অস্টেন্ড কোম্পানি

বাণিজ্যিক কোম্পানি

'অস্টেন্ড কোম্পানি' (ওলন্দাজ: ওস্টেনডে কমপ্যানি, বা জেনারেল ইন্ডিসের কমপ্যানি, অথবা জেনারেল ইন্ডিসের কমপ্যানি, ফরাসি: কমপ্যাঞ্জি ডি'অসেটে; অথবা বিশদ রুপে, কমপ্যাঞ্জি জেনারেল অ্যাট্যাবলি ড্যানস লেস পে-বাস অ্যাট্রিচিয়েনস পয়র লে কমার্স এবং লা নেভিগেশন অ্যাক্স ইনডেস)১৭২২ সালে ভারতে বাণিজ্য করার জন্য অস্ট্রিয়ান নেদারল্যান্ডস (বর্তমানে বেলজিয়াম) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। কোম্পানিটিতে কোনও অস্ট্রিয়ান কর্মী ছিল না। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে কোম্পানিটি ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ, ডাচ এবং ফরাসী উপনিবেশিক বাণিজ্য সংস্থা গুলোর সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে।[]এটি ভারতে ২টি উপনিবেশ স্তাপন করেছিল। লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটিশদের বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলায় ১৭৩১ সালে ব্রিটিশরা অস্ট্রিয়ায় কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে কোম্পানিটি বন্ধ করায়। অস্টেন্ড কোম্পানি বন্ধ করা ভিয়েনা চুক্তি এবং দুই রাষ্ট্রের মধ্যে জোট গঠনের পূর্ব শর্ত ছিল। অস্টেন্ড কোম্পানিকে ইস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাণিজ্যকে একচেটিয়াকরণের জন্য অস্ট্রিয়ার প্রথম প্রচেষ্টা হিসাবে বিবেচিত হয়, দ্বিতীয় অস্ট্রিয়ান ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বাণিজ্যক্ষেত্রে অনেক কম সফলতা লাভ করে।

১৭২২ সালের সংস্থার ভিত্তি সনদের শিরোনাম পৃষ্ঠা
অস্টেন্ডর নিরেট স্বর্ণের অঙ্কিত সিংহ
অস্টেন্ড কোম্পানির শেয়ার, ইস্যু করা ২ সেপ্টেম্বর ১৭২৩

পটভূমি

সম্পাদনা

ডাচ, ব্রিটিশ এবং ফরাসী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাফল্যের ফলে অস্ট্রিয়ান নেদারল্যান্ডসের অস্টেন্ডর বণিক এবং জাহাজ মালিকরা ইন্ডিজের সাথে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী হয়ে উঠে। ১৭১৫ সালে অস্টেন্ড থেকে মোচা, ভারত, বঙ্গ এবং চীন পর্যন্ত বাণিজ্য শুরু হয়।[]অ্যান্টওয়ার্প, ঘেন্ট এবং অস্টেন্ডের কিছু ব্যবসায়ীকে অস্ট্রিয়ান নেদারল্যান্ডসের হাবসবার্গ সরকার পূর্ব ভারত বাণিজ্যের জন্য অনুমতি দেয়, যা বর্তমানে স্পেন থেকে নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছে। ১৭১৫ থেকে ১৭২৩ এর মধ্যে ৩৪টি জাহাজ অস্টেন্ড থেকে চীন, মালবার বা করমণ্ডল উপকূল, সুরত, বঙ্গ বা মোচায় পাঠানো হয়। এই অভিযানগুলি ফ্লেমিশ, ইংরেজি, ডাচ এবং ফরাসী ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকারদের সমন্বয়ে গঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের অর্থায়নে পরিচালিত হত।

প্রতিষ্ঠা

সম্পাদনা

সিন্ডিকেটগুলির মধ্যে মুনাফা নিয়ে পারস্পরিক শত্রুতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলশ্রুতিতে ১৭৭২২ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রিয়ার শাসক চার্লস কত্রিক চার্টেড অস্টেন্ড ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিষ্ঠা ঘটে। সংস্থার মূলধন ৬ মিলিয়ন গিল্ডার স্থির করা হয়, প্রতি এক হাজার গিল্ডার ৬,০০০ শেয়ারের সমন্বয়ে তৈরি হয়। এটি মূলত অ্যান্টওয়ার্প এবং ঘেন্টের অর্থোপার্জনকারী বাসিন্দারা সরবরাহ করত। শেয়ারগুলি এন্টারওয়ার্প এক্সচেঞ্জে ১১ এবং ১২ই আগস্ট ১৭২৩ সালে প্রচলন করা হয়,[] ৩০৩৭ টি শেয়ারই ছিল ৫৪ জন প্রধান বিনিয়োগকারী অ্যান্টওয়ার্প বণিকদের।[] অর্থ ও বাণিজ্যের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের ভিতর থেকে সাতজনকে পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়, তারা হলেনঃ এন্টওয়ার্প থেকে জ্যাকস ডি প্রেট, লুই-ফ্রান্সোইস ডি কনইঙ্ক এবং পিয়েত্রো প্রোলি; ঘেন্ট থেকে জেন্ট মেলক্যাম্প, পাওলো ডি কিম্পে এবং জেন্ট বাউট; এবং ব্যবসায়ী এবং অস্টেন্ডের ব্যাংকার আইরিশ জ্যাকবাইট থমাস রে।[] জাহাজগুলি অস্টেন্ড থেকে যাত্রা করার সময়, সংস্থাটির অফিসগুলি অ্যান্টওয়ার্পের বর্সে ছিল।[] শীর্ষস্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আরেনবার্গের চতুর্থ ডিউক লিওপল্ড ফিলিপ[] সংস্থার শেয়ারগুলি ১৫% রিটার্নসহ অবিশ্বাস্য ভাবে লাভজনক হয়। সংস্থাটির দুটি কারখানাও ছিল (ট্রেডিং পোস্ট), কারোম্যান্ডেল উপকূলের ক্যাবেলনে (আধুনিক কোভলং) এবং বাংলার বানকুইবাজারে (ইছাপুরা)। ১৭২৪ থেকে ১৭৩২ সালের মধ্যে কোম্পানির ২১টি জাহাজ চীনের ক্যান্টন এবং বাংলায় প্রেরণ করা হয়েছিল। চায়ের দাম বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যিকভাবে চীনের উচ্চ মুনাফা হয়েছিল। ১৭১৯ থেকে ১৭২৮ সালের মধ্যে অস্টেন্ড কোম্পানী চীন থেকে ৭ মিলিয়ন পাউন্ড চা (পশ্চিমা ইউরোপে আনা মোট পরিমাণের প্রায় অর্ধেক) পরিবহন করেছিল, যা সমসাময়িক ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রায় সমান ছিল।[]

নিলম্বন

সম্পাদনা
 
অস্টেন্ড কোম্পানিকে ব্রিটিশদের জন্য "ক্ষতিকারক" বলে নিন্দা করা ঘোষণাপত্র (বামে) এবং ১৭২৩ সালে আইন জারি করে কোম্পানিটিতে ফ্রেঞ্চ বিনিয়োগ নিষিদ্ধকরন(ডানে)

শুরু থেকেই কোম্পানিটি অন্যান্য ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চক্ষুশূলে পরিণত হয়, কোম্পানির উত্তরোত্তর সাফল্য তাদের প্রভাব বিস্তারের পথে অন্তরায় হিসেবে দেখা দেয় এবং এটাও সত্য যে নতুন সংস্থাটির কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই পূর্বের ইংরেজী, ডাচ বা ফরাসী সংস্থার নবীন কর্মচারী ছিল, যারা কোম্পানির উন্নতিতে তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগায়। তদ্ব্যতীত, অভিজ্ঞ বিদেশিদের আকর্ষণ করার জন্য অস্টেন্ড কোম্পানি ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের জন্য কার্গো স্পেসের ক্ষেত্রে ভাতার বাবস্থা করে, যা তৎকালীন একচেটিয়া ব্যবসাকারি সংস্থাগুলির মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে ওঠে।[]প্রতিযোগীদের বিরোধীতা সত্ত্বেও, নতুন সংস্থাটি শুরু থেকেই বেশ লাভজনক ছিল এবং ১৭২৬ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল।

যাহোক, ১৭২৭ সালের মে মাসে, ব্রিটিশদের চাপে সম্রাট তার সনদটি সাত বছরের জন্য স্থগিত করেন এবং ১৭৩১ এর মার্চে ভিয়েনার দ্বিতীয় চুক্তি কোম্পানিটির চূড়ান্ত বিলুপ্তির ঘটায়।[] বিকশিত অস্টেন্ড কোম্পানিকে ষষ্ঠ চার্লস তার মেয়ে মারিয়া থেরেসার স্বীকৃতি এবং তার বংশীয় উত্তরসূরির সুরক্ষার জন্য বিসর্জন দেন। ১৭২৮ থেকে ১৭৩১ এর মধ্যে অল্প সংখ্যক অবৈধ অভিযানের পরিচালিত হয়েছিল, তবে সংস্থার পক্ষে চলা শেষ দুটি জাহাজ ছিল "অনুমদিত-জাহাজ" যা ১৭৩২ সালে ছেড়ে যায় এবং ভিয়েনার চুক্তিতে জাহাজটির জন্য ছাড় দেওয়া হয়।[]কোম্পানিটি ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৭৩৪ এ আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৭৩৪ পুরোপুরি গুটিয়ে ফেলা হয়।[] সরকারীভাবে বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও, শেয়ারহোল্ডাররা গোপনে কোম্পানিকে ১৭৪৫ সাল পর্যন্ত বিনিয়োগের জন্য একটি বাহন হিসাবে ব্যবহার করতে থাকে।[] সংস্থার অনেক বিনিয়োগকারী সুইডিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর সাথেও জড়িত ছিল।

ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং ডাচ প্রজাতন্ত্রের মধ্যে চলমান যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে ভারত ও চীনের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষে ১৭৭০ সালে অস্ট্রিয়া অস্টেন্ড কোম্পানির মডেলের ভিত্তিতে একটি কোম্পানি পুনরায় প্রতিষ্ঠা করে। ১৭৭৫ সালে উইলিয়াম বোল্টস এবং চার্লস প্রোলির প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটির নাম ছিল সোসাইটি ইম্পিয়েরিয়াল এশিয়াটিক ডি ট্রিস্ট এট আনভারস বা সোসিয়েটি এশিয়াটিক ডি ট্রিস্ট এটিকে এন্টওয়ার্প কোম্পানিও বলা হত এবং ১৭৮৫ সাল অবধি পরিচালিত হয়েছিল।[১০]

অস্টেন্ড কোম্পানির ব্যবহৃত জাহাজগুলি মাঝারি আকারের ছিল যার ধারণ ক্ষমতা ছিল গড়ে ২০০ থেকে ৫০০ টনের মধ্যে। অনেক জাহাজগুলি আংশিক বা সম্পূর্ণ রুপে ইংল্যান্ড এবং বিভিন্ন বিদেশী নাবিক এবং ক্রুদের দ্বারা পরিচালিত হত।[১১]

কোম্পানির জাহাজের তালিকা

সম্পাদনা

অস্টেন্ড কোম্পানি চালিত জাহাজের মধ্যে রয়েছে:

  • এলইমপিরেতাইচ এলিজাবেথ (সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ, ইমপ্রেট্রিওয়াস নামেও পরিচিত) ইংরেজ নাবিক নিয়ন্ত্রিত একটি ২৮-বন্দুকের জাহাজ।
  • এসপিরেনসে (''আশা'') ২০-বন্দুকের জাহাজ।
  • ভিলে-ডি-ভিয়েন্নে (ভিয়েনা শহর) পূর্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়ানম্যান হিথকোট
  • মাইসন-ডিঅস্ত্রিচ (অস্ট্রিয়ার গৃহ)
  • ফ্লান্ড্রিয়া (ফ্লান্ডের)
  • সেন্ট-জোসেফ (সেন্ট-জোসেফ)
  • প্রিন্স-ইউজিন (প্রিন্স ইউজিন)
  • আইগাল (ইগল) ২৬ বন্দুকের রণতরি।
  • সেন্ট এলিজাবেথ (সেন্ট এলিজাবেথ) ২২ বন্দুকের রণতরি।
  • সেন্ট চার্লস, পূর্বে সেন্ট-ফ্রান্সোয়েস-জাভিয়ের (পূর্বে সেন্ট-ফ্রান্সোয়েস-জাভিয়ের) ২৬ বন্দুকের জাহাজ।
  • চার্লস ষষ্ঠ, (সম্রাট চার্লস ষষ্ঠ) ২৬ বন্দুকের জাহাজ।
  • পাইক্স ("শান্তি") - ২৮-বন্দুকের রণতরি।
  • মারকুইস-ডি-প্রি ("মারকুইস অফ প্রাই") - ২৮ টি বন্দুকের রণতরি (গিলিয়াম (উইলেম) ফিলিপস ডি ব্রুউয়ার চীন থেকে পরিচালনা করতেন)।[১২]
  • টিগ্র্রে ("টাইগার") - ২৮-বন্দুকের রণতরি।
  • লাইওন ("লাইওন") - ২২-বন্দুকের রণতরি।
  • কনকর্ড ("কনকর্ড") - ৩০-বন্দুকের জাহাজ।
  • কেইজারিন ("সম্রাজ্ঞী") (১৭২৫-১৭২৬ সালে গিলিয়াম (উইলেম) ফিলিপস ডি ব্রুউয়ার চীন থেকে পরিচালনা করতেন)।[১৩]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা
  • de Burbure de Wesembeek, Albert (১৯৬৩)। Une anthologie de la Marine belge। Anvers: Lloyd Anversois। পৃষ্ঠা 251–292। 
  • Edmundson, George (১৯১১)। "Ostend Company"। চিসাম, হিউ। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ20 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 356–357। 
  • Butel, Paul (১৯৯৭)। Européens et espaces maritimes: vers 1690-vers 1790। Par cours universitaires। Bordeaux: Bordeaux University Press। 
  • Dumont, Georges-Henri (২০০০)। L'épopée de la Compagnie d'Ostende 1723-1727। Bruxelles: Le Cri। 
  • Furber, Holden (২০০১)। "East India Companies"। Kratoska, Paul H.। South East Asia, Colonial History: Imperialism before 1800। London: Routledge। 
  • Parmentier, Jan (১৯৯২)। De Holle Compagnie: smokkel en legale handel onder Zuidnederlandse vlag in Bengalen, ca. 1720-1744। Zeven Provincien reeks (4)। Hilversum: Veloren। আইএসবিএন 9065501118 
  • Serruys, Michael-W. (২০০৫)। "Oostende en de Generale Indische Compagnie. De opbloei en neergang van een koloniale handelshaven (1713-1740)"। Tijdschrift voor Zeegeschiedenis1: 43–59। 
  • Hertz, Gerald B. (১৯০৭)। "England and the Ostend Company"English Historical Review22 (86): 255–79। ডিওআই:10.1093/ehr/xxii.lxxxvi.255 
  • Tassier, Suzanne (১৯৫৪)। "La compagnie d'Ostende"Annales. Économies, Sociétés, Civilisations9 (3): 378–81। ডিওআই:10.3406/ahess.1954.2302 
  • Keay, John (১৯৯১)। The Honourable Company. A History of the English East India Company। London: Macmillan। আইএসবিএন 978-0736630481 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
  1. Butel 1997, পৃ. 198।
  2. Butel 1997, পৃ. 197।
  3. J. Mertens, "Oostende – Kanton – Oostende, 1719–1720", in Doorheen de nationale geschiedenis (State Archives in Belgium, Brussels, 1980), pp. 224-228.
  4. L. Michielsen, "Het einde van de Oostendsche Kompagnie", Bijdragen tot de Geschiedenis 28 (1937), 128.
  5. Baguet, Jelten (২০১৫)। "Politics and commerce: a close marriage? The case of the Ostend Company (1722-1731)"Tijdschrift voor Sociale en Economische Geschiedenis12 (3): 51–76। ২০১৬-১১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. L. Michielsen, "Het einde van de Oostendsche Kompagnie", Bijdragen tot de Geschiedenis 28 (1937), 129.
  7. Keay 1991, পৃ. 240।
  8. Keay 1991, পৃ. 241।
  9. L. Michielsen, "Het einde van de Oostendsche Kompagnie", Bijdragen tot de Geschiedenis 28 (1937), 128-129.
  10. Franz von Pollack-Parnau, "Eine österreich-ostindische Handelskompanie, 1775-1785: Beitrag zur österreichische Wirtschaftsgeschichte unter Maria Theresia und Joseph II", Vierteljahrsschrift für Sozial- und Wirtschaftsgesichte, Beiheft 12, Stuttgart, 1927. Jan Denuce, “Charles de Proli en de Aziatische Kompagnie”, Antwerpsch Archievenblad, fasc.1, 1932, pp.3-64. Helma Houtman-De Smedt, Charles Proli, Antwerps zakenman en bankier, 1723-1786: een biografische en bedrijfshistorische studie, Brussel, Paleis der Academiën, 1983, Verhandelingen van de Koninklijke Academie voor Wetenschappen, Letteren en Schone Kunsten van België: Klasse der Letteren, no.108.
  11. Furber 2001, পৃ. 299।
  12. A. Staring, Chineesche Portrefiguren, 1958, p. 226
  13. A. Staring, 1958, p. 226