অমলেন্দু দে
অমলেন্দু দে (১৯২৯ - ২০১৪) বাংলা ভাষার একজন ইতিহাসবিদ, অধ্যাপক ও লেখক। সম্পাদনা করেছেন ‘বেঙ্গল পাস্ট এন্ড প্রেজেন্ট’ নামের একটি বিখ্যাত জার্নাল। কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। সংযুক্ত ছিলেন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গেও। ১৯৯২ সালে ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসে আধুনিক ভারত বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।[১] বিভিন্ন বামপন্থী ও প্রগতিশীল সংস্থার সাথে নানা কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন আপোষহীনভাবে।
অমলেন্দু দে | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৬ মে ২০১৪ | (বয়স ৮৫)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সালের পূর্বে) ভারত (১৯৪৭ সালের পরে) |
মাতৃশিক্ষায়তন | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অধ্যাপক |
প্রতিষ্ঠান | যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | শিক্ষক, লেখক, ইতিহাসবিদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | নাসিমা বানু |
পিতা-মাতা |
|
পুরস্কার | অন্নদাশঙ্কর পুরস্কার |
জন্ম ও কর্মজীবন
সম্পাদনাঅমলেন্দু দে ১৯২৯ সালের ১২ই মার্চ তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুরের মাদারিপুর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা গোপাল চন্দ্র দে ছিলেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। তার মায়ের নাম ফুলকুমারী দেবী। তিনি ছিলেন পিতামাতার জ্যেষ্ঠ পুত্র।[২] তিনি মাদারিপুর হাই স্কুল থেকে ১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিক, কলকাতার সিটি কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে আই.এ. ও ১৯৫১ সালে ডিস্টিংকশনসহ বি.এ. এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে ইতিহাস বিষয়ে এম.এ. পাস করেন।[৩]যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮১-তে খাকসার আন্দোলনের ইতিহাস (2 খণ্ড)রচনার জন্য ডি.লিট ডিগ্রি অর্জন করেন।[২][৪] ড. অমলেন্দু দে ছিলেন মার্কসবাদী তথা মানবতাবাদী ইতিহাসবিদ।[৫]
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত উলুবেড়িয়া কলেজ ও মুরলিধর গার্লস কলেজে অধ্যপনা করেন।[৩] ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিন দশক অধ্যাপনা করেছেনযাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছিলেন “গুরু নানক অধ্যাপক”।[৬] ২০০৮ সালে লাভ করেন অন্নদাশঙ্কর পুরস্কার। কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
সারাজীবন তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য কাজ করে গেছেন। দুই বাংলার অজস্র ছাত্রছাত্রীর গবেষণার তত্ত্বাবধান করেছেন। বিবাহ করেছিলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক-এর নাতনি, সহপাঠিনী নাসিমা বানুকে। ওনাদের পুত্রকন্যাও ইতিহাসের অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত।
পুস্তকসমূহ
সম্পাদনাসদা গবেষণাকর্মে নিরত অধ্যাপক অমলেন্দু দে লিখেছেন ও সম্পাদনা করেছেন অনেক গ্রন্থ।[২][৩] তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো
- বাঙালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ,
- সিরাজের পুত্র ও বংশধরদের সন্ধানে
- পাকিস্তানের প্রস্তাব ও ফজলুল হক,
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও বাঙালী বুদ্ধিজীবী,
- ধর্মীয় মৌলবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা,
- বাংলা ভাষায় কোরান চর্চা,
- বাংলাদেশের জন-বিন্যাস ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সমস্যা,
- সূর্যসেন ও স্বাধীনতা সংগ্রাম,
- স্বাধীন বঙ্গভূমি গঠনের প্রয়াস ও পরিণতি,
- বাংলায় ভারত ছাড় আন্দোলন,
- রুটস অফ সেপারেটিজ্যম ইন নাইনটিন্থ সেঞ্চুরি বেঙ্গল,
- রিলিজিয়াস ফান্ডামেন্টালিজম এন্ড সেক্যুলারিজম ইন ইন্ডিয়া,
- ইসলাম ইন মডার্ন ইন্ডিয়া,
- ভারতের মুসলিম রাজনীতির গতি-প্রকৃতি,
- অনুশীলন সমিতির ইতিহাস (সম্পাদনা),
- শহীদ তিতুমীর,
- সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রভৃতি।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ব্যানার্জি, প্রাণতোষ (২৪ মে ২০১৪)। "ঐতিহাসিক অমলেন্দু দে স্মরণে"। জনস্বার্থ বার্তা।
- ↑ ক খ গ "ইতিহাসবিদ অমলেন্দু দে - কালি ও কলম"। কালি ও কলম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-১২-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৪।
- ↑ ক খ গ মিয়া, আবদুল জাব্বার (১৯৯৪)। মাদারীপুর জেলা পরিচিতি। মাদারিপুর: মিসেস লীনা জাব্বার। পৃষ্ঠা ২১৩,২১৪।
- ↑ ক খ May 19, TNN |; 2014; Ist, 5:49। "Historian Amalendu De passes away | Kolkata News - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৪।
- ↑ "West Bengal and the expanding radical space"। Rediff (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৪।
- ↑ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২৩,২৪ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬