অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী
অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী (ইংরেজি: Ambikagiri Raichoudhury; অসমীয়া: অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী) ছিলেন অসমের খ্যাতমান কবি, গায়ক, শক্তিশালী গদ্য লেখক, দেশ প্রেমীক, সমাজ সেবক ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনী সদস্য। সমগ্র জীবন অসম ও অসমীয়ার জাগরন সঞ্চারের জন্য অশেষ ভূমিকা থাকায় তাকে অসম কেশরী উপাধিতে বিভূষিত করা হয়েছে। ১৯৫০ সনে তিনি অসম সাহিত্য সভার সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।[১]।
অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | ১৮৮৫ বরপেটা |
মৃত্যু | ২ জানুয়ারী,১৯৬৭ |
পেশা | কবি, গায়ক, লেখক, সংবাদ-সেবী, আলোচনী সম্পাদক, দেশপ্রেমিক, সমাজ-সেবক ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রণী সদস্য |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শৈশব
সম্পাদনা১৮৫৫ সনে বরপেটার বিখ্যাত রায়চৌধুরী পরিবারে অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরীর জন্ম হয়। তার পিতার নাম কৃষ্ণরাম রায়চৌধুরী ও মাতার নাম দেবকী দেবী। শৈশবে তিনি বরপেটা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভ করে গুয়াহাটি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করে অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। ১৯০৪-০৫ সনে তিনি স্বদেশী আন্দোলন ও সমাজ উন্নয়নমূলক কার্যে যোগদান করেন। ঐ সময়ে কয়েকটি তরুন ছাত্রদের একত্রিত করে ইংরেজ বিরোধী এনার্কিষ্ট দল গঠন করেন। ফলস্বরুপ ইংরেজ সরকার ১৯০৮ সন ১৯১৫ সন পর্যন্ত তাকে বরপেটায় নজরবন্দী করে রাখে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন
সম্পাদনাবরপেটায় থাকাকালীন সময়ে অম্বিকাগিরি রাজনৈতিক কার্যাবলী পরিহার করে সামাজিক উন্নয়নমূলক ও সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক কার্যে আত্মনিয়োগ করেন। সেসবের ভিতর অন্তর্ভুক্ত ছিল গরিব ছাত্রদের অধ্যয়নের সুবিধার্থে পূজি গঠন করা, স্থানীয় ঢুলীয়া সার্কাসের সংশোধিত রুপ শংকদেব সার্কাস গঠন করা ও অসমের লোকগীত ও বরগীত চর্চার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করা। তদুপরি তিনি বরপেটা সামাজিক জীবন থেকে বাংলা যাত্রা নাটকের প্রভাব লোপ করিতে অশেষ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯১৫ সনে তিনি ডিব্রুগড় রেল বিভাগে টাইপিষ্ট ও সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে কর্মরত হওয়ার উপরিও তিনি হরেকৃষ্ণ দাসের সহির অসম বান্ধব নামক আলোচনীর সাহিত্য সম্পাদক রুপে কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সামাজিক ও রাকনৈতিক চিন্তাধারায় চেতনা নামক পুস্তক রচনা করেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় জেলের শাস্তির অভিজ্ঞতায় তিনি ‘তই ভাঙিব লাগিব শিল’, ‘ধর ঝারু ধর ভাই’, ‘কি দেখাবি ভয় কারাগার’ ইত্যাদি বিদ্রোহী গান রচনা করেন যা অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য যথেষ্ট উত্তেজনা প্রদান করে। ১৯৩০ সনের আন্দোলনে অম্বিগিরির পুনরায় কারাবাস হয়। ঐ সময়ে কংগ্রেসের সাংগঠনিক কার্যে তিনি ডিক্টেটর রুপে নিযুক্ত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক দিকে তিনি মহাত্মা গান্ধির অণুগামি খাটি দেশপ্রেমী ছিলেন। স্বদেশী কিনক সংস্থা(স্বদেশী ক্রয় সংস্থা) স্থাপন করে তিনি নিজেই মায়াবিনি কেমিকেল ওয়ার্কস নামক বিত্তিয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে স্থানীয় জনসাধারনকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য যত্ন করেন তিনি। নিজের মন্তব্য জনসাধারণের সমক্ষে প্রকাশ করার জন্য তিনি ‘’ডেকা-ডেকেরীর বেদ, আহুতি ইত্যাদি পুস্তক রচনা করেন। ১৯৬০ সালে অসমীয়া ভাষা আন্দোলনের সময় অসমীয়া ভাষাকে অসমের সরকারি ভাষা রুপে ঘোষণা করাতে সরকারের ইতঃস্বতঃ থাকায় তিনি অসম সরকারকৃত প্রদান সাহিত্যিক পেঞ্চন বর্জন করেন।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ১৯১৭ সনর পরা অসম সাহিত্য সভার সভাপতিসকলর তালিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে অসম সাহিত্য সভার ওয়েবসাইট, আহরণ: ১৮ নভেম্বর, ২০১২।
- ↑ প্রণতি শর্মা গোস্বামী আরু অনিল শর্মা (সম্পাদনা) ১৯৯৯ কুরি শতিকার কুরিজন বিশিষ্ট অসমীয়া, জার্নাল এম্পরিয়াম,পৃ: ৬৬