অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি (ইংরেজি: Adrenal gland) হলো একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি যা অ্যাড্রেনালিন, অ্যালডোস্টেরন ও কর্টিসলসহ নানাবিধ হরমোন তৈরি করে থাকে। এটি সুপ্রারিনাল গ্রন্থি (suprarenal gland) নামেও পরিচিত।[১][২] এরা বৃক্কের উপরিভাগে অবস্থিত। প্রতি গ্রন্থির একটি বাহ্যিক কর্টেক্স ও অভ্যন্তরীণ মেডালা থাকে। কর্টেক্স অংশ থেকে স্টেরয়েড হরমোন তৈরি হয়। অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত: জোনা গ্লোমেরুলোসা, জোনা ফ্যাসিকিউলাটা ও জোনা রেটিকিউলারিস।[৩] অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স থেকে তিনটি প্রধান স্টেরয়েড হরমোন তৈরি হয়: মিনারেলোকর্টিকয়েড, গ্লুকোকর্টিকয়েড ও অ্যান্ড্রোজেন। জোনা গ্লোমেরুলোসাতে উৎপন্ন মিনারেলোকর্টিকয়েড (যেমন অ্যালডোস্টেরন) রক্তচাপ ও ইলেকট্রোলাইট সাম্যাবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গ্লুকোকর্টিকয়েড কর্টিসল ও কর্টিসোন জোনা ফ্যাসিকিউলাটাতে তৈরি হয়; বিপাক নিয়ন্ত্রণ ও অনাক্রম্যতন্ত্রকে অবদমন করে রাখা তাদের কাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। জোনা রেটিকিউলারিস হলো কর্টেক্সের সবচেয়ে ভেতরের স্তর, যেখান থেকে অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হয় যা জননাঙ্গ ও অন্যান্য লক্ষ্যভুক্ত অঙ্গসমূহে সম্পূর্ণ কার্যকর যৌন হরমোনে রূপান্তরিত হয়।[৪] স্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে স্টেরয়ডোজেনেসিস বলে, এর সাথে অনেক বিক্রিয়া ও প্রক্রিয়া জড়িত যা কর্টেক্সের কোষগুলোতে সংগঠিত হয়।[৫] মেডালা থেকে ক্যাটিকোলামিন তৈরি হয় যা জরুরি অবস্থায় শরীরকে দ্রুত সাড়াদানের জন্য প্রস্তুত করে।[৪]
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি | |
---|---|
বিস্তারিত | |
পূর্বভ্রূণ | মেসোডার্ম ও নিউরাল ক্রেস্ট |
তন্ত্র | অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র |
ধমনী | ঊর্ধ্বস্থিত, মধ্যস্থ ও নিম্নস্থ সুপ্রারিনাল ধমনিসমূহ |
শিরা | সুপ্রারিনাল শিরাসমূহ |
স্নায়ু | সিলিয়াক ও বৃক্কীয় জালক |
লসিকা | লাম্বার লিম্ফনোড |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | Glandula suprarenalis |
মে-এসএইচ | D000311 |
টিএ৯৮ | A11.5.00.001 |
টিএ২ | 3874 |
এফএমএ | FMA:9604 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
অনেক অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির রোগ আছে যা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। কর্টিসল অতিরিক্ত তৈরি হলে কুশিং সিনড্রোম হয়, অন্যদিকে অপর্যাপ্ত উৎপাদন অ্যাডিসন রোগের সাথে সম্পর্কিত। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নিয়ন্ত্রণ কৌশলের সমস্যা থেকে উদ্ভূত জন্মগত অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লাজিয়া একটি জেনেটিক রোগ।[৪][৬] অ্যাড্রিনাল টিসু থেকে বিভিন্ন ধরনের অর্বুদ (টিউমার) উদ্গত হয় যা সাধারণত মেডিকেল চিত্রণের সাহায্যে অন্যরোগ অনুসন্ধানের সময় খুঁজে পাওয়া যায়।[৭]
গঠন
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল গ্রন্থি শরীরের উভয় পাশে পেরিটোনিয়ামের পেছনে বৃক্কের উপরে অবস্থিত। মানবদেহে ডান পাশের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিটি পিরামিড আকৃতির এবং বাম পাশের গ্রন্থিটি অর্ধচন্দ্রাকার ও কিছুটা বৃহত্তর।[৮] অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির দৈর্ঘ্য ৫ সে.মি., প্রশস্ততা ৩ সে.মি. ও পুরুত্ব ১ সে.মি.।[৯] প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে তাদের যৌথ ওজন ৭ থেকে ১০ গ্রাম।[১০] গ্রন্থিদ্বয় পীতাভ বর্ণের।[৮]
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির চারিদিকে চর্বিযুক্ত ক্যাপসুল রয়েছে এবং এটি বৃক্কীয় ফ্যাশিয়ার অভ্যন্তরে অবস্থিত যা বৃক্ককেও ঘিরে রাখে। যোজক কলার একটি দুর্বল সেপটাম বা প্রাচীর গ্রন্থিগুলোকে বৃক্ক থেকে পৃথক রাখে।[১১] অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলো সরাসরি থোরাসিক ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদার নিচে অবস্থিত এবং বৃক্কীয় ফ্যাশিয়ার সাহায্যে ডায়াফ্রামের ক্রুরার সাথে লেগে থাকে।[১১] প্রত্যেকটি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির দুটি স্বতন্ত্র অংশ রয়েছে, যার প্রত্যেকটির কাজ ভিন্ন, বাহ্যিক অংশটির নাম অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স ও অভ্যন্তরীণ অংশটির নাম অ্যাড্রিনাল মেডালা, উভয় অংশই হরমোন তৈরি করে।[১২]
অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল কর্টেক্স হলো অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির বৃহত্তম ও বাহিরের অংশ। এটি তিনটি পৃথক অঞ্চলে বিভক্ত: জোনা গ্লোমেরুলোসা, জোনা ফ্যাসিকিউলাটা ও জোনা রেটিকিউলারিস। প্রতিটি অঞ্চল সুনির্দিষ্ট হরমোন তৈরি করে। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে প্রত্যেক স্তরের স্বতন্ত্র চেহারা দেখা যায় এবং প্রত্যেকের কাজও আলাদা।[১৩] অ্যাড্রিনাল কর্টেক্সে অ্যালডোস্টেরন, কর্টিসল ও অ্যান্ড্রোজেন হরমোন তৈরি হয়।[১৪]
জোনা গ্লোমেরুলোসা
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল কর্টেক্সের সবচেয়ে বাইরের অঞ্চলটি জোনা গ্লোমেরুলোসা নামে পরিচিত। এটি গ্রন্থির তন্তুময় ক্যাপসুলের ঠিক নিচে অবস্থিত। এই স্তরের কোষগুলো ডিম্বাকৃতির হয় এবং গুচ্ছাকারে অবস্থান করে, তন্তুময় ক্যাপসুল থেকে যোজক কলা দ্বারা গঠিত ট্র্যাবিকিউলি দ্বারা পৃথক থাকে ও প্রশস্ত কৈশিক জালিকা ধারণ করে।[১৫] এই স্তরটি অ্যালডোস্টেরন সিনথেজ নামক উৎসেচকের ক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যালডোস্টেরন উৎপাদনের প্রধান জায়গা, যা একটি মিনারেলোকর্টিকয়েড।[১৬][১৭] অ্যালডোস্টেরন দীর্ঘমেয়াদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৮] এই স্তরটি অ্যালডোস্টেরন সিনথেজ নামক উৎসেচকের ক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যালডোস্টেরন উৎপাদনের প্রধান জায়গা, যা একটি মিনারেলোকর্টিকয়েড।[১৬][১৭] অ্যালডোস্টেরন দীর্ঘমেয়াদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৮]
জোনা ফ্যাসিকিউলাটা
সম্পাদনাজোনা গ্লোমেরুলোসা ও জোনা রেটিকিউলারিসের মাঝখানে জোনা ফ্যাসিকিউলাটা অবস্থিত। এই স্তরের কোষগুলো গ্লুকোকর্টিকয়েড যেমন, কর্টিসল উৎপাদন করে।[১৯] তিনটি স্তরের মধ্যে এটিই বৃহত্তম, কর্টেক্সের মোট আয়তনের প্রায় ৮০% দখল করে।[৩] জোনা ফ্যাসিকিউলাটায়, কোষগুলো মেডালার দিকে অরীয়ভাবে সারিবদ্ধ হয়ে বিন্যস্ত থাকে। কোষগুলোতে অসংখ্য লিপিড ড্রপলেট, প্রচুর মাইটোকন্ড্রিয়া ও একটি জটিল মসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম[১৫]
জোনা রেটিকিউলারিস
সম্পাদনাসবচেয়ে ভিতরের কর্টিক্যাল স্তর মেডালার সাথে সরাসরি লেগে থাকে। এটি অ্যান্ড্রোজেনসমূহ উৎপাদন করে থাকে, প্রধানত ডিহাইড্রোএপিঅ্যান্ড্রোস্টেরন (DHEA), ডিহাইড্রোএপিঅ্যান্ড্রোস্টেরন সালফেট (DHEA-S) ও অ্যান্ড্রোস্টিনডায়োন যা মানবদেহে টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের পূর্ববর্তী ধাপ।[১৯] এর ক্ষুদ্র কোষগুলো অনিয়ত রজ্জু ও গুচ্ছ গঠন করে, যা কৈশিক জালিকা ও যোজক কলা দ্বারা পৃথক থাকে। কোষে অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণ সাইটোপ্লাজম ও লিপিড ড্রপলেট থাকে এবং মাঝে মাঝে বাদামি লিপোফাসিন নামক রঞ্জক দেখা যায়।[১৫]
মেডালা
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল গ্রন্থির মাঝখানে অ্যাড্রিনাল মেডালা অবস্থিত এবং এর চারিদিকে অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স থাকে। মেডালার ক্রোমাফিন কোষসমূহ দেহের ক্যাটিকোলামিনসমূহ যেমন, অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিনের প্রধান উৎস। প্রায় ২০% নরঅ্যাড্রেনালিন (নরএপিনেফ্রিন) ও ৮০% অ্যাড্রেনালিন (এপিনেফ্রিন) এখান থেকে নিসৃত হয়।[১৯] অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি স্নায়ু উদ্দীপনা পেয়ে থাকে বক্ষীয় সুষুম্নাকাণ্ডের প্রিগ্যাংলিওনিক তন্তুর মাধ্যমে সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা। [২০] যেহেতু প্রিগ্যাংলিয়নিক স্নায়ুতন্তুর মাধ্যমে উদ্দীপনা পায় তাই অ্যাড্রিনাল মেডালাকে একটি বিশেষায়িত সিমপ্যাথেটিক গ্যাংলিয়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[২০] তবে, অন্যান্য সিমপ্যাথেটিক গ্যাংলিয়ার মতো অ্যাড্রিনাল মেডালাতে স্বতন্ত্র সিন্যাপস থাকে না এবং সরাসরি রক্তে এর ক্ষরণ অবমুক্ত করে।
কাজ
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল গ্রন্থি বিভিন্ন হরমোন ক্ষরণ করে যেগুলো বিভিন্ন এনজাইমের মাধ্যমে হয় গ্রন্থির ভেতরে নতুবা দেহের অন্যান্য অংশে বিপাকিত হয়। এই হরমোনগুলো বিবিধ অত্যাবশ্যক জৈবিক কাজের সাথে জড়িত।[২২]
কর্টিকোস্টেরয়েড
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল গ্রন্থির কর্টেক্স থেকে উৎপাদিত স্টেরয়েড হরমোনগুলো কর্টিকোস্টেরয়েড নামে পরিচিত।[২৩]
- মিনারেলোকর্টিকয়েডসমূহ যেমন অ্যালডোস্টেরন লবণ (খনিজ) ভারসাম্য ও রক্তের আয়তন নিয়ন্ত্রণ করে।[২৪]
- গ্লুকোকর্টিকয়েডসমূহ যেমন কর্টিসল আমিষ, স্নেহ ও শর্করার (গ্লুকোজ) বিপাক হারকে প্রভাবিত করে।[২৫]
- অ্যান্ড্রোজেনসমূহ যেমন ডিহাইড্রোয়েপিঅ্যান্ড্রোস্টেরন।
- মিনারেলোকর্টিকয়েডসমুহ
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি অ্যালডোস্টেরন, একটি মিনারেলোকর্টিকয়েড, উৎপাদন করে যা লবণ ভারসাম্য ও রক্তের আয়তন নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যালডোস্টেরন বৃক্কের দূরবর্তী প্যাঁচানো নালিকা ও সংগ্রাহী নালিকায় কাজ করে সোডিয়াম পুনঃশোষণ এবং পটাশিয়াম ও হাইড্রোজেন আয়ন নির্গমন বৃদ্ধি করে।[১৮] অ্যালডোস্টেরন মোট পরিস্রুত গ্লোমেরুলার ফিলট্রেটের ২% পুনঃশোষণের জন্য দায়ী। [২৬] অ্যানজিয়োটেনসিন-II ও বহিঃকোষীয় পটাশিয়াম অ্যালডোস্টেরন উৎপাদনের দুটি প্রধান নিয়ন্ত্রক।[১৯] দেহে উপস্থিত সোডিয়ামের পরিমাণ বহিঃকোষীয় আয়তনকে প্রভাবিত করে, যা আবার রক্তচাপকে প্রভাবিত করে। সুতরাং সোডিয়াম ধারণে অ্যালডোস্টেরনের প্রভাব রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।[২৭]
- গ্লুকোকর্টিকয়েডসমূহ
মানবদেহের প্রধান গ্লুকোকর্টিকয়েড হলো কর্টিসল। যেসব প্রজাতিতে কর্টিসল তৈরি হয় না, সেসব ক্ষেত্রে এর পরিবর্তে কর্টিকোস্টেরন কাজ করে। বিপাক ক্রিয়ার ওপর গ্লুকোকর্টিকয়েডের অনেক প্রভাব রয়েছে। এরা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। গ্লুকোকর্টিকয়েড দেহের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কে অবদমিত করে রাখে এবং প্রদাহের পরিমাণ কমায়। কর্টিসল অস্টিওব্লাস্টের ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলে নতুন অস্থি টিসু তৈরি ব্যাহত হয়। এটি অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণও হ্রাস করে।[২৭]
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি বেসাল মাত্রায় কর্টিসল নিঃসরণ করে তবে অগ্র পিটুইটারি থেকে নিঃসৃত অ্যাড্রিনোকর্টিকোট্রপিক হরমোন (ACTH) -এর প্রভাবে অনেক বেশি নিঃসৃত হতে পারে। কর্টিসল সারাদিন সমানভাবে নিঃসৃত হয় না – ACTH নিঃসরণের সার্কেডিয়ান ছন্দের ফলে সকালের শুরুতে সর্বাধিক ও সন্ধ্যায় সর্বনিম্ন মাত্রায় নিঃসৃত হয়।[২৭]
- উৎপাদন
সকল কর্টিকোস্টেরয়েড হরমোন কোলেস্টেরল থেকে উৎপত্তি লাভ করে। সুতরাং স্টেরয়েড উৎপাদনের প্রথম ধাপ হচ্ছে কোলেস্টেরল গ্রহণ বা সংশ্লেষ। স্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনকারী কোষসমুহ দুটি উপায়ে কোলেস্টেরল গ্রহণ করে থাকে। প্রধান উৎস হচ্ছে খাবার থেকে প্রাপ্ত কোলেস্টেরল যা রক্তের মাধ্যমে নিম্ন ঘনত্ব লাইপোপ্রোটিন (LDL)-এর ভিতরে কোলেস্টেরল এস্টার হিসেবে পরিবাহিত হয়। রিসেপ্টারের মধ্যস্থতায় সংঘটিত এন্ডোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় LDL কোষের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কোলেস্টেরলের আরেকটি উৎস হলো কোষের এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামে সংশ্লেষণ। এল ডি এল মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে সংশ্লেষণ ব্যাহত হতে পারে।[৪] লাইসোসোম নামক অঙ্গাণুতে, কোলেস্টেরল এস্টারসমূহ মুক্ত কোলেস্টেরলে রূপান্তরিত হয়, যা পরবর্তীতে স্টেরয়েড উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় অথবা কোষে জমা থাকে।[২৮]
কোলেস্টেরল থেকে স্টেরয়েড উৎপাদনের প্রাথমিক ধাপগুলোতে সাইটোক্রোম পি৪৫০ গোত্রের কিছু উৎসেচক জড়িত থাকে যেগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার অভ্যন্তরীণ ঝিল্লিতে অবস্থিত। বাহ্যিক ঝিল্লি থেকে অভ্যন্তরীণ ঝিল্লিতে কোলেস্টেরলের পরিবহণে সাহায্য করে স্টেরয়ডোজেনিক অ্যাকিউট রেগুলেটরি প্রোটিন এবং এটিই স্টেরয়েড সংশ্লেষণের হার নিয়ন্ত্রণকারী ধাপ।[২৮] অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির প্রতিটি স্তরের কাজ ভিন্ন, প্রত্যেক স্তরে আলাদা উৎসেচক রয়েছে যেগুলো একটি অভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন ধরনের হরমোন তৈরি করে।[৪] স্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনের প্রথম উৎসেচকীয় ধাপ হলো কোলেস্টেরল পার্শ্ব শিকলের সম্ভেদ বা ভাঙন। এই বিক্রিয়ায় উৎপাদ হিসেবে প্রেগনিনোলোন তৈরি হয় এবং অনুঘটক হিসেবে কাজ করে P450scc নামক উৎসেচক যা কোলেস্টেরল ডেসমোলেজ নামেও পরিচিত। প্রেগনিনোলোন উৎপাদনের পর প্রতিটি কর্টিক্যাল স্তরের বিশেষ উৎসেচকসমূহ এটির আরও সংপরিবর্তন ঘটায়। এই প্রক্রিয়ায় মাইটোকন্ড্রিয়াল উৎসেচক, মাইক্রোসোমাল পি৪৫০ ও হাইড্রক্সিস্টেরয়েড ডিহাইড্রোজিনেজ উৎসেচক জড়িত থাকে। সাধারণত একটি কার্যকর হরমোন তৈরি হতে কয়েক সংখ্যক মধ্যবর্তী ধাপের প্রয়োজন হয় যেখানে প্রেগনিনোলোন বেশ কয়েকবার সংপরিবর্তিত হয়।[৫] এই বিপাক প্রক্রিয়ায় সংঘটিত বিক্রিয়াগুলোতে যে-সকল উৎসেচক অনুঘটক হিসেবে কাজ করে সেগুলো বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির রোগের সাথে জড়িত। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ২১-হাইড্রক্সিলেজ নামক একটি উৎসেচকের অভাবে কনজেনিটাল অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লেজিয়া হয়, এই উৎসেচকটি কর্টিসল উৎপাদনে মধ্যবর্তী ধাপের সাথে জড়িত।[২৯]
- নিয়ন্ত্রণ
গ্লুকোকর্টিকয়েডসমূহ হাইপোথ্যালামাস-পিটুইটারি-অ্যাড্রিনাল অক্ষের (HPA axis) নিয়ন্ত্রণমূলক প্রভাবাধীন থাকে। অগ্র পিটুইটারি থেকে নিঃসৃত অ্যাড্রিনোকর্টিকোট্রপিক হরমোন (ACTH) গ্লুকোকর্টিকয়েড সংশ্লেষণে উদ্দীপনা প্রদান করে। অপরদিকে, ACTH এর উৎপাদন উদ্দীপিত হয় কর্টিকোট্রপিন-রিলিসিং হরমোন (CRH)-এর উপস্থিতিতে, যা হাইপোথ্যালামাসের নিউরন থেকে অবমুক্ত হয়। HPA অক্ষ ঋণাত্মক ফিডব্যাক পদ্ধতির একটি উদাহরণ, যেখানে কর্টিসল নিজে ACTH ও CRH সংশ্লেষণের প্রত্যক্ষ সম্বাধক হিসেবে কাজ করে।[৪] মিনারেলোকর্টিকয়েড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রিত হয় প্রধানত রিনিন-অ্যানজিয়োটেনসিন-অ্যালডোস্টেরন সিস্টেম (RAAS), পটাশিয়ামের ঘনমাত্রা ও কিছুটা ACTH- এর ঘনমাত্রার ওপর।[৪] বৃক্কের জাক্সটাগ্লোমেরুলার অ্যাপারেটাস থেকে রিনিন নামক উৎসেচক নিঃসৃত হয়, যেটি একটি বিক্রিয়া শুরু করে যার ফলে অ্যানজিয়োটেনসিন II উৎপন্ন হয়। জোনা গ্লোমেরুলোসার কোষগুলোতে অবস্থিত অ্যানজিয়োটেনসিন রিসেপ্টার বস্তুটিকে শনাক্ত করতে পারে এবং অ্যালডোস্টেরন নিঃসরণে উদ্দীপনা জোগায়।[৩০]
অ্যান্ড্রোজেনসমূহ
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনাল গ্রন্থির জোনা রেটিকিউলারিস থেকে পুং যৌন হরমোন বা অ্যান্ড্রোজেন উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হলো ডিহাইড্রোয়েপিঅ্যান্ড্রোস্টেরন (DHEA)। সাধারণত পুরুষ দেহে এই হরমোনগুলোর সার্বিক কোনো প্রভাব নেই, এরা জনন কোষে আরও শক্তিশালী অ্যান্ড্রোজেন যেমন টেস্টোস্টেরন ও ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (DHT) অথবা ইস্ট্রোজেন (মহিলা যৌন হরমোন) -এ পরিণত হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় মানবদেহে অ্যাড্রিনাল অ্যান্ড্রোজেনসমূহের খুব দুর্বল প্রভাব রয়েছে। পুরুষ যৌনাঙ্গসমূহের প্রাথমিক বৃদ্ধিতে শৈশবকালীন অড্রিনাল অ্যান্ড্রোজেন নিঃসরণের ভূমিকা রয়েছে। অ্যাড্রিনাল অ্যান্ড্রোজেন নারীদের ক্ষেত্রেও শুধু বয়ঃসন্ধিকালীন নয় বরং সারাজীবন হালকা প্রভাব রাখে। এই হরমোনের প্রভাবে নারীদের উপস্থ ও বগলের চুলের বৃদ্ধি ঘটে।[৩১]
ক্যাটিকোলামিনসমূহ
সম্পাদনাঅ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিন কে ক্যাটিকোলামিন বলে যা যুক্তরাষ্ট্রে এপিনেফ্রিন ও নরেপিনেফ্রিন নামে পরিচিত। ক্যাটিকোলামিনসমূহ পানিতে দ্রবণীয় যৌগ যা একটি ক্যাটিকোল গ্রুপ ও একটি অ্যামিন গ্রুপ নিয়ে গঠিত। এপিনেফ্রিন ও নরেপিনেফ্রিন অ্যাড্রিনাল মেডালাতে তৈরি হয়, যা সাধারণত নরেপিনেফ্রিনের তুলনায় চারগুণ বেশি এপিনেফ্রিন ক্ষরণ করে।[২২] অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিন সারা দেহে ছড়িয়ে থাকা অ্যাড্রেনোরিসেপ্টারে কাজ করে এবং রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন হার বৃদ্ধি করে।[২২] অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিন লড়াই অথবা পলায়ন সাড়া প্রদানের জন্য দায়ী, যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নিঃশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন হার বৃদ্ধিকরণ, রক্তচাপ বৃদ্ধি ও দেহের অনেক অংশে রক্তবাহের সংকোচন।[৩২] এপিনেফ্রিন অ্যাড্রিনাল মেডালাতে সংশ্লেষিত হয়ে জমা থাকে এবং সিস্টেমিক সংবহনতন্ত্রে অবমুক্ত হয়। নরেপিনেফ্রিন কেবল অ্যাড্রিনাল মেডালাতেই সংশ্লেষিত হয় না বরং প্রান্তীয় সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতেও তৈরি হয়। ডোপামিন হলো নরেপিনেফ্রিনের প্রিকার্সর বা মাতৃযৌগ, যা অ্যাড্রিনাল মেডালা ও প্রান্তীয় সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতে পাওয়া যায়। ক্যাটিকোলামিনসমূহ রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি ছাড়াও মায়োকার্ডিয়ামের সংকোচন ও হৃৎপিণ্ডের তড়িৎ পরিবহণ বেগ বৃদ্ধি করে। রক্তে প্রবহমান ক্যাটিকোলামিনের অর্ধায়ু ১০ থেকে ১০০ সেকেন্ড। ফলে ক্যাটিকোলামিনের প্লাজমা বা রক্তরস ঘনমাত্রা ব্যাপকভাবে উঠানামা করে।
- উৎপাদন
ক্যাটিকোলামিনসমূহ অ্যাড্রিনাল মেডালার ক্রোমাফিন কোষে টাইরোসিন নামক একটি অনাবশ্যক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে হাইড্রক্সিলেশন ও ডিকার্বক্সিলেশন প্রক্রিয়ায় সংশ্লেষিত হয়। টাইরোসিন খাবারের মাধ্যমে পাওয়া যায় অথবা যকৃতে ফিনাইলঅ্যালানিন থেকে সংশ্লেষিত হয়। সক্রিয় পরিবহণের মাধ্যমে এটি স্নায়ু ও ক্রোমাফিন কোষে প্রবেশ করে। টাইরোসিন হাইড্রক্সিলেজ উৎসেচকটি ক্যাটিকোলামিন সংশ্লেষণের প্রথম ধাপে টাইরোসিন কে এল-ডোপা তে রূপান্তরিত করে। অতঃপর এল-ডোপা নরঅ্যাড্রেনালিনে রূপান্তরিত হওয়ার আগে ডোপামিনে রূপান্তরিত হয়। সাইটোসলে, ফিনাইলইথানোল্যামিন এন-মিথাইলট্র্যান্সফারেজ (PNMT) উৎসেচকের মাধ্যমে নরঅ্যাড্রেনালিন রূপান্তরিত হয়ে অ্যাড্রেনালিনে পরিণত হয়। অ্যাড্রিনাল কর্টেক্সে উৎপন্ন গ্লুকোকর্টিকয়েড টাইরোসিন হাইড্রক্সিলেজ ও PNMT -এর মাত্রা বাড়িয়ে ক্যাটিকোলামিন সংশ্লেষণকে উদ্দীপিত করে।[৪][১৩] সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের সক্রিয়তার মাধ্যমে ক্যাটিকোলামিন নিঃসরণ উদ্দীপিত হয়।[৩৩]
উৎপত্তি
সম্পাদনাঅ্যাড্রিনালিন গ্রন্থি দুটি ভিন্ন ধরনের টিসু নিয়ে গঠিত। মধ্যভাগে থাকে অ্যাড্রিনাল মেডালা, যেখান থেকে অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিন নিঃসৃত হয়ে রক্তে অবমুক্ত হয়। মেডালাকে চারপাশে ঘিরে থাকে অ্যাড্রিনাল কর্টেক্স যেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের স্টেরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয়। এই টিসুগুলো বিভিন্ন ভ্রুণীয় মাতৃকোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির কর্টেক্সের উৎপত্তি হয় মেসোডার্ম থেকে এবং মেডালার উৎপত্তি হয় নিউরাল ক্রেস্ট থেকে যার উৎপত্তিস্থল হলো এক্টোডার্ম।[১২] প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ক্ষেত্রে শরীরের আকারের তুলনায় অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির আকার বড় থাকে। [৩৪] উদাহরণস্বরূপ, তিন মাস বয়সে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির আকার বৃক্কের তুলনায় চারগুণ বড় হয়। জন্মের পরে কর্টেক্সের সংকোচনের জন্য গ্রন্থির আকার আপেক্ষিকভাবে কমতে থাকে। ১ বছর বয়সে কর্টেক্স প্রায়ই অদৃশ্য হয়ে যায় এবং ৪-৫ বছর বয়স থেকে পুনরায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। জন্মের সময় গ্রন্থিটির ওজন হয় ১ গ্রাম[১২] এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এর ওজন হয় ৪ গ্রাম।[২৭] ভ্রূণীয় অবস্থায় ছয় সপ্তাহের পর গ্রন্থিদ্বয় প্রথমবারের মতো শনাক্ত করা যায়।[১২]
ইতিহাস
সম্পাদনাবার্তোলোমিও ইউস্তাকি, একজন ইতালীয় অ্যানাটমিস্ট, ১৫৬৩-১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির কথা বর্ণনা করেছিলেন।[৩৫][৩৬] তবে, এই প্রকাশনাগুলো পেপাল লাইব্রেরির অংশ থাকায় জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি, যা প্রথমবারের মতো ১৬১১ সালে ক্যাসপার বার্টোলিন দ্যা এল্ডারের চিত্রণ থেকে জানা যায়।[৩৬] অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির নামকরণ করা হয়েছে বৃক্কের সাথে এর আপেক্ষিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। adrenal শব্দটি এসেছে ad- (লাতিন, নিকট) ও renes (লাতিন, বৃক্ক) থেকে। অনুরূপভাবে, ১৬২৯ সালে জঁ রিওলান দ্যা ইয়াংগার কর্তৃক নামকরণকৃত suprarenal শব্দটি লাতিন supra (লাতিন: "উপরে") ও renes (লাতিন: বৃক্ক) থেকে এসেছে। এই গ্রন্থি যে বৃক্কের উপরে অবস্থিত একটি পৃথক গ্রন্থি তা ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে ব্যাপকভাবে গৃহীত ছিল না, গ্রন্থিটি কি সত্যিই বৃক্কের উপরে অবস্থিত না বৃক্কের একটি অংশ তা নিয়ে বিতর্ক ছিল।[৩৬]
অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি নিয়ে সর্বাধিক স্বীকৃত কাজটি হয়েছিল ১৮৫৫ সালে ইংরেজ চিকিৎসক থমাস অ্যাডিসন কর্তৃক অন দ্যা কন্সটিটিউশনাল অ্যান্ড লোকাল ইফেক্টস্ অব ডিজিজ অব দ্যা সুপ্রারিনাল ক্যাপসুল প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে। এই মনোগ্রাফটিতে অ্যাডিসন যে রোগের বর্ণনা দিয়েছিলেন তা ফরাসি চিকিৎসক জর্জেস ফিলিপ ট্রুসো অ্যাডিসন রোগ নামে নামকরণ করেন যা এখনো অ্যাড্রিনাল অপর্যাপ্ততা ও এর সাথে সম্পর্কিত লক্ষণসমূহের এপোনিম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। [৩৭] ১৮৯৪ সালে, ইংরেজ শারীরবৃত্তবিদ জর্জ অলিভার ও এডওয়ার্ড শেফার অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির নির্যাসের ক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেন এবং তাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি করার প্রভাব লক্ষ করেন। পরবর্তী দশকগুলোতে বেশ কিছু চিকিৎসক অ্যাডিসন'স ডিজিজের চিকিৎসায় অ্যাড্রিনাল কর্টেক্সের নির্যাস নিয়ে গবেষণা করেন।[৩৫] এডওয়ার্ড ক্যালভিন কেন্ডল, ফিলিপ হেনচ ও টাডিউস রাইখস্টাইন কে ১৯৫০ সালে অ্যাড্রিনাল হরমোনের গঠন ও প্রভাব আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।[৩৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Santulli G. MD (২০১৫)। Adrenal Glands: From Pathophysiology to Clinical Evidence। Nova Science Publishers, New York, NY। আইএসবিএন 978-1-63483-570-1।
- ↑ "Adrenal gland"। Medline Plus/Merriam-Webster Dictionary। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ Ross M, Pawlina W (২০১১)। Histology: A Text and Atlas (6th সংস্করণ)। Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 708, 780। আইএসবিএন 978-0-7817-7200-6।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Melmed, S; Polonsky, KS; Larsen, PR; Kronenberg, HM (২০১১)। Williams Textbook of Endocrinology (12th সংস্করণ)। Saunders। আইএসবিএন 978-1437703245।
- ↑ ক খ Miller, WL; Auchus, RJ (২০১১)। "The molecular biology, biochemistry, and physiology of human steroidogenesis and its disorders."। Endocrine Reviews। 32 (1): 81–151। ডিওআই:10.1210/er.2010-0013। পিএমআইডি 21051590। পিএমসি 3365799 ।
- ↑ Longo, D; Fauci, A; Kasper, D; Hauser, S; Jameson, J; Loscalzo, J (২০১২)। Harrison's Principles of Internal Medicine (18th সংস্করণ)। New York: McGraw-Hill। আইএসবিএন 978-0071748896।
- ↑ Nieman, LK (২০১০)। "Approach to the patient with an adrenal incidentaloma."। The Journal of Clinical Endocrinology and Metabolism। 95 (9): 4106–13। ডিওআই:10.1210/jc.2010-0457। পিএমআইডি 20823463। পিএমসি 2936073 ।
- ↑ ক খ Thomas, edited by Paul; Molecular, School of; Australia, Biomedical Science, University of Adelaide, Adelaide, South Australia (২০১৩)। Endocrine Gland Development and Disease। Burlington: Elsevier Science। পৃষ্ঠা 241। আইএসবিএন 9780123914545।
- ↑ Antonio Carlos A. Westphalen and Bonnie N. Joe (২০০৬)। "CT and MRI of Adrenal Masses"। Appl Radiol। 35 (8): 10–26।
- ↑ O'Hare, A. Munro Neville, Michael J. (১৯৮২)। The Human Adrenal Cortex Pathology and Biology – An Integrated Approach। Springer London। পৃষ্ঠা Chapter 4: Structure of the adult cortex। আইএসবিএন 9781447113171।
- ↑ ক খ Moore KL, Dalley AF, Agur AM (২০১৩)। Clinically Oriented Anatomy, 7th ed.। Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 294, 298। আইএসবিএন 978-1-4511-8447-1।
- ↑ ক খ গ ঘ Kay, Saundra। "Adrenal Glands"। Medscape। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ Whitehead, Saffron A.; Nussey, Stephen (২০০১)। Endocrinology: an integrated approach। Oxford: BIOS। পৃষ্ঠা 122। আইএসবিএন 978-1-85996-252-7।
- ↑ Jefferies, William McK (২০০৪)। Safe uses of cortisol। Springfield, Ill: Charles C. Thomas। আইএসবিএন 978-0-398-07500-2।
- ↑ ক খ গ Young B, Woodford P, O'Dowd G (২০১৩)। Wheater's Functional Histology: A Text and Colour Atlas (6th সংস্করণ)। Elsevier। পৃষ্ঠা 329। আইএসবিএন 978-0702047473।
- ↑ ক খ Curnow KM, Tusie-Luna MT, Pascoe L, Natarajan R, Gu JL, Nadler JL, White PC (অক্টোবর ১৯৯১)। "The product of the CYP11B2 gene is required for aldosterone biosynthesis in the human adrenal cortex." (পিডিএফ)। Mol. Endocrinol.। 5 (10): 1513–1522। ডিওআই:10.1210/mend-5-10-1513 । পিএমআইডি 1775135।
- ↑ ক খ Zhou M, Gomez-Sanchez CE (জুলাই ১৯৯৩)। "Cloning and expression of a rat cytochrome P-450 11 beta-hydroxylase/aldosterone synthase (CYP11B2) cDNA variant."। Biochem Biophys Res Commun। 194 (1): 112–117। ডিওআই:10.1006/bbrc.1993.1792। পিএমআইডি 8333830।
- ↑ ক খ গ Marieb, EN; Hoehn, K (২০১২)। Human anatomy & physiology (9th সংস্করণ)। Pearson। পৃষ্ঠা 629। আইএসবিএন 978-0321743268।
- ↑ ক খ গ ঘ Dunn R. B.; Kudrath W.; Passo S.S.; Wilson L.B. (২০১১)। "10"। Kaplan USMLE Step 1 Physiology Lecture Notes। পৃষ্ঠা 263–289।
- ↑ ক খ Sapru, Hreday N.; Siegel, Allan (২০০৭)। Essential Neuroscience । Hagerstown, MD: Lippincott Williams & Wilkins। আইএসবিএন 978-0-7817-9121-2।
- ↑ "OpenStax CNX"। cnx.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৮-০১।
- ↑ ক খ গ Britton, the editors Nicki R. Colledge, Brian R. Walker, Stuart H. Ralston; illustrated by Robert (২০১০)। Davidson's principles and practice of medicine. (21st সংস্করণ)। Edinburgh: Churchill Livingstone/Elsevier। পৃষ্ঠা 768–778। আইএসবিএন 978-0-7020-3085-7।
- ↑ "Corticosteroid"। TheFreeDictionary। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ Marieb Human Anatomy & Physiology 9th edition, chapter:16, page:629, question number:14
- ↑ "Corticosteroid"। TheFreeDictionary। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ Sherwood, Lauralee (২০০১)। Human physiology: from cells to systems। Pacific Grove, CA: Brooks/Cole। আইএসবিএন 978-0-534-56826-9। ওসিএলসি 43702042।
- ↑ ক খ গ ঘ Boron, WF.; Boulapep, EL. (২০১২)। Medical Physiology (2nd সংস্করণ)। Philadelphia: Saunders। আইএসবিএন 978-1437717532।
- ↑ ক খ Miller, WL; Bose, HS (২০১১)। "Early steps in steroidogenesis: intracellular cholesterol trafficking"। Journal of Lipid Research। 52 (12): 2111–2135। ডিওআই:10.1194/jlr.R016675। পিএমআইডি 21976778। পিএমসি 3283258 ।
- ↑ Charmandari, E; Brook, CG; Hindmarsh, PC (২০০৪)। "Classic congenital adrenal hyperplasia and puberty."। European Journal of Endocrinology। 151 (Suppl 3): 77–82। ডিওআই:10.1530/eje.0.151U077। পিএমআইডি 15554890। সাইট সিয়ারX 10.1.1.613.6853 । ২০১৫-০২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Crowley, SD; Coffman, TM (২০১২)। "Recent advances involving the renin–angiotensin system"। Experimental Cell Research। 318 (9): 1049–1056। ডিওআই:10.1016/j.yexcr.2012.02.023। পিএমআইডি 22410251। পিএমসি 3625040 ।
- ↑ Hall JE, Guyton AC (২০১০)। Guyton and Hall Textbook of Medical Physiology, 12th edition। Saunders। আইএসবিএন 978-1416045748।
- ↑ Henry Gleitman, Alan J. Fridlund and Daniel Reisberg (২০০৪)। Psychology (6 সংস্করণ)। W. W. Norton & Company। আইএসবিএন 978-0-393-97767-7।
- ↑ García, AG; García de Diego, AM; Gandía, L; Borges, R; García Sancho, J (২০০৬)। "Calcium signaling and exocytosis in adrenal chromaffin cells."। Physiological Reviews। 86 (4): 1093–1131। ডিওআই:10.1152/physrev.00039.2005। পিএমআইডি 17015485।
- ↑ Barwick, T.D.; Malhotra, A.; Webb, J.A.W.; Savage, M.O.; Reznek, R.H. (সেপ্টেম্বর ২০০৫)। "Embryology of the adrenal glands and its relevance to diagnostic imaging"। Clinical Radiology। 60 (9): 953–959। ডিওআই:10.1016/j.crad.2005.04.006। পিএমআইডি 16124976।
- ↑ ক খ Schmidt, JE (১৯৫৯)। Medical Discoveries: Who and When। Thomas। পৃষ্ঠা 9–10।
- ↑ ক খ গ O'Hare, A. Munro Neville, Michael J. (২০১২)। The Human Adrenal Cortex Pathology and Biology – An Integrated Approach। London: Springer London। পৃষ্ঠা Chapter 2: Historical Aspects। আইএসবিএন 978-1447113171।
- ↑ Pearce, JM (২০০৪)। "Thomas Addison (1793–1860)"। Journal of the Royal Society of Medicine। 97 (6): 297–300। ডিওআই:10.1258/jrsm.97.6.297। পিএমআইডি 15173338। পিএমসি 1079500 ।
- ↑ "The Nobel Prize in Physiology or Medicine 1950"। Nobel Foundation। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Adrenal gland at the Human Protein Atlas
- টেমপ্লেট:MedlinePlusEncyclopedia
- Adrenal gland histology
- টেমপ্লেট:AnatomyAtlasesMicroscopic – "Adrenal Gland"
- টেমপ্লেট:BUHistology
- সানি ডাউনস্টেট মেডিকেল সেন্টারে শারীরস্থান চিত্র:40:03-0105 – "Posterior Abdominal Wall: The Retroperitoneal Fat and Suprarenal Glands"
- Adrenal Gland, from Colorado State University
- ভিয়েনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্লাস্টিনেশন ল্যাবরেটরি—প্রস্থচ্ছেদ চিত্র: pembody/body8a (ইংরেজি)