এসে গেছে"[][]
ইরাক এবং সিরিয়ার সামরিক অবস্থা
  'আইএসআইএস নিয়ন্ত্রণাধীন
  আল-নুসরা নিয়ন্ত্রণাধীন
  অন্যান্য সিরিয় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণাধীন
  সিরিয়া সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন
  ইরাক সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন
  সিরিয় কুর্দি নিয়ন্ত্রণাধীন
  ইরাকি কুর্দি নিয়ন্ত্রণাধীন
দ্রষ্টব্য: সিরিয়া এবং ইরাকে সীমিত জনসংখ্যা সহ বড় মরুভূমি রয়েছে। এই অঞ্চলগুলি তাদের মধ্যে রাস্তা এবং শহর ধারণকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে হিসাবে ম্যাপ করা হয়েছে।
Map of the current military situation in Iraq
Map of the current military situation in Syria
প্রশাসনিক কেন্দ্রআর-রাক্কাহ, সিরিয়া (de facto)[][]
বৃহত্তম নগরীমসুল, ইরাক
মতাদর্শওয়াহাবি[]
Salafist Jihadism
সালাফি[][]
ধরনRebel group controlling territory
সামরিক শক্তি ও অপারেশন এলাকাসিরিয়া ও ইরাকে
২০০,০০০[১২] (কুর্দিদের মতে)
২০,০০০–৩১,০০০ (সিআইএ'র হিসাব অনুযায়ী) সিরিয়া ও ইরাকের বাইরে
২০,৭০০–৩৫,৫০০(See Military of ISIL for more-detailed estimates.)
নেতৃবৃন্দ
• নেতা
আবু ইব্রাহিম আল হাশিমী আল কুরাইশী [১৩]
• ইরাকের ডেপুটি নেতা
আবু ফাতিমা আল-জাহেশী  [১৪][ভাল উৎস প্রয়োজন]
• সিরিয়ার ডেপুটি নেতা
আবু আলী আল-আনবারী[১৫]
• মিলিটারি শুরার প্রধান
আবু আয়মান আল-ইরাকী[১৬]
• মুখপাত্র
আবু হুজায়ফা আল আনসারী[১৭]
• ফিল্ড কমান্ডার
আবু ওমর আল-সিশানী [১৮]
Establishment
1999[১৯]
• Joined al-Qaeda
October 2004
• Declaration of an Islamic state in Iraq
13 October 2006
• Claim of territory in the Levant
8 April 2013
• Separated from al-Qaeda[২১][২২]
3 February 2014[২০]
• Declaration of "Caliphate"
29 June 2014
• Claim of territory in Libya, Egypt, Algeria, Saudi Arabia, Yemen, Afghanistan and Pakistan
13 November 2014

পটভূমি

সম্পাদনা

আরবিতে এর নাম আদ দাওলাহ আল ইসলামিয়া ফি আল ইরাক ওয়াশ শাম। এছাড়াও এই দল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া বা ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড আল শাম (সংক্ষেপে আইসিস) নামেও পরিচিত। ২০১৪ সালের জুনে দলটি তাদের নাম বদলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) রাখে। তবে মুসলিম বিশ্বে এই নতুন নাম ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।

জাতিসংঘ আইএস কে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী করেছে এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আরোপ করেছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, ভারতরাশিয়া আইএস-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে। আইএস-এর বিরুদ্ধে ৬০টির বেশি দেশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুদ্ধরত।

১৯৯৯ সালে এই গোষ্ঠী জামাত আল তাওহিদ ওয়াল জিহাদ নামে আত্মপ্রকাশ করে, পরে ২০০৪ সালে তা তানজিম কাইদাত আল জিহাদ ফি বিলাদ আল রাফিদাইন বা সাধারণভাবে আল কায়েদা ইরাক (একিউআই) নামে নাম বদল করে। এসময় তারা আল কায়েদার সাথে তাদের মৈত্রী জানান দেয়। ২০০৩ ইরাক আক্রমণের পর তারা যুদ্ধে অংশ নেয়। ২০০৬ সালে আইসিল আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী মুজাহিদিন শুরা কাউন্সিলের সাথে যোগ দেয় এবং পরে তারা ইসলামিক স্টেট অব ইরাক (আইএসআই) নামক ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেয়। আইএসআই ইরাকের আল আনবার, নিনেভেহ, কিরকুক ও অন্যান্য স্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান লাভ করে। তবে ২০০৮ সাল নাগাদ তাদের আত্মঘাতি হামলাসহ অন্যান্য সহিংসতার কারণে সুন্নি ইরাকি ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে তাদের নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টির হয়।

এই দল আবু বকর আল-বাগদাদীর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণভাবে বেড়ে উঠে। সিরিয়ান গৃহযুদ্ধে অংশ নেয়ার পর তারা সিরিয়ার সুন্নি অধ্যুষিত বিরাট অংশে তাদের আধিপত্য কায়েম করে।[২৮] সিরিয়ায় সম্প্রসারণের পর ২০১৩ সালের এপ্রিলে দলের নাম বদলে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড দ্য লেভান্ট রাখা হয়। এসময় আল বাগদাদী সিরিয়া ভিত্তিক গোষ্ঠী আল নুসরা ফ্রন্টের সাথে যুক্ত হওয়ার ঘোষণা দেন। ২০১৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আল কায়েদার সাথে আইসিলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তবে আট মাস ক্ষমতাকেন্দ্রিক লড়াইয়ের পর আল কায়েদা তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে।[২০][২৯]

২০১৪ সালের ২৯ জুন আইএস খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়[৩০][৩১] এবং আবু বকর আল-বাগদাদীকে খলিফা ঘোষণা করা হয়।[৩২]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Colonial Caliphate: The Ambitions of the 'Islamic State'"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  2. "How ISIS got its anthem"The Guardian। ৯ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৪ 
  3. "LiveLeak.com - Islamic state caliphate anthem!Nasheed of Islamic state .. la ilàha illa Allàh" 
  4. "ISIS on offense in Iraq"Al-Monitor। ১০ জুন ২০১৪। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৪ 
  5. Kelley, Michael B. (২০ আগস্ট ২০১৪)। "One Big Question Surrounds The Murder Of US Journalist James Foley By ISIS"Business Insider। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৪... the de facto ISIS capital of Raqqa, Syria ... 
  6. "You Can't Understand ISIS If You Don't Know the History of Wahhabism in Saudi Arabia"। August 2014। সংগ্রহের তারিখ February 2015  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  7. "Islamic State"Australian National Security। Australian Government। ৮ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৪ 
  8. Crooke, Alastair (৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। "You Can't Understand ISIS If You Don't Know the History of Wahhabism in Saudi Arabia"The Huffington Post 
  9. Ishaan Tharoor (১৬ জুলাই ২০১৪)। "This Canadian jihadist died in Syria, but his video may recruit more foreign fighters"The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৪The Islamic State has de facto control of a whole swathe of territory stretching from eastern Syria to the environs of Baghdad and last month declared a caliphate... 
  10. Paul Cruickshank; Nic Robertson; Tim Lister; Jomana Karadsheh (১৮ নভেম্বর ২০১৪)। "ISIS comes to Libya"। CNN। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৪ 
  11. Zack Beauchamp (৪ আগস্ট ২০১৪)। "ISIS just took a town in Lebanon. Wait, Lebanon?"। Vox। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৪ 
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Kurdish নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. Rubin, Alissa J. (৫ জুলাই ২০১৪)। "Militant Leader in Rare Appearance in Iraq"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৪ 
  14. Al-Tamimi, Aymenn Jawad (২৪ জানুয়ারি ২০১৬)। "An Account of Abu Bakr al-Baghdadi & Islamic State Succession Lines"Aymenn Jawad Al-Tamimi's Blog 
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; telegraph9july নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. "Military Skill and Terrorist Technique Fuel Success of ISIS"The New York Times। ২৭ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০১৪ 
  17. "داعش يعلن بتسجيل غير مؤرخ مقتل زعيمه "أبو الحسين" القرشي" [ISIS announces in an undated recording the killing of its leader, “Abu al-Hussein” al-Qurashi]। Al Arabiya (আরবি ভাষায়)। ২০২৩-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  18. Akhmeteli, Nina (৯ জুলাই ২০১৪)। "The Georgian roots of Isis commander Omar al-Shishani"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪ 
  19. "The War between ISIS and al-Qaeda for Supremacy of the Global Jihadist Movement" (পিডিএফ)Washington Institute for Near East Policy। জুন ২০১৪। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৪ 
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; JamestownFoundation20041018 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. "Al-Qaeda disavows ISIS militants in Syria"BBC News। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  22. https://www.aljazeera.com/news/2019/03/23/isil-defeated-in-final-syria-victory-sdf/
  23. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; npr.org নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  24. "Pakistan Taliban splinter group vows allegiance to Islamic State"Reuters। ১৮ নভেম্বর ২০১৪। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৪ 
  25. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ISIL gains supporters নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  26. "ISIS is enemy No. 1 of Islam,' says Saudi grand mufti"। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১৭ 
  27. Sly, Liz (২৩ জুলাই ২০১৩)। "Islamic law comes to rebel-held Syria"The Washington Post 
  28. Sly, Liz (৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Al-Qaeda disavows any ties with radical Islamist ISIS group in Syria, Iraq"The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  29. Lawrence, Jessica। "Iraq crisis: Could an ISIS caliphate ever govern the entire Muslim world?"। ABC News (Australia)। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৪ 
  30. "What does ISIS' declaration of a caliphate mean?"Al Akhbar English। ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৪ 
  31. Withnall, Adam (২৯ জুন ২০১৪)। "Iraq crisis: Isis changes name and declares its territories a new Islamic state with 'restoration of caliphate' in Middle East"The Independent। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪ 

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা